চেতলার সঞ্জয় সেন, হাইতির সনি নর্ডি, জাপানের কাতসুমি— সবার চোখ আজ রবিবার থাকবে বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে!
সন্ধ্যা থেকে আজ সবাই বসে পড়বেন টিভির সামনে। বেঙ্গালুরু-সালগাওকর ম্যাচ দেখতে।
ওই ম্যাচের উপরই যে আই লিগে ভাগ্য নির্ধারণ হবে মোহনবাগানের। আর সবথেকে মজার ব্যাপার যাঁর হাতে সবুজ-মেরুনের ভাগ্য ফেরানো নির্ভর করছে তিনি আবার বাগানেরই প্রাক্তন কোচ সন্তোষ কাশ্যপ। কাশ্যেপের টিম সালগাওকর আজ বেঙ্গালুরুর কাছ থেকে পয়েন্ট পেলেই খুলে যাবে কাতসুমি-দেবজিতদের ভাগ্য। আর সেটা হলে শিলিগুড়িতে (২৩ এপ্রিল) অ্যাশলে ওয়েস্টউডের টিমকে হারাতে পারলেই আই লিগ ডাবল করার স্বপ্ন পূরণ হবে সনিদের। শনিবার মোহন কোচ সঞ্জয় সেন বলছিলেন, ‘‘রবিবারের ম্যাচ আমাদের কাছে সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই ম্যাচটাই শেষ আশা। কথায় আছে না, আশায় বাঁচে চাষা। আমিও এখন আশায় সময় গুনছি।’’
উল্টোদিকে সালগাওকরকে হারাতে পারলেই দ্বিতীয় বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে বেঙ্গালুরু। ঘরের মাঠে সেই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না সুনীল ছেত্রীরা। টিমের সবাই ফিট। কোনও কার্ড সমস্যা নেই। কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে দিলেন, ‘‘এই ম্যাচটা সবাই খেলতে চাইছে। কাকে ছেড়ে যে কাকে খেলাব। তবে আমরা এই ম্যাচকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচ হিসেবে দেখছি না। আই লিগের অন্য ম্যাচের মতো এটাও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জেতার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব।’’
সালগাওকর আবার আইজলকে হারিয়ে ইতিমধ্যেই অবনমন বাঁচিয়ে ফেলেছে। স্বভাবতই অ্যাশলের টিমকে আটকানোর জন্য মরিয়া ভাবটা তাদের কতটা থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ আছে। যদিও সন্তোষ কাশ্যপের দাবি, ‘‘অবনমন বাঁচানো আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। সেটা আমরা বাঁচিয়েছি। দ্বিতীয় লক্ষ্য লিগ তালিকায় অন্তত চারে শেষ করা। তার জন্য আমাদের জিততেই হবে।’’ আপনার টিমের উপরই তো এখন নির্ভর করছে মোহনবাগানের ভাগ্য! হেসে সন্তোষ বলে দিলেন, ‘‘একটা সময়ে মোহনবাগানের কোচ ছিলাম। ওরা চ্যাম্পিয়ন হলে ভাল লাগবে। তবে আমরা বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে নিজেদের জন্যই জিততে চাই। অন্য কোনও টিমকে সুবিধে করে দেওয়ার জন্য নয়।’’ কিন্তু সন্তোষের সমস্যা কার্ড সমস্যার জন্য আজ টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার ডাফিকে পাবেন না সন্তোষ। তা ছাড়া চোটের জন্য নেই কেলভিন এবং গুরজিন্দর সিংহও।
জীবনের অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন সঞ্জয়। কিন্তু এ ভাবে হাত পা গুটিয়ে অন্য টিমের উপর নির্ভর করে থাকার চাপটা বোধহয় সবচেয়ে বেশি। নিজের টিমের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করার চেয়েও। ‘‘আসলে আমাদের আর কোনও রাস্তা নেই। বেঙ্গালুরু জিতে গেলে শেষ ম্যাচ খেলতে নামার আগেই সব শেষ হয়ে যাবে। শেষ দু’টি ম্যাচ লাজং এবং শিবাজিয়ান্সের বিরুদ্ধে পয়েন্ট নষ্ট করার জন্য সত্যি খুব আফসোস হচ্ছে। ওই ম্যাচগুলোতে পয়েন্ট পেলে তো এই চাপটা আসত না আমাদের উপর।’’ বাগানে সোমবার থেকে আবার অনুশীলনে নামবে। তার আগেই অবশ্য ঠিক হয়ে যাবে অনুশীলনের লক্ষ্য কী হবে? আই লিগ না, ফেড কাপ।
শুধু মোহনবাগানই নয়, গোটা বাংলাই এখন চেয়ে আছে বেঙ্গালুরু-সালগাওকর ম্যাচের দিকে। এমন কী ইস্টবেঙ্গলের সদ্য প্রাক্তন কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও বলে দিয়েছেন, আজ তিনি বেঙ্গালুরু ম্যাচ দেখছেনই। ‘‘আমি তো চাইব বেঙ্গালুরু আটকে যাক। মোহনবাগানের সামনে তা হলে একটা সুযোগ আসবে। ইস্টবেঙ্গল যখন পারল না, তখন বাঙালি হিসেবে চাইব, মোহনবাগান অন্তত চ্যাম্পিয়ন হোক,’’ বলে দেন বিশ্বজিৎ।
রবিবারে
আই লিগ— বেঙ্গালুরু এফসি : সালগাওকর (বেঙ্গালুরু, ৭-০৫)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy