ফিকরু। ফাইল চিত্র
বেহিসেবি জীবনযাত্রায় বিরক্ত হয়ে হোটেল থেকে ফিকরু তোফেরাকে বের করে দিয়েছিলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। সে জন্যই প্রথম বার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন এটিকের হয়ে গ্রুপ লিগে প্রচুর গোল করা সত্ত্বেও সেমিফাইনাল ও ফাইনালে তাঁকে খেলাননি তখনকার স্প্যানিশ কোচ। দুর্দান্ত খেলা সত্ত্বেও শুরুর বছরেই তাঁকে বাতিল করেছিল কলকাতা।
চার বছর পর কলকাতায় ফিরে আসার পর দেখা গেল একটুও বদলাননি বোহেমিয়ান জীবনে অভ্যস্ত ফিকরু। রাতের অসংযমী জীবন থেকে তো বেরিয়ে আসতেই পারেননি, অনুশীলনে মনও নেই তাঁর। মাঠে নেমে দলকে ডুবিয়েছেন। পাঁচ ম্যাচে একটা গোলও নেই ইথিওপিয়ার স্ট্রাইকারের পায়ে। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিশনের খেলা চলার মধ্যেই ফিকরুকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন মহমেডান কর্তারা। প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসাবে ফিকরুকে কারণ দর্শানোর চিঠি ধরানো হয়েছে। মহমেডানে মাঠ সচিব কামারুদ্দিন শনিবার রাতে বললেন, ‘‘যে জন্য ফিকরুকে আনা হয়েছিল সেই গোলটাই তো করতে পারছে না। উল্টোপাল্টা কাজ করে বেড়াচ্ছে। মহমেডানে খেলার যোগ্যই নয়। ওকে আমরা আর রাখছি না। শো কজ করেছি। জবাব চেয়েছি। পেলেই চিঠি ধরিয়ে দেব।’’
বেঙ্গালুরুতে আজ রবিবার আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে মহমেডানের। বেঙ্গালুরু এফ সির ‘বি’ দলের সঙ্গে। কিন্তু আজ নামছেন না ফিকরু। চেন্নাইয়ের ম্যাচের পরই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে কলকাতায়। গোল করার পর বিখ্যাত ‘সমারসল্ট’ দেওয়ার জন্য অভিষেকের বছরে কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন ফিকরু। কিন্তু এ বার শুরু থেকেই তাঁর আচরণে অসন্তুষ্ট ছিলেন কোচ ও কর্তারা। এক কর্তা বললেন, ‘‘আমাদের আগের কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য তো ফিকরুর নামে রিপোর্ট দিয়েছেন। মাসে চার লাখ টাকা করে নিচ্ছে। অথচ একটা গোল নেই। চোট দেখিয়ে বারবার বসতে চাইছে। ওকে আর রেখে কী লাভ?’’
এমনিতে আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলতে নেমে সমস্যায় মহমেডান। পরপর পাঁচটি ম্যাচে জিততে পারেনি তারা। নয় ম্যাচে সাত পয়েন্ট পেয়ে গ্রুপ লিগে চার নম্বরে রয়েছেন তীর্থঙ্কর সরকাররা। এই অবস্থায় বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোচ করে এনেছে সাদা-কালো শিবির। কিন্তু তাঁর হাতে তো কোনও স্ট্রাইকারই নেই। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে মৃদুল বললেন, ‘‘ফিকরু নেই। জিতেন মুর্মুরও চোট। গোল করার লোক কোথায়? অন্য রকম ভাবনা চিন্তা করছি। টুনার্মেন্টে টিঁকে থাকতে হলে ম্যাচটা জিততেই হবে।’’
মৃদুলের দলের অবস্থা এমনিতেই কাহিল। তার উপর এ দিন দুপুর এগারোটায় চড়া রোদে মহমেডানকে অনুশীলন করার সময় দেওয়া হয়েছিল স্টেডিয়ামে। আধ ঘণ্টা অনুশীলনের পরই গরমে কাহিল হয়ে পড়েন ফুটবলাররা। মৃদুল বললেন, ‘‘সকাল আটটায় মাঠ চেয়েছিলাম। পেলাম না। এই গরমে দুপুরে অনুশীলন করার পর ছেলেরা বলছে পায়ে ফোস্কা পড়ে যাচ্ছে।’’ তবে অনেক খারাপের মধ্যেও মৃদুলের একমাত্র সুবিধা হল, রানা ঘরামি আর শেখ ফৈয়াজকে তিনি দলে পাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy