অপেক্ষা: আইপিএল আসছে। হাল্কা মেজাজে যশপ্রীত বুমরা। (ডান দিকে) বিশ্ব সিংহ দিবসে ছবি পোস্ট করে রবীন্দ্র জাডেজার টুইট, “এই সুন্দর প্রাণীকে রক্ষা করুন।”
করোনাভাইরাস অতিমারির জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে ক্রিকেটের অনেক প্রাচীন প্রথা। যেমন উইকেট নেওয়ার পরে ‘হাই ফাইভ’। সেঞ্চুরি করে ব্যাটে বা পিচে চুম্বনের দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে না। তেমনই বলে থুতু বা লালা ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এ বার আসন্ন আইপিএলকে কেন্দ্র করে আরওই পাল্টে যেতে বসেছে ক্রিকেটের সংসার। গত বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কয়েকটি অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। রোহিত শর্মা, যশপ্রীত বুমরারা যাতে হোটেলের বন্দিদশায় একঘেয়েমিতে না ভোগেন, তার জন্য তারা হোটেলের মধ্যেই ‘রিক্রিয়েশনাল জ়োন’ খেলাঘর তৈরি করছে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স থাকবে আবু ধাবিতে। সেখানকার হোটেলে আগে থাকতেই তারা ঠিক করে ফেলেছে। এই হোটেলে সম্পূর্ণ আলাদা শাখা নিয়ে নিচ্ছে তারা। সেখানে ‘শেফ’ থেকে শুরু করে লন্ড্রি, রুম সার্ভিস, সব হোটেল কর্মী— তাঁদের জন্য আলাদা ভাবে থাকবেন। এমনকি, রোহিত শর্মাদের টিমবাস যাঁরা চালাবেন, তাঁদের তালিকাও চূড়ান্ত করে ফেলা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই তাঁদের নিভৃতবাসের পর্ব শুরু করে দেওয়া হয়েছে। হোটেলের এই আলাদা অংশের ভিতরেই তৈরি করা হচ্ছে রোহিতদের এই অভিনব ‘খেলা-ঘর’!
এর ভিতরে টেবল টেনিস বোর্ড থেকে শুরু করে বিলিয়ার্ডস, স্নুকার খেলার ব্যবস্থা— সব কিছুই রাখা হবে। ডার্ট বোর্ড বসানো হচ্ছে। এমন অভিনব পরিকল্পনার কারণ, করোনা অতিমারির জেরে ক্রিকেটারদের হোটেলবন্দি হয়ে থাকতে হবে। কোনও ভাবেই কেউ সুরক্ষা বলয়ের বাইরে বেরোতে পারবেন না। বাইরে থেকে কাউকে নিজেদের হোটেলে আসতে দিতে পারবেন না। এমনকি, আমিরশাহিতে আত্মীয়স্বজন থাকলে তাঁদের কাছেও যাওয়া যাবে না বা তাঁদের হোটেলে ডাকা যাবে না। আড়াই মাসের দীর্ঘ সফরে এই হোটেলবন্দি হয়ে থাকার কারণে মানসিক প্রভাব পড়তে পারে। একঘেয়েমি আসতে পারে। অবসাদ তাড়া করতে পারে। সে জন্যই ফুরফুরে মেজাজ ধরে রাখার জন্য হোটোলের মধ্যেই বিনোদনের নানা ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবা হয়েছে। হোটেলের বিরাট কোনও কনফারেন্স রুমকে পাল্টে ফেলা হচ্ছে ‘রিক্রিয়েশনাল সেন্টার’-এ। জায়ান্ট স্ক্রিনও থাকবে সেখানে। যাতে দলের সদস্যরা এসে ইচ্ছা মতো কোনও সিনেমাও দেখতে পারেন। অনেক ক্রিকেটারেরই পরিবার যাবে সঙ্গে। তাই খেলার মাঝে বিশ্রামের দিনে সপরিবার কোনও ফিল্ম দেখে সময় কাটানো যাবে।
এখানেই শেষ নয়। ক্রিকেটারদের সংক্রমণ এড়ানোর ধাক্কায় চুল কাটার কী হবে? বাইরে গিয়ে তো চুল ছেঁটে আসার ঝক্কি নেওয়া যাবে না। তা হলে? হার্দিক পাণ্ড্য বা লাসিথ মালিঙ্গার মতো চুলের স্টাইল সম্পর্কে সচেতন ক্রিকেটারদেরও চিন্তা করতে হবে না। মুকেশ, নীতা অম্বানিদের দল ঠিক করেছে, সঙ্গে হেয়ার ড্রেসার নিয়ে যাওয়া হবে। মুম্বই থেকে ১৮ বা ১৯ অগস্ট চার্টার্ড ফ্লাইটে করে দুবাই রওনা হবে গত বারের চ্যাম্পিয়নরা। সেই উড়ানে এমনই সব চমক থাকতে পারে। দলের সঙ্গে যেমন যাবেন ডাক্তারের দল, তেমনই থাকবে হেয়ার ড্রেসারও। আবার প্রশ্ন হচ্ছে, আবু ধাবিতে গিয়ে প্র্যাক্টিস বোলারের কী হবে? ওখানকার স্থানীয় প্র্যাক্টিস বোলার নেওয়া মানে সুরক্ষা বলয় ভাঙার ভয় থাকছে। কী ভাবে তাঁদের বাছা হবে, সেই ঝক্কিও থাকছে। তাই রোহিতদের প্র্যাক্টিস বোলাররাও তাঁদের সঙ্গে চার্টার্ড বিমানে করে মুম্বই থেকেই যাবেন।
ভারতীয় বোর্ডের ‘এসওপি’ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) তো আছেই। যেখানে মাছি গলতে পারে না এমন সুরক্ষা বলয় তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বা চেন্নাই সুপার কিংসের মতো কয়েকটি চূড়ান্ত পেশাদার দল নিজেদের দিক থেকে বাড়তি সতর্কতা জারি করতে পারে। এ সব তারই প্রতিফলন। নবি মুম্বইয়ে নিজেদের মাঠ তৈরি হয়ে গিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। সেখানে আইপিএলের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেক ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন এবং নিভৃতবাস পর্ব চালু করে দিয়েছেন। দলের তারকা ক্রিকেটার— রোহিত শর্মা, হার্দিক পাণ্ড্য, যশপ্রীত বুমরারাও যোগ দেবেন শীঘ্রই। কোভিড-১৯ থেকে সতর্কতামূলক প্রক্রিয়া হিসেবে খেলোয়াড়দের দু’টি পরীক্ষা করিয়ে এই শিবিরে আসতে হচ্ছে। এই দু’টি পরীক্ষারই ফল অবশ্যই ‘নেগেটিভ’ আসতে হবে। শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে তিন বার পরীক্ষা হবে। আমিরশাহি পৌঁছে ছ’দিনে আবার তিন বার পরীক্ষা।
এর পরে মাঠে নামার সময় মালিঙ্গার যদি মনে হয়, কোঁকড়ানো ব্লন্ড চুল ছাঁটা দরকার, ডেকে নাও হেয়ারড্রেসার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy