Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

‘জাল’ ভিসায় ময়দানে বিদেশিদের খেলা শেষ

আইভরি কোস্টের এক স্ট্রাইকার চার্লস অ্যাচাকে পছন্দ হয়েছে মহমেডানের। কিন্তু দু’সপ্তাহ চেষ্টা করেও এখনও দেশ থেকে পুরানো ক্লাবের ছাড়পত্র আনতে পারেননি তিনি। 

বিতর্কে: এ বার লিগে দেখা যাবে না ফিলিপ আজাকে। ফাইল চিত্র

বিতর্কে: এ বার লিগে দেখা যাবে না ফিলিপ আজাকে। ফাইল চিত্র

রতন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০৪:০২
Share: Save:

গতবার কলকাতা লিগের সেরা স্ট্রাইকার ফিলিপ আজাকে এ বার আর খেলতে দেখা যাবে না। গত বছর মহমেডান স্পোর্টিং থেকে নগদ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। প্যান কার্ডও নেই। নতুন নিয়মে সেটা দাখিল না করলে ময়দানের কোনও ক্লাবে খেলার ছাড়পত্র পাবেন না তিনি।

ঘানার কামিবা কেমেবোকে পছন্দ হয়েছিল প্রিমিয়ারের ক্লাব কালীঘাট মিলন সংঘের। কিন্তু সই করাতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় তাঁর ভিসাই জাল। যে অ্যাকাডেমি থেকে ওয়ার্কিং ভিসা এনেছেন, সেই ক্লাবের অস্তিত্বই নেই।

আইভরি কোস্টের এক স্ট্রাইকার চার্লস অ্যাচাকে পছন্দ হয়েছে মহমেডানের। কিন্তু দু’সপ্তাহ চেষ্টা করেও এখনও দেশ থেকে পুরানো ক্লাবের ছাড়পত্র আনতে পারেননি তিনি।

আইএফএ অফিসে এখন তাই শুধুই বিদেশিদের যাওয়া আর আসা। আন্তর্দেশীয় ছাড়পত্রের নতুন নিয়মের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অফিস কর্মী বলছিলেন, ‘‘অন্তত ৩০-৩৫ জনকে ফিরিয়ে দিয়েছি। ফিফা নতুন যে নিয়ম এনেছে, তাতে ‘জাল’ ভিসায় ফুটবলার খেলানোর দিন শেষ। ফলে ওয়ার্কিং ভিসার গন্ডগোল, যে ক্লাব থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে তার অস্তিত্ব নেই—একের পর এক এসব ঝামেলা ধরা পড়ছে। ইউরোপের ফুটবলার নিয়ে সমস্যা নেই। পশ্চিম আফ্রিকার ফুটবলারদের নিয়েই সমস্যা। কলকাতায় তো এদের সংখ্যাই বেশি।’’ ঘানা, আইভরি কোস্ট, নাইজিরিয়ার, লাইবেরিয়ার ফুটবলাররা তাই আসছেন আর ফিরে যাচ্ছেন। পাড়ায় পাড়ায় খেলে বেড়ানো বিদেশিদের জোগাড় করে আনতে যাঁর জুড়ি নেই ময়দানে, এরিয়ান ক্লাবের সেই কোচ রঘু নন্দী বলছিলেন, ‘‘ভয়াবহ অবস্থা। নতুন যাকেই নিতে যাচ্ছি, নিয়মে আটকে যাচ্ছে। ফলে পুরানো ছেলেদের নিতে হচ্ছে।’’ রেনবো সচিব তাপস দে বললেন, ‘‘গতবারও কোনও সমস্যা হয়নি। এ বার তো সাত-আটজনকে নিয়ে গেলাম। সব বাতিল।’’ কালীঘাট এমএসের ম্যানেজার পার্থ বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘‘যাকেই ট্রায়ালে পছন্দ হচ্ছে, তারই দেখছি কাগজপত্রে গণ্ডগোল।’’

আজ, শনিবার শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ। পিয়ারলেস বাদে বারো দলের লিগের কেউই চার জন বিদেশি সই করাতে পারেনি। সাদার্ন সমিতি তিনজন ফুটবলারকে সই করিয়েছে। বাকিরা এক বা দু’জন। মজার ব্যাপার, মোহনবাগান ছাড়া প্রায় কোনও ক্লাবই নতুন ফুটবলার সই করাতে পারেনি। ভারতে খেলা ফুটবলারদেরই নিতে হয়েছে তাদের। যেখানে সমস্যা কম। কারণ ভিসার মেয়াদ ঠিক থাকলে ও আয়কর রিটার্ন দেওয়া থাকলে তাদের নিতে সমস্যা হচ্ছে না।

কেন হঠাৎ এই উলটপুরাণ?

ফিফার নতুন নিয়মে এক দেশ থেকে আর এক দেশে খেলতে গেলে এখন ‘ওয়ার্কিং ভিসা’ বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, তাতে কোন ক্লাবে তিনি খেলতে আসছেন, সেই ক্লাবের নাম থাকতেই হবে। এখানেই শেষ নয়, কোন দেশের কোন ক্লাবে খেলেছেন, সেই ক্লাব আদৌ আছে কি না তা দেখেই ফুটবলারটির নাম কম্পিউটর সিস্টেমে ফেলা হবে। এখানেই শেষ নয়। এই প্রক্রিয়ার পর ভিসার জন্য সব কাগজ পাঠাতে হবে ফেডারেশনের ট্রান্সফার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে। ফেডারেশন সেই ফুটবলারটির নাম পাঠাবে বিদেশমন্ত্রক এবং সংশ্লিষ্ট দেশের ভারতীয় দূতাবাসে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই ছাড়পত্র পাবেন ওই ফুটবলার। এর ফলে খেপ খেলে ঘুরে বেড়ানো ফুটবলারদের ক্লাবে খেলার দিন শেষ। কর্তাদেরও মাথায় হাত। কম টাকায় বিদেশি খেলানোর দিনও শেষ। ফলে গভীর সঙ্কটে ক্লাবগুলি।

অন্য বিষয়গুলি:

Philip Adjah Football Visa FIFA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy