মাঠে ঢুকে ক্ষোভ ম্যান ইউ ভক্তদের। ছবি টুইটার।
প্রস্তাবিত বিদ্রোহী সুপার লিগ জন্মলগ্নেই ভেঙে পড়ছে। ১২টি ক্লাবের মধ্যে ন’টি ইতিমধ্যেই সরে দাঁড়িয়েছে। অথচ এই বিদ্রোহী লিগের প্রধান মস্তিষ্ক ফ্লোরেন্তিতো পেরেজ় হার মানতে রাজি নন। রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বিদ্রোহী লিগ শুরু করার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত।
স্পেনের একটি রেডিয়ো অনুষ্ঠানে পেরেজ় বলেছেন, “এই লিগ শুরু করার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।”
গত রবিবার ভারতীয় সময় গভীর রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদ্রোহী লিগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। নাম দেওয়া হয় ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’। জানানো হয় রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, আতলেতিকো দে মাদ্রিদ, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, লিভারপুল, চেলসি, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পার, জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান ও এসি মিলান খেলার সম্মতি জানিয়েছে। সঙ্গে দাবি করা হয়েছিল, আরও তিনটি ক্লাব যোগ দিতে চলেছে। সঙ্গে সঙ্গে আলোড়ন পড়ে যায় বিশ্বে। তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় ফুটবলার, ম্যানেজার, সমর্থকদের মধ্যে। ক্ষোভ উগরে দেন পেপ গুয়ার্দিওলা ও য়ুর্গেন ক্লপ। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই সরে দাঁড়ায় ১২টি ক্লাব। সব চেয়ে আগে নাম প্রত্যাহার করে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। তার পরে একে-একে ইংল্যান্ডের বাকি পাঁচটি ক্লাব- ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পারও সরে দাঁড়ায়। সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চান ম্যান ইউ ও লিভারপুলের কর্তারা। নাম প্রত্যাহার করে ইটালির জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলান। স্পেনের আতলেতিকো দে মাদ্রিদও। তবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা এখনও বিদ্রোহী লিগ থেকে সরে দাঁড়ায়নি। যদিও জেরার পিকে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিদ্রোহী লিগে বার্সার যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে। বৃহস্পতিবার আর্সেনাল ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা ফাঁস করেছেন, ক্লাবের মালিক স্টান ক্রোয়েঙ্কা তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন বিদ্রোহী লিগে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। লা লিগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবেস বলেছেন, “ইংল্যান্ড ও জার্মানির কোনও ক্লাবের সমর্থন না পেয়ে প্রস্তাবিত সুপার লিগের মৃ্ত্যু হয়েছে।” পাশাপাশি তিনি ক্লাবগুলিকে পরাপর্শ দিয়েছেন, দল গঠনের খরচ কমানোরও।
ম্যান ইউ সমর্থকদের ক্ষোভ অবশ্য কমছে না। বৃহস্পতিবার সকালে ক্যারিংটন গ্রাউন্ডে অনুশীলন চলাকালীন ঢুকে পড়েছিলেন তাঁরা। ম্যান ইউয়ের মালিক গ্লেজ়ার পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন জনা কুড়ি সমর্থক। তাঁদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, “দল কখন খেলবে, সেটার সিদ্ধান্ত মালিক নয়, আমরাই নেব।” অন্য একটি ব্যানারে লেখা ছিল, “গ্লেজ়ার্স পরিবারের বিদায় চাই।” জার্মানির ক্লাবগুলির উদাহরণ দিয়ে তাঁরা দাবি করেছেন, “মালিকানার ৫১ শতাংশ ক্লাবকে দিতে হবে।” সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামলান ম্যান ইউ ম্যানেজার ওয়ে গুন্নার সোলসার, তারকা নেমানইয়া মাতিচ। এই ঘটনার পরেই ম্যান ইউয়ের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়, “সকাল ৯টা নাগাদ একদল সমর্থক ক্লাবের অনুশীলন মাঠে ঢুকে পড়েন। ম্যানেজার ও অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা চলে যান।”
পেরেজ় যদিও দাবি করেছেন, ১২টি ক্লাব নাম প্রত্যাহার করেনি। তাঁর কথায়, “চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া কোনও ক্লাবের পক্ষেই সম্ভব নয়।” বিদ্রোহী লিগের প্রধান কর্তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, চুক্তিভঙ্গকারী ক্লাবগুলিকে কি জরিমানা করা হবে? পেরেজ় কোনও উত্তর দেননি। রিয়াল প্রেসিডেন্ট যোগ করেছেন, “আমি অত্যন্ত হতাশ। প্রায় তিন বছর ধরে আমরা এই লিগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হয়তো আমরা ঠিক মতো ক্লাবগুলিকে বোঝাতে পারিনি। তা ছাড়া ওরা আমাদের সেই সুযোগও দেয়নি।” তিনি অভিযোগ করেন, এই লিগ বন্ধ করার জন্য হুমকিও না কি দেওয়া হয়েছে। বলেছেন, “২০ বছর ধরে আমি ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত। এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন কখনও হইনি। মনে হচ্ছিল যে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেছেন, “কেউ কেউ মনে করছে, আমরা যেন ফুটবলটা শেষ করে দিচ্ছি। অথচ আমরা কিন্তু ফুটবলকে বাঁচানোর চেষ্টাই করছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy