ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও সৌম্য দাশগুপ্ত টুইটার
ফুটবলের টানে ভাঙা পায়ে ক্রাচে ভর করে দু’ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়েছে। ফেরার সময় আরও দুই। ডাক্তারের নির্দেশ অমান্য করে বাঙালির ফুটবল আবেগের আরও এক নিদর্শন তৈরি করলেন সৌম্য দাশগুপ্ত। তাও সুদূর ইংল্যান্ডে।
মোট এগারো জন বাঙালিকে নিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর খেলা দেখতে ওয়েস্ট হ্যামের ডেরায় পৌঁছে গিয়েছিল কলকাতার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের সংগঠন। যার মূল উদ্যোক্তা সৌম্য নিজেই। কিন্তু ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রোনাল্ডোর প্রথম ম্যাচ দেখতে যেতে পারেননি।
খেলতে গিয়ে পা ভেঙে যায় তাঁর। লন্ডনে ভারতীয় সমর্থকদের নিয়ে ‘আইএসএল’ হয়। সেখানে খেলতে গিয়ে পা ভাঙে সৌম্যর। এই ঘটনা রোনাল্ডো সই করার আগে। তখনই ঠিক করে ফেলেন, ওয়েস্টহ্যামে যখন ম্যাঞ্চেস্টার খেলতে আসবে, সেই ম্যাচ তিনি দেখবেনই। মা, পরিবারের লোকজন, চিকিৎসক, সবাই পইপই করে বারণ করেছিলেন মাঠে যেতে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বাড়ির কাছে ওয়েস্টহ্যামের মাঠে স্বপ্নের নায়ককে সামনে থেকে দেখার সুযোগ ছাড়তে চাননি সৌম্য। কারও কথা না শুনেই চলে যান মাঠে। কিন্তু হেঁটে মাঠে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। কারণ ওয়েস্টহ্যামে খেলা থাকলে ট্যাক্সি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু রোনাল্ডোকে সামনে থেকে গোল করতে দেখা সব যন্ত্রণা ভুলিয়ে দিয়েছে সৌম্যকে। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে বললেন, ‘‘দারুণ অভিজ্ঞতা। ঠিক করে নিয়েছিলাম, যাই হোক না কেন খেলা দেখতে যাবই। আসাটা সার্থক হল।’’
কিন্তু পিছিয়ে থেকেও রোনাল্ডোর গোল, জেসি লিনগার্ডের গোলে এগিয়ে যাওয়া আর শেষ মুহূর্তে দাভিড দা হিয়ার পেনাল্টি বাঁচানো, সব আনন্দের মুহূর্তেই নিজেদের সংযত রেখেছিলেন সৌম্যরা। কারণ তখন চারিদিকে ওয়েস্টহ্যাম সমর্থকরা তাঁদের ঘিরে বসেছিলেন। পাশাপাশি পায়ের ব্যথাও ভোগাচ্ছে অনেক দিন ধরে। লাফাতে গেলে সে ব্যথা আরও বাড়বে। কিছু দিন পরে অস্ত্রোপচারও হবে। তাই উত্তেজনা মনের মধ্যে চেপে রেখেই ৯০ মিনিট খেলা দেখেন সৌম্য।
সৌম্য বললেন, ‘‘স্টেডিয়ামের ভেতরে আনন্দ করতে পারিনি। গোলটার পর চিৎকার করে উঠেছিলাম। তবে আমাদের সামনে বসা কয়েকজন ওয়েস্টহ্যাম সমর্থককে দেখে চুপ করে যাই। সময় মতো ক্রাচটা হাতে নিয়ে নিই। নয়ত ওরা আমাদের মারধর করতেই পারত।’’
২-১ গোলে জয়, রোনাল্ডোর তিন ম্যাচে চার গোল। স্টেডিয়ামের ভেতরে উৎসব করতে না পারলেও বাইরে এসে উৎসবে মাতেন সৌম্যরা। তিনি বলেন, ‘‘একটা সময় মনে হচ্ছিল, যুবভারতীতে ভুল গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছি। অনেক দিন ধরেই লন্ডন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখেছি বলে জানি, এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে হয়। সেটাই করেছি। সমস্ত উৎসব স্টেডিয়ামের বাইরে করেছি। খেলা শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণ আগেই বেরিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমাকে ওয়েস্টহ্যাম সমর্থকরা চিহ্নিত করে ফেলেছিল। ঝামেলায় জড়াতে চাইনি। তাই বেরিয়ে এসেছি।’
এখন নিশ্চিন্তে অস্ত্রোপচার করিয়ে ফেলতে পারবেন। হয়ত সেরেও উঠবেন দ্রুত। রোনাল্ডোকে দেখে মন যে ভরে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy