চর্চায়: লক্ষ্মীর নতুন ইনিংসের দিকেই এখন নজর সবার। ফাইল চিত্র
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরে লক্ষ্মীরতন শুক্লকে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনার পাশাপাশি খেলার মাঠেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজনীতিতে এই মুহূর্তে আর থাকতে খুব একটা আগ্রহী নন। খেলার মাঠ থেকে রাজনীতিতে এলেও নতুন ময়দান খুব একটা উপভোগও করেননি বলেও নাকি বন্ধুবান্ধবদের কাছে জানিয়েছেন। ইস্তফার চিঠিতেও লক্ষ্মী এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আপাতত রাজনীতি থেকেই তিনি বিরতি নিতে চান।
রাজনৈতিক মহলে অনেকে লক্ষ্মীর রাজনৈতিক ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে গিয়েছে বলে মানতে নারাজ। তবে এরই পাশাপাশি খেলার ময়দানে শুরু হয়েছে কৌতূহল যে, বাংলার বহু যুদ্ধের ঘোড়ার কি ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে? জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি লক্ষ্মী বলেছেন, তিনি আইপিএল দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোচিংয়ে যেতে চান। ইতিমধ্যেই কমেন্ট্রি করার জন্য তাঁর কাছে প্রস্তাব এসেছে এবং আইপিএলে তিনি কয়েকটি ম্যাচে ধারাভাষ্যও দিয়েছেন। এখন প্রত্যেকটি আইপিএল দলেই স্থানীয় বা ভারতীয় কোচেরা রয়েছেন সহকারীর ভূমিকায়। লক্ষ্মী ভারতের হয়ে ওয়ান ডে খেলা ক্রিকেটার। বাংলার হয়ে দারুণ সব পারফরম্যান্স রয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলা বা কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে তাঁকে কোচিং ভূমিকায় দেখা যেতে পারে কি না, তা দেখার। কমেন্ট্রিতেও বাংলার অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার যোগ দিয়েছেন। ক্রিকেটের ময়দানে ফিরতে চাইলে সেই পথেও হাঁটতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সব চেয়ে বেশি কৌতূহল তৈরি হতে যাচ্ছে এই প্রশ্ন নিয়ে যে, লক্ষ্মীরতন শুক্ল আগামী দিনে ক্রিকেট প্রশাসনে আসতে পারেন কি না? রাজনীতির ময়দান যদি তিনি সত্যিই ছেড়ে দিতে চান, তা হলে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা সিএবিতে তাঁর আসার ব্যাপারে বাধা থাকবে না। লোঢা কমিটির সংস্কার অনুযায়ী, মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক নেতাদের উপরে ক্রিকেট সংস্থায় পদাধিকারী হওয়ার ব্যাপারে নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাজনীতি ছেড়ে দিলে লক্ষ্মীর উপর নিষেধাজ্ঞাও আর থাকবে না।
আরও পড়ুন: সৌরভের ছুটি আজ, ‘দলে এলে স্বাগত’, বললেন অরবিন্দ মেনন
লক্ষ্মী কয়েক দিন আগে সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভায় এসেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর ভোটদানের অধিকার রয়েছে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায়। সেই কারণেই বার্ষিক সাধারণ সভায় গিয়েছিলেন। তবে তিনি এমন বললেও সে দিন থেকেই ইতিউতি জল্পনা শুরু হয়, ক্রিকেট প্রশাসনে তিনি আগ্রহ দেখাতে শুরু করলেন কি না। সেই জল্পনা বাড়ছে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া এবং রাজনীতি থেকে বিরতি নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশে।
সিএবি প্রেসিডেন্ট এখন অভিষেক ডালমিয়া। সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের মেয়াদ শেষ হবে সেপ্টেম্বরে। তখন স্নেহাশিসকে প্রেসিডেন্ট করা হবে কি না, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মী যদি ক্রিকেট প্রশাসনে আসার ব্যাপারে আরও আগ্রহ দেখান, চিত্রনাট্যে নাটক যোগ হতে পারে।
ময়দানের ওয়াকিবহালমহলের মতে, লক্ষ্মী আবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের খুব ঘনিষ্ঠ। সৌরভ অসুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে দেখতে হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। এক সঙ্গে বাংলা দলের হয়েও অনেক ম্যাচ খেলেছেন। দাদা-ঘনিষ্ঠ লক্ষ্মীর ভবিষ্যৎও কি তা হলে সৌরভের পরবর্তী পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িত? এমন প্রশ্নও ঘুরছে।
আরও পড়ুন: একটাও কভার ড্রাইভ না মেরে সচিনের অপরাজিত ২৪১, আজও মুগ্ধ স্টিভ ওয়
সৌরভ রাজনীতিতে যোগ দিতে পারেন, বঙ্গে বিজেপির মুখ হয়ে উঠতে পারেন, এমন জল্পনা বেশ কয়েক দিন ধরেই চলছে। কারও কারও মত, যদি তা ঘটে, লক্ষ্মী দাদার ‘টিমে’ যোগ দিলে খুব অবাক হওয়ার থাকবে কি? আর যদি সৌরভের রাজনীতিতে যোগদান না-ও ঘটে, ক্রিকেট প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে থেকে যেতে চাইবেন বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তখন দাদার ঘনিষ্ঠ অনুজ হিসেবে লক্ষ্মী প্রশাসকের নতুন ইনিংস খেলতে নামবেন না, কে বলতে পারে!
নাগপুরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে ১৯৯৯-এর মার্চে ভারতের জার্সিতে অভিষেক ঘটে লক্ষ্মীরতনের। অধিনায়ক ছিলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। সেই ম্যাচে ১৩০ নট আউট এবং চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন সৌরভ। নতুন ইনিংসেও কি দাদা-ভাইয়ের জুটি তৈরি হবে? এবং, হলেও কোন ময়দানে? সময় বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy