স্তুতি: ধোনির প্রশংসায় রাজপুত। ছবি: টুইটার।
ক্রিকেট ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বোলিং পরিবর্তনের একটা নিশ্চিত ভাবে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে যোগিন্দর শর্মাকে দিয়ে শেষ ওভার করানো। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি অবসর নেওয়ার পরে সেই ‘তাৎক্ষণিক’ সিদ্ধান্তের প্রশংসা শোনা যাচ্ছে অনেকের মুখেই। কিন্তু অনেকেরই হয়তো জানা নেই, সেই সিদ্ধান্ত মোটেই তাৎক্ষণিক ছিল না। চাপের মুখে যোগিন্দরকে বল করানোর ভাবনা আগে থেকেই ছিল ক্যাপ্টেন কুলের মাথায়। যে কথা আনন্দবাজারের কাছে ফাঁস করলেন ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের কোচ লালচাঁদ রাজপুত।
জোহানেসবার্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনালে কেন ধোনি বেছে নিয়েছিলেন অনভিজ্ঞ যোগিন্দরকে? কেন ফাটকা খেলেছিলেন ধোনি? এই প্রশ্ন এখনও তোলপাড় করে ক্রিকেট দুনিয়াকে। সোমবার দিল্লি থেকে ফোনে রাজপুত জানালেন, ওই সিদ্ধান্ত মোটেই ফাটকা ছিল না। ‘‘ধোনি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল, চাপের মধ্যে যোগিন্দরকে বল দেবে। আপনারা ফাইনালের কথা বলেন শুধু। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালেও কিন্তু যোগিন্দরকে দিয়ে শেষ ওভার করিয়েছিল ধোনি। যোগী দুটো উইকেটও পায় ওই ওভারে। একটা ছিল মাইক হাসির। আমরা আগে থেকেই ওকে তৈরি করছিলাম।’’
কিন্তু কেন যোগিন্দরের উপর আস্থা ছিল ধোনির? ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী কোচ রাজপুতের প্রশংসার মধ্যে ফুটে উঠছে এক ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের ছবি। যে মস্তিষ্কের মালিক সদ্য অধিনায়ক হয়েও ঝুঁকি নিতে ভয় পাননি। রাজপুত বলছিলেন, ‘‘এর আগে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে যোগিন্দরের বোলিং দেখেছিল ধোনি। ও জানত, ছেলেটার মধ্যে চাপ নেওয়ার ক্ষমতা আছে। সে দিন মাঠে নিশ্চয়ই ধোনি বুঝেছিল, ছন্দে আছে যোগিন্দর।’’ মিডিয়াম পেসার যোগিন্দরের দুটো ব্যাপার পছন্দের ছিল ধোনির। এক, যোগিন্দরকে নিয়ে ক্রিকেট কোচেরা তখনও কাটাছেঁড়া করে উঠতে পারেননি। রাজপুতকে ধোনি বলেছিলেন, যোগীর বোলিং সম্পর্কে কারও বিশেষ ধারণা নেই। তাই কাজে লাগানো যেতেই পারে। দুই, যোগিন্দরের ‘পোকার ফেস’। অর্থাৎ, ভাবলেশহীন একটা মুখ। যা দেখে বোঝা সম্ভব নয়, ভিতরে কী চলছে। ‘‘যোগিন্দরকে দেখে কখনও টের পাইনি ও চাপে আছে। যে ব্যাপারটা ধোনির খুব ভাল লেগেছিল,’’ বলছেন রাজপুত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কী ছিল ধোনি-মন্ত্র? রাজপুতের কথায়, প্রতিটা টিম মিটিংয়ের শেষে ধোনি এবং তিনি দলকে একটা কথাই বলতেন, ‘টেনশন লেনে কা নেহি, দেনে কা।’ বিশ্বকাপের মতো মঞ্চ। সেখানে তরুণ বোলারদের কী করে ভরসা দিতেন ধোনি? রাজপুতের জবাব, ‘‘মার খেলেও ধোনি বার বার বলত, তোমার দোষ নেই কোনও। শুধু পরের বলটা নিয়ে ভাবো। আগে কী হয়েছে, ভুলে যাও।’’ ফাইনালের শেষ ওভারে যোগিন্দরের হাতে বল তুলে দিয়েও একই বার্তা দিয়েছিলেন ধোনি: খোলা মনে বল করো। টেনশন নিয়ো না।
যে মন্ত্রেই এসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর তার পরে হোটেলে ফিরে উৎসব। রাজপুত জানাচ্ছেন, যে উৎসবে সামিল হয়েছিলেন শাহরুখ খানও। সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন ‘বাদশা’। আর বাজিগরের সঙ্গে সে রাতে নাচতে দেখা গিয়েছিল ক্রিকেটের বাজিগরকেও! তাঁর নাম মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy