টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর জীবনের তিনটে দিন কেটে গিয়েছে। এই কলাম লিখছি টেমস নদীর ধারে আমার ঘরে বসে। আপাতত সামনে সারে বনাম কেন্ট কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ। তারই অপেক্ষায় সময় কাটছে।
অন্য দিকে, কলম্বোয় আমার প্রাক্তন টিমমেটরা ভারতের বিরুদ্ধে তৃতীয় এবং সিরিজের শেষ টেস্টটা খেলার তোড়জোড়ে ব্যস্ত। কলম্বোর এই টেস্ট থেকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের একটা নতুন অধ্যায়ও শুরু হতে চলেছে। আর সেই ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি দারুণ আশাবাদী!
আমার অবসরের পর শ্রীলঙ্কা টিমে কত বড় ফাঁক তৈরি হবে তা নিয়ে গত এক সপ্তাহে অনেক লেখালেখি দেখেছি। সত্যি বলতে কী, নিজের এমন প্রশংসা পড়তে ভালই লাগে। তবে বাস্তবটাও আমি জানি। আর সেটা হল, শ্রীলঙ্কায় এই মুহূর্তে একাধিক প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান রয়েছে যারা জাতীয় দলে আমার অভাব ঢেকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এত দিন মঞ্চের বাইরে, উইংসে একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এরা। আমার অবসরে সুযোগের সেই দরজাটা খুলে গিয়েছে। এ বার নতুন এক জন উঠে আসবে। আর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে যে, সে ক্রিকেটার হিসাবে আমাকেও ছাপিয়ে যাবে।
গত দু’দশক ধরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট যে বড় নামেদের উপর ভরসা করে থাকত, তারা প্রত্যেকেই এখন অবসরে। এ বার নতুন তারকাদের জ্বলে ওঠার সময় এসেছে। এটুকু বলতে পারি, আমাদের জাতীয় দলে যে সব নতুন ছেলেরা খেলছে এবং টিমে ঢোকার জোরদার দাবি নিয়ে আরও যারা অপেক্ষায় আছে, প্রত্যেকেই সম্ভবনাময় প্রতিভা। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা হল, বিশ্বের সামনে এই তরুণরা যাতে নিজেদের মেলে ধরার সেরা সুযোগগুলো পায়, সেটা নিশ্চিত করা। এর জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আর ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এগোতে হবে।
এই কাজে আমরা কতটা সফল হচ্ছি, তার প্রথম পরীক্ষাটা আজ থেকে। সিংহলি স্পোর্টস ক্লাবে আগামী পাঁচ দিনে কী হয়, সেটাই বলে দেবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সঠিক দিশায় এগোচ্ছে কি না।
সিংহলি ক্রিকেট ক্লাবের পিচটা এমনিতে গল বা পি সারা ওভালের চেয়ে অনেক বেশি পাটা। তবে সম্প্রতি বাউন্স আর গতি বাড়িয়ে কিছুটা প্রাণবন্ত করার চেষ্টায় এই পিচ ঢেলে সাজা হয়েছে। যার পর গত পাকিস্তান সিরিজে এসএসসি-র পিচে অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক একটা টেস্ট ম্যাচ দেখেছি আমরা। ফলে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ যখন ১-১, তখন নির্ণায়ক টেস্টে পিচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় কি না, আগ্রহের সঙ্গে দেখার অপেক্ষায় আছি। আমার মতে, প্রথম ইনিংসটা কে কেমন খেলে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
গলে প্রথম টেস্টে ভারতকে দেখে আমার মনে হয়েছিল বড্ড বেশি রক্ষণাত্মক। ওদের তার শাস্তিও পেতে হয়। দ্বিতীয় টেস্টে আবার আমরা আরও বেশি ইতিবাচক খেলতে পারতাম। যেটা না করার মূল্য দিতে হয়েছে। আমাদের রান তোলার গতি একটা সময় পুরোপুরি থেমে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে অঞ্জেলো ম্যাথুজ ত্রাণকর্তা হয়ে দায়িত্ব নিতে এগিয়ে না এলে আরও দুঃখ ছিল। তবে গত সোমবারের দুঃসহ দ্বিতীয় ইনিংসের পারফরম্যান্সটা যত দ্রুত সম্ভব পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে শ্রীলঙ্কা। চাইবে বোর্ডে বড়সড় স্কোর তুলে রাখতে।
যা শুনছি, থারিন্ডু কৌশলের চোট আছে। শেষ টেস্টে না খেলার সম্ভাবনাই বেশি। তবে দিলরুওয়ান পেরেরা ভাল প্লেয়ার। অভিজ্ঞ আর দক্ষ। কৌশলের বিকল্প হিসাবে আদর্শ হবে ও।
চোটের সমস্যা অবশ্য ভারতেরও আছে। শেষ টেস্টে টিমে ওপেনিং-সহ বেশ কয়েকটা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে ওরা। আমার ধারণা, এতে বিরাট কোহলিদের ছন্দ কিছুটা নষ্ট হবেই। তবে ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চে খুব ভাল কয়েক জন ক্রিকেটার এতদিন বসে ছিল। সুযোগটা পেয়ে নির্বাচকদের সামনে নিজেদের জাত চেনাতে মরিয়া থাকবে ওরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy