Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

কলকাতার কলকাঠি, মনে করছে গুয়াহাটি

মঙ্গলবার দুপুরে সুনসান ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়াম চত্বর। ঠিক ৪ কিলোমিটার দূরে আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাসে ‘ফিফা’র টিকিট কাউন্টারে তখন চলছে আয়োজকদের মুণ্ডপাত।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৩
Share: Save:

এ যেন অষ্টমীতেই বিসর্জনের বাদ্যি!

অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিল-ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের আগের দিন এমনই পরিবেশ গুয়াহাটিতে।

মঙ্গলবার দুপুরে সুনসান ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়াম চত্বর। ঠিক ৪ কিলোমিটার দূরে আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাসে ‘ফিফা’র টিকিট কাউন্টারে তখন চলছে আয়োজকদের মুণ্ডপাত। কিন্তু শূলে কাকে চড়ানো উচিত, তা ঠিক করতে পারছেন না টিকিট বদলে টাকা ফেরত নিতে আসা ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের কাঠগড়ায় বৃষ্টি থেকে ব্রাজিল, ফিফা থেকে অসম সরকার— সকলেই। রোষের মুখে রয়েছে কলকাতাও!

কয়েক মাস আগে অনলাইনে বিক্রি শুরুর প্রথম দিনই সেমিফাইনালের টিকিট শেষ হয়েছিল গুয়াহাটিতে। সোমবার সকালে শহরে কাউন্টার খোলে কিছুক্ষণের জন্য। জালুকবাড়ির রুবায়েত আলি, সূরজ, কামাখ্যা গেটের নান্টু দাস, প্রণব সরকার, সোনাইঘুলির প্রিয়া হাজরিকারা ভিড় জমিয়েছিলেন সেখানে। মুহূর্তে শেষ হাজার টিকিট। বিকেলেই মেলে দুঃসংবাদ! বেহাল মাঠের জন্য খেলা ফিরছে কলকাতায়।

আরও পড়ুন: তিকি তাকা বনাম শক্তির লড়াই মুম্বইতে

টিকিটের টাকা ফেরত নিয়ে রাজ্য সরকারের মুণ্ডপাত করতে করতে বরপেটার আরিফুল আলির মন্তব্য, ‘‘আজ ও গত কাল যেমন চড়া রোদ ছিল, তাতে মাঠে খেলা হতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মনে
হচ্ছে কলকাতার চাপেও ফিফা তড়িঘড়ি গুয়াহাটির খেলা বাতিল করেছে।’’ কিন্তু সেই দাবিতে জল ঢেলে মঙ্গলবার রাত থেকে ফের নেমেছে বৃষ্টি।

কলকাতাকে ব্রাজিলের ‘দ্বিতীয় ঘরের মাঠ’ বলে যে ভাবে প্রচার চলছে, তাতেও ক্ষিপ্ত গুয়াহাটির ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের বক্তব্য, খেলা হলে একই রকম সমর্থন এই শহরেও পেত সাম্বা ফুটবল। গুয়াহাটিতে মাঠ ফাঁকা থাকে বলে সমালোচনা হয়েছে। ফুটবলপ্রেমীদের অভিযোগ, তাঁরা টিকিটই জোগাড় করতে পারেননি। আর হাতে টিকিট পেয়েও মন্ত্রী-আমলা-কর্মকর্তারা মাঠে না যাওয়ায় এমন বিপত্তি ঘটেছে।

খবর মিলেছিল, মাঠে নিয়ে ব্রাজিলের আপত্তি ছিল বেশি। কলকাতার মতো গুয়াহাটিতেও পেলে, নেমারের দেশের অনেক সমর্থক। পছন্দের দলের উপর তা-ই অভিমান বেড়েছে। নান্টুবাবু বলেন, ‘‘এই দলের ফুটবলাররাই তো এক দিন রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, নেমার হয়ে দুনিয়া কাঁপাবেন। গ্যালারিতে বসে ওঁদের খেলা দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। বৃষ্টি সব শেষ করে দিল।’’

প্রণববাবুর কথায়, ‘‘তুমুল বৃষ্টি তো কলকাতাতেও হয়েছে। তার পরও যুবভারতীতে খেলা হলে গুয়াহাটিতে কেন তা করানো গেল না তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’’

শিলং থেকে দল বেঁধে গুয়াহাটি এসেছিলেন মাইকেল লিংডো, এলিসন সুলাই, অ্যাগনেস, বার্নার্ড সাংমারা। আশায় জল ঢেলেছে ফিফা। ক্ষুব্ধ তরুণরা বলে গেলেন, ‘‘এর চেয়ে ঢের বেশি খারাপ মাঠে আমরা খেলি। কিছু হয় না। ওরা এত বড় খেলোয়াড়, তা-ও এত ভীতু!’’

তাঁদের কে বোঝাবে, ভবিষ্যতের নেমারদের চোট-আঘাত থেকে বাঁচাতে এখন থেকেই তাঁদের আগলে রেখেছে ফুটবলবিশ্ব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy