আকর্ষণ: আজ শুরু টেস্ট সিরিজ। বিশ্বের নজরে কোহালি। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালির অতিমানবীয় ক্রিকেট জীবনে এখনও পর্যন্ত একটাই কালো দাগ। ইংল্যান্ডের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে রান না পাওয়া। চার বছর আগের সফরে ১০ টেস্ট ইনিংসে কোহালির রান ছিল ১৩৪। গড় ১৩.৪০।
চার বছর পরে সেই ব্যর্থতা মুছে দিতে কি বদ্ধপরিকর কোহালি?
সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরুর আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে এসে ভারত অধিনায়ক সেই প্রশ্নের উত্তর খুব স্পষ্ট ভাষায় দিচ্ছেন— ‘‘চার বছর আগের সেই ব্যর্থতা আমি মাথায় রাখছি না।’’ এর পরে কোহালি আরও বলছেন, ‘‘কোনও দেশে নিজেকে প্রমাণ করার ভাবনা আমার মাথায় নেই। আমি শুধু দলের জন্য রান করে যেতে চাই। ভারতীয় ক্রিকেটকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে চাই। সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।’’
চার বছর আগে কোহালিকে সব চেয়ে ভুগিয়েছিলেন জিমি অ্যান্ডারসন। সেই অ্যান্ডারসনের সঙ্গে এ বারের দ্বৈরথ নিয়ে কী ভাবছেন তিনি? ভারত অধিনায়ক বলছেন, ‘‘আমার ভাবনাটা খুব সহজ।
ব্যাটসম্যান হিসেবে আমাকে কী করতে হবে, তা নিয়ে একটা স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। মাঠে নেমে পরিকল্পনাটা কাজে লাগাতে হবে। আর তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সব চেয়ে বড় কথা, আত্মবিশ্বাসী হতে হবে আর নিজের দক্ষতায় আস্থা রাখতে হবে।’’
গত চার বছরে ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেকেও বিশ্বসেরার আসনে বসিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাও অনেকে বলছেন, ইংল্যান্ডের মাটিতে এখনও নিজেকে প্রমাণ করা বাকি আছে কোহালির। এই কথা শুনলে কি বিরক্ত হন? কোহালির জবাব, ‘‘অতীতে এই সব নিয়ে মাথা ঘামাতাম। কারণ, তখন আমি প্রচারমাধ্যমে যা বেরোত, তা ভাল করে পড়তাম।’’ ভারত অধিনায়ক জানাচ্ছেন, এখন পরিস্থিতিটা বদলে গিয়েছে। প্রচারমাধ্যমে কী লেখা হচ্ছে, কী বলা হচ্ছে তা তিনি ভুলেও দেখেন বা শোনেন না।
‘‘বাইরে কী চলছে, তা নিয়ে আমি যদি বেশি ভাবি, তা হলে মানসিক প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে। আমি যখন ক্রিজে যাই, তখন আমার সঙ্গে ব্যাটটাই থাকে, সমালোচকরা নয়। ওই সময় আমি ফোকাসটা ঠিক রাখতে চাই।’’
কোহালি মনে করছেন, তাঁর দলের ক্ষমতা আছে ইংল্যান্ডের মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফেরার। ভারত অধিনায়ক বলছেন, ‘‘বিদেশের মাঠে জেতার জন্য যে দক্ষতার প্রয়োজন, তা আছে আমাদের। আছে মানসিক কাঠিন্যও। দক্ষিণ আফ্রিকায় যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছি, তাতে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে চ্যালেঞ্জটা সব সময়ই কঠিন। এখানে সফল হতে গেলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নামতে হবে।’’
টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি নিয়েও পুরোপুরি সন্তুষ্ট কোহালি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের প্রস্তুতি ভালই হয়েছে। যারা এখানে ওয়ান ডে খেলেছে, তারা সময় পেয়েছে পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার। যারা শুধু টেস্ট খেলার জন্য এখানে এসেছে, তারাও তৈরি হওয়ার সময় পেয়েছে। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। আমরা মানসিক ভাবে তৈরি।’’
তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের দশ বছর পূর্ণ হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। যা নিয়ে কোহালি বলছেন, ‘‘দশ বছর আগে কখনও ভাবিনি যে, এ রকম একটা পরিস্থিতি আসবে। যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দশ বছর পূর্ণ হওয়ার মুখে এসে দাঁড়াব। এর পরে আমার আর কী অভিযোগ থাকতে পারে? এখন একটাই লক্ষ্য। দলের জন্য রান করা।’’
ইংল্যান্ডের মাঠে আগের বার সিরিজ হারতে হয়েছিল ভারতকে। কিন্তু এ বার কোহালির ভারত টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল। তা হলে আপনারা ফেভারিট না আন্ডারডগ? কোহালির জবাব, ‘‘আমরা ফেভারিট না আন্ডারডগ, তাতে কিছু যায় আসে না। ফেভারিট দলের ওপরেই যে শুধু চাপ থাকবে আর আন্ডারডগরা ভয়ডরহীন খেলা খেলবে, ব্যাপারটা সব সময় সে রকম হয় না। আমাদের ভারসাম্যটা ঠিক রাখতে হবে।’’
কোহালি জানাচ্ছেন, তাঁর তূণের অন্যতম সেরা অস্ত্র হল নিজের প্রতি বিশ্বাস। ‘‘নিজের প্রতি আস্থা রাখাটাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। নিজের ওপর আস্থা না থাকলে কিন্তু সাফল্য পাওয়া কঠিন। ভারতের পাটা পিচেও আপনি আউট হয়ে যেতে পারেন, যদি নিজের ওপর বিশ্বাস না থাকে। আবার নিজের ওপর আস্থা থাকলে সবুজ পিচেও বড় সেঞ্চুরি করা যায়,’’ বলেন কোহালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy