Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
রিল্যাক্স করছেন ওঝা

দ্রাবিড়ীয় মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে চ্যালেঞ্জের সামনে নায়ার

শিখর ধবন, ঋদ্ধিমান সাহা আর তার পর মুরলী বিজয়। তিন টেস্টের সফরে তিন বড় চোটের ধাক্কায় কিছুটা হলেও অস্বস্তি ভারতীয় শিবিরে। কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বেঁচে আছে ঠিকই। কিন্তু তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় টেস্টে প্রথম এগারো নিয়ে চিন্তা।

পূজারা না নায়ার— শেষ পর্যন্ত কাকে ওপেনার বাছবেন বিরাট। ছবি: দেবাশিস সেন।

পূজারা না নায়ার— শেষ পর্যন্ত কাকে ওপেনার বাছবেন বিরাট। ছবি: দেবাশিস সেন।

সংবাদ সংস্থা
কলম্বো শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২২
Share: Save:

শিখর ধবন, ঋদ্ধিমান সাহা আর তার পর মুরলী বিজয়। তিন টেস্টের সফরে তিন বড় চোটের ধাক্কায় কিছুটা হলেও অস্বস্তি ভারতীয় শিবিরে। কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বেঁচে আছে ঠিকই। কিন্তু তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় টেস্টে প্রথম এগারো নিয়ে চিন্তা।

এই অবস্থায় অপ্রত্যাশিত ভাবে টেস্ট অভিষেকের সামনে দাঁড়িয়ে দু’জন। একজনের বয়স তেইশ। অন্য জনের ঠিক উল্টো— বত্রিশ। যাঁদের কেরিয়ারের রেখচিত্রে অদ্ভুত অমিল। প্রথম জন, কর্নাটকের তরুণ ডান হাতি করুণ নায়ার। যিনি আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেন এবং কেরিয়ারের শুরুর দিকেই যথেষ্ট সফল।

আর দ্বিতীয় জন, মধ্যপ্রদেশের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান নমন ওঝা। পনেরো বছর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেকের পরে যাঁকে বেশ কয়েক বার জাতীয় স্কোয়াডে ডাকা হয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছর আগে একটা ওয়ান ডে আর দুটো টি-টোয়েন্টি বাদে কোনও এক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জন্য যাঁকে বরাবর রিজার্ভ বেঞ্চেই বসে থাকতে হয়েছে। ঋদ্ধিমানের চোটের ‘সৌজন্যে’ যিনি হঠাৎই কলম্বোর তৃতীয় টেস্টে সম্ভাব্য এগারোয় ঢুকে পড়েছেন।

এ দিন দু’জনই সাংবাদিক সম্মেলন করলেন কলম্বোয়। এবং দু’জনকে দেখা গেল সম্পূর্ণ আলাদা মেজাজে। তরুণ নায়ার যেখানে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন, অভিজ্ঞ নমন সেখানে সতর্ক, মিতবাক। নায়ার যখন রাজস্থান টিম মেন্টর রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বক্তব্য রাখছেন, নমন তখন ভারত ‘এ’-র হয়ে নিজের মন্থর ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা দিতে ব্যস্ত।

‘‘দ্রাবিড়ের থেকে ব্যাটিংয়ে অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। উনি সব সময় আমাকে সঠিক দিকে এগিয়ে দেন। আমার টেকনিকে কিছু পাল্টাননি, কিন্তু একজন তরুণ প্লেয়ারের যে আত্মবিশ্বাস লাগে, সেটা দিয়েছেন,’’ বলেছেন নায়ার। সঙ্গে আরও যোগ করেছেন, ‘‘উনি খুব বেশি কথা বলেন না। বেশি খুঁটিনাটিতে যান না। সবার সহজাত খেলাটাকেই উৎসাহ দেন।’’ বেঙ্গালুরু-নিবাসীর কাছে এই সুযোগ স্বপ্নের মতো। তিনি বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে স্বপ্ন সত্যি হয়ে গিয়েছে। যে কোনও ক্রিকেটারের স্বপ্ন হল দেশের হয়ে খেলা। যেটুকু সুযোগ পাব, তার দিকে মুখিয়ে রয়েছি।’’

ভারতীয় ড্রেসিংরুমের আবহাওয়া নিয়ে সবচেয়ে উত্তেজিত দ্রাবিড়ের শহরের তরুণ। ‘‘এই ড্রেসিংরুমের সদস্য হতে পারা, এখানে ঢুকে সবার সঙ্গে কথা বলতে পারা— দুর্দান্ত সব অনুভূতি। রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি বলেছেন এত দিন যে ভাবে খেলেছি, সে ভাবেই খেলতে। কোনও কিছু না পাল্টাতে।’’

অন্য দিকে নমনের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হল— অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টে ৮৪ বলে ১০ রানের ইনিংসের ব্যাখ্যা। এমনিতে আক্রমণাত্মক ব্যাট নমনকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি কি নতুন ব্যাটিং ঘরানায় দীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছেন? তাঁর সপাট জবাব, ‘‘আমি নতুন কিছু করতে চাই না। যা আছি, তেমনই থাকতে চাই।’’

বত্রিশ বছরের নমন ভালই জানেন যে, কেরিয়ারের এই লগ্নে খুব বেশি সুযোগ আর পাবেন না। জানেন যে, হয়তো কলম্বোই তাঁর প্রথম এবং শেষ সুযোগ। এই অবস্থায় প্রত্যাশার চাপ কতটা? ‘‘এ সব নিয়ে ভাবছিই না। অনেক বছর পরে সুযোগটা পেলাম, তাই এখন এটাকে শুধুই উপভোগ করতে চাই। এত বছর অপেক্ষা করে থেকেছি, তাই আর কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে না,’’ অকপট স্বীকারোক্তি তাঁর।

সত্যি, বিরাট কোহলির টিমের দুই নতুন সদস্যের মধ্যে কী অদ্ভুত অমিল। এক জনের সামনে অন্তহীন ক্রিকেটীয় প্রাপ্তির দিগন্ত। অন্য জনের ভাগ্যে পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE