নায়ক: মুম্বইকে হারানোর পরে কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। ফাইল চিত্র
বছর দু’য়েক আগে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ চলছিল মুম্বইয়ের ব্রেবোর্ন স্টে়ডিয়ামে। বল করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিনার নেথান লায়ন। উল্টো দিকের ব্যাটসম্যান পরপর চার বার লায়নের বল মাঠের বাইরে ফেলে দিলেন। নন স্ট্রাইকার প্রান্তে দাঁড়ানো শ্রেয়স আইয়ারকে তখন জিজ্ঞেস করেছিলেন লায়ন, ব্যাটসম্যানটা কে?
শ্রেয়স উত্তর দিয়েছিলেন, গৌতম। কৃষ্ণাপ্পা গৌতম।
এ বারের আইপিএল নিলামে যখন ছ’কোটির ওপর খরচ করে রাজস্থান রয়্যালস গৌতমকে দলে নিয়েছিল, তখন অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল, গৌতম কী এমন অফস্পিন করেন যে ওকে এত অর্থ খরচ করে নিতে হল? আগের বছরই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে ছিলেন গৌতম। কিন্তু খেলার সুযোগ পাননি। যে সুযোগ রাজস্থান করে দেয় এ বছরে। এবং, মুম্বইয়ের সঙ্গে প্রথম ম্যাচেই রোহিত শর্মাদের কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিল কর্নাটকের অলরাউন্ডার গৌতম!
তবে মুম্বইকে হারানোর পিছনে গৌতমের বল নয়, ছিল ব্যাট। ১১ বলে ৩৩ রান করে, অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি থেকে, প্রায় মুম্বইয়ের হাতে চলে যাওয়া ম্যাচ বার করে নিয়ে গেলেন ২৯ বছর বয়সি গৌতম। মুম্বইয়ের ১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে গৌতম যখন ক্রিজে আসেন, রাজস্থানের দরকার ছিল ১৭ বলে ৪৩ রান। গৌতম শুরু করেন ছয় দিয়ে, ম্যাচ শেষও করেন ছয় দিয়ে। মাঝে মারেন চারটি চার।
ব্যাট করতে নামার আগে রাজস্থান অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে তাঁকে বলেছিলেন, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো। সেটাই রেখেছিলেন গৌতম। ‘‘অধিনায়ক আমাকে বলেছিল, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো। সেই বিশ্বাসটা আমার ছিল। তাই শেষ ওভারে একটা রান না নিয়ে নিজেই ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। জানতাম, তিন বলে ছয় রান তুলে দিতে পারব।’’ হার্দিক পাণ্ড্যের করা শেষ ওভারের চতুর্থ বলেই ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন গৌতম। তাঁর ব্যাটিং দক্ষতায় অনেকে অবাক হলেও গৌতম নিজে হচ্ছেন না। বলছেন, ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেটে কিন্তু রান পেয়েছি। ভালই ছন্দে ছিলাম।’’
রাজস্থানে গৌতমের সতীর্থ সঞ্জু স্যামসন বলেছেন, ‘‘দুর্দান্ত ব্যাট করল গৌতম। ওর জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। আমাদেরও।’’ মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ওই ইনিংস খেললেও ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার গৌতম নন, হয়েছেন ক্যারিবিয়ান পেসার জোফ্রা আর্চার। বাইশ রানে তিন উইকেট নিয়ে। যা নিয়ে স্যামসনের বক্তব্য, ‘‘আমারও মনে হয়েছিল, গৌতমের ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া উচিত ছিল। তবে জয়ের পিছনে সবারই অবদান থাকে। আর্চারেরও বড় অবদান ছিল। তিন উইকেট নিয়েছে। প্রয়োজনের সময় চার মেরেছে। আমার পক্ষে এই নিয়ে আর কিছু বলা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy