পরীক্ষা: গোয়ার পথে ডেভিড, প্রবীর (বাঁ-দিকে)। নিজস্ব চিত্র
করোনা-আতঙ্কে শনিবার গোয়ায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আইএসএল ফাইনালে মুখোমুখি হবে এটিকে-চেন্নাইয়িন এফসি। বৃহস্পতিবার সরকারি ভাবে জানিয়ে দিল প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা।
গোয়া রওনা হওয়ার আগে এটিকে শিবিরেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা-আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই ফুটবলার ও দলের অন্যান্য সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘মাস্ক’। ফুটবলারেরা যদিও এই মুহূর্তে শুধু ফাইনাল নিয়েই ভাবতে চান। ব্যতিক্রম সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে জোড়া গোলের নায়ক ডেভিড উইলিয়ামস। বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবভারতীতে প্রবীর দাসকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক সেরে হোটেলে ফেরার আগে বলছিলেন, ‘‘ফাইনাল দেখতে আমার স্ত্রী ও বড় ছেলের অস্ট্রেলিয়া থেকে আসার কথা ছিল। সিঙ্গাপুর হয়ে ওদের সরাসরি গোয়া যাওয়ার টিকিট ছিল। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে ওদের ভিসা বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ হতাশ ডেভিড যোগ করলেন, ‘‘গত দশ বছর ধরে আমরা কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠলেই স্ত্রী চলে আসে ম্যাচ দেখতে। এ বারই তার ব্যতিক্রম হবে।’’
সেমিফাইনালে এটিকের নাটকীয় জয়ের আর এক নায়ক প্রবীর দাসের পাখির চোখ এখন শুধুই আইএসএল ফাইনালে। চোটের কারণে গত মরসুমে একটাও ম্যাচ খেলতে পারেননি। এই মরসুমে দুরন্ত ফর্মে। বৃহস্পতিবার সতীর্থ ডেভিডের পাশে বসে প্রবীর বললেন, ‘‘চোটের জন্য গত মরসুমে আমি খেলতেই পারিনি। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এই মরসুমে প্রায় সব ম্যাচেই শুরু থেকে খেলেছি। এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে আমার জীবনের সেরা মরসুম হয়ে থাকবে।’’
দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের রহস্যটা কী? প্রবীর বলছিলেন, ‘‘চোট পাওয়ার পরে বার বার শুনতে হয়েছে, আবার কি মাঠে ফিরতে পারব? মরিয়া হয়ে গিয়েছিলাম মাঠে ফেরার জন্য। কারণ, আমার বয়স এখন ২৭। তাই এই মরসুমে ফিরতেই হবে। না হলে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন কখনওই পূরণ হবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়েছি। আমাকে রেখে দেওয়ার জন্য এটিকের কাছেও কৃতজ্ঞ। মনে মনে ঠিক করেছিলাম, এই মরসুমে দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেব। এ বার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আরও এক জনের জন্য এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি।’’ তিনি কে? প্রবীর যোগ করলেন, ‘‘আমার মা সন্ধ্যা দাস। খেলতে না পারার যন্ত্রণা হয়তো প্রকাশ করিনি। অনেকে অনেক নেতিবাচক কথা বলত। কোনও প্রতিবাদ করিনি। এক দিন মা বললেন, বাবা তুই আবার মাঠে ফিরতে পারবি তো? তোকে আবার টিভিতে দেখতে পারব তো? মাকে বলেছিলাম, অবশ্যই তুমি আমাকে আবার টিভিতে দেখবে। অক্লান্ত ভাবে পরিশ্রম করে মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি।’’
আইএসএলে এই মরসুমে প্রথম পর্বে চেন্নাইয়িনকে হারিয়েছিল এটিকে। কিন্তু ঘরের মাঠ যুবভারতীতে হেরে গিয়েছিল আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের দল। যদিও প্রবীর তা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন। তাঁর কথায়, ‘‘সেমিফাইনালে উঠতে হলে কলকাতায় সে দিন চেন্নাইয়িনকে জিততেই হত। আমরা তার আগেই শেষ চারে পৌঁছে গিয়েছিলাম। এই কারণেই হয়তো আমাদের মনঃসংযোগে সামান্য চিড় ধরেছিল। তা ছাড়া দলগত ফুটবলও সে ভাবে খেলতে পারিনি। ফাইনাল সম্পূর্ণ আলাদা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy