ছুটিতে: স্ত্রী আন্তোনেল্লাকে নিয়ে ইবিজা দ্বীপে ঘুরছেন মেসি। ছবি: ফেসবুক।
লিয়োনেল মেসি কি স্পেন ছেড়ে ইটালির পথে? বিশ্বের ক্লাব ফুটবলে কি সব চেয়ে তাক লাগানো দলবদল আসন্ন?
এমন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছে ইটালির একটি নামী ক্রীড়া সংবাদপত্র। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, বার্সেলোনায় অখুশি মেসি। বিশেষ করে যে ভাবে লা লিগায় হতশ্রী ফুটবল খেলে খেতাব হাতছাড়া করেছে তারা, তাতে মহাতারকা ক্ষুব্ধ। ম্যানেজার কিকে সেতিয়েনের অধীনে খেলতেও আর পছন্দ করছেন না। এই অবস্থায় রেকর্ড অর্থে তাঁকে কিনে নেওয়ার জন্য ঝাঁপাচ্ছে ইন্টার মিলান। সংবাদপত্রটি তাদের প্রচ্ছদে ইন্টার মিলানের কোচ কন্তে এবং মেসির ছবি দিয়ে এই খবর ছেপেছে।
বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির চুক্তিতে যে ‘বাইআউট ক্লজ’ রয়েছে, তা আকাশছোঁয়া। ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬০৯৭ কোটি) দিতে হবে তাঁকে কিনে নিতে হলে। একটা তুলনা টানলেই বোঝা যাবে, এই অঙ্ক কতটা বিশাল। পিএসজি নেমারকে কিনেছিল রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে। মেসির জন্য দিতে হবে এর তিনগুণেরও বেশি। তবু ইটালীয় সংবাদপত্রের মতে, ইন্টার মিলান বড় দাঁও নিয়ে ভাবছে। রোনাল্ডো আগেই চলে গিয়েছেন। মেসিকে মিলান তুলে নিতে পারলে রোনাল্ডো বনাম মেসি ফুটবলের সেরা দ্বৈরথও স্পেন থেকে ইটালিতে চলে যাবে। নেমার পিএসজিতে। তাই মেসিকে হারালে স্প্যানিশ ফুটবলের আকর্ষণ বিরাট ভাবে ধাক্কা খাবে।
ক্লাব ফুটবলে মেসির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে সই করিয়ে বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছিল জুভেন্টাস। এখন তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইন্টার মিলান জবাব দিতে চায় মেসিকে নিয়ে এসে। যদিও ভুলে গেলে চলবে না, মেসিকে বার্সেলোনা থেকে নিয়ে আসা মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে ইটালীয় সংবাদপত্রের দাবি, ইন্টার মিলান ক্লাবের অন্যতম অংশীদার মেসির জন্য যত অর্থই লাগুক, ব্যয় করতে প্রস্তুত। সংবাদপত্রটির খবরে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মেসির বাবা আগামী মাস থেকেই মিলানে স্থানান্তরিত হচ্ছেন এবং সেখান থেকেই আপাতত ব্যবসা চালাবেন। এই ঘটনাকে ইঙ্গিতবাহী মনে করা হচ্ছে। খুদে মেসিকে যখন বার্সেলোনার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমিতে নিয়ে গিয়েছিলেন সেখানকার কর্তারা, তাঁর বাবাকে স্পেনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। বলা হচ্ছে, বাবার পরে কি ছেলেও এ বার মিলানমুখী হবেন?
এখনও মেসি এবং বার্সেলোনার বিচ্ছেদ ভাবনাতেও আনা যাচ্ছে না। তবে এটাও ঠিক যে, মেসির চুক্তি সামনের বছরেই শেষ হয়ে যাচ্ছে এবং এখনও পর্যন্ত তার নবীকরণ নিয়ে নানা অনিশ্চয়তার খবর ছড়াচ্ছে। প্রথমত, বার্সেলোনার অন্দরমহলে ভাল রকম অশান্তি চলছে বলে স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মেসি নিজেও বার্সেলোনার শীর্ষ কর্তাদের সব ব্যাপারে প্রসন্ন নন। ড্রেসিংরুমের খবর ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্তাদের বিরুদ্ধে তাঁর উষ্মা রয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। যদিও বার্সেলোনার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মেসি কোথাও যাচ্ছেন না। আজীবন তাদের ক্লাবেই খেলবেন।
লা লিগায় ঘরের মাঠে ওসাসুনার কাছে ১-২ হারের পরে ক্ষুব্ধ মেসির প্রতিক্রিয়া নিয়েও জলঘোলা হচ্ছে। মেসি বলেন, ‘‘এ ভাবে খেললে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আশাও ত্যাগ করা ভাল। নাপোলির কাছেও আমরা হারব।’’ যোগ করেন, ‘‘রিয়াল মাদ্রিদ সব ম্যাচ জিতে যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু আমরাও ওদের চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেছি।’’ এর পরেই তাঁর সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, ‘‘আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। খেলোয়াড়দের এবং বাকিদের। নিজেদের ভুলেই আমরা হেরেছি।’’ করোনা অতিমারিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বার্সেলোনাই পয়েন্ট টেবলে শীর্ষে ছিল। রিয়ালের চেয়ে তারা দু’পয়েন্টে এগিয়ে ছিল। কিন্তু পিছন থেকে এসে ছোঁ মেরে ট্রফি ছিনিয়ে নিয়ে গেল জ়িদানের দল। তা নিয়ে যে মেসি একেবারেই খুশি নন, তাঁর মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার।
ছোটবেলা থেকে কার্যত নিজের দেশ হয়ে ওঠা স্পেনেও কি আর আগের মতো খুশি মেসি? কর নিয়ে প্রবল বিতর্ক, ক্লাবের মধ্যে অশান্তির ছোঁয়া, ট্রফি জিততে না পারা, একের পর এক কোচ বদলেও ছবি না পাল্টানো— সব মিলিয়ে নানা ঘটনা চলতেই থাকছে। ক্লাবের অন্দরেও নানা ঝামেলা লেগেই রয়েছে। বর্তমান ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ছ’জন ডিরেক্টর পদত্যাগ করেছেন। আর্নেস্তো ভালভার্দেকে সরিয়ে জানুয়ারিতেই ম্যানেজার হয়ে আসা কিকে সেতিয়েন ইতিমধ্যেই চাকরি রাখা নিয়ে প্রবল চাপে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy