বিবাদ: বার্সার সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে মেসির। ফাইল চিত্র
লিয়োনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো দ্বৈরথের বদলে কি এ বার মেসি-রোনাল্ডো যুগলবন্দি তৈরি হতে চলেছে? জোর জল্পনা শুরু হয়েছে যে, বার্সেলোনার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তিকে নেওয়ার দৌড়ে জুভেন্টাসও ঢুকে পড়েছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমের খবর, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের লক্ষ্যে রোনাল্ডোর পাশে মেসিকে এ বার চাইছেন জুভেন্টাস কর্তারা। যদিও সরকারি ভাবে ইটালির চ্যাম্পিয়ন দলের পক্ষ থেকে কেউ এখনও পর্যন্ত কিছু বলেননি। তবে সংবাদমাধ্যমের খবর, মেসির বাবাকে তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছেন। দলের নতুন ম্যানেজার আন্দ্রেয়া পিরলোও নাকি দুই মহাতারকাকে একসঙ্গে খেলাতে চান।
এর আগে ইটালির একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ইন্টার মিলান মরিয়া মেসিকে নেওয়ার জন্য। তখন অবশ্য বার্সেলোনার সঙ্গে আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তির সংঘাত চরমে পৌঁছয়নি। ইটালির সেই সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছিল, মেসির বাবা মিলানে বাড়ি কিনেছেন। এবং সেখান থেকেই ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।
২০২১ পর্যন্ত বার্সার সঙ্গে চুক্তি থাকলেও বুরোফ্যাক্স (আইনি মহলে বেশি প্রসিদ্ধ এবং স্বাক্ষর-সহ গ্রহণ করতে হয়) পাঠিয়ে ক্লাবকে মেসি জানান, তাঁকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিক্ষোভে সামিল হন বার্সা সমর্থকেরা। উত্তাল আবহের মধ্যেই ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ জানান, মেসি বার্সেলোনায় থাকার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি পদত্যাগ করতে তৈরি।
কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি ঘোরেনি। বরং বার্সেলোনার সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্কের আরও অবনতিই হচ্ছে মেসির। এমনিতে ‘বাই আউট ক্লজ’ অনুযায়ী এই সময়ে মেসিকে কোনও ক্লাব কিনতে চাইলে বার্সার ঘরে জমা দিতে হবে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬১৪৪ কোটি টাকা)। আবার চুক্তিতে এমন ধারাও রয়েছে যে, প্রত্যেক বছর জুনে মরসুম শেষে মেসি ‘ফ্রি প্লেয়ার’ হিসেবে চলে যেতে পারবেন। এই ধারার সুবিধা নিয়ে মেসি বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্সাকে জানিয়েছেন, যে-হেতু এ বারে করোনা পরিস্থিতির জন্য মরসুম দেরিতে শেষ হয়েছে, তাই এখন তাঁকে ‘ফ্রি প্লেয়ার’ হিসেবেই ছেড়ে দেওয়া হোক। বার্সেলোনা সেই প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না। উল্টে ক্লাবের যে আইনি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে মেসি বুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছে বার্সেলোনা। যা পরিস্থিতি, মেসির বার্সেলোনা ছাড়া কার্যত নিশ্চিতই দেখাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রাক্তন গুরু পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যান সিটিই লিয়ো-লাভের দৌড়ে এগিয়ে।
অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ইংল্যান্ডের বৃষ্টিভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে গিয়ে আদৌ কি স্পেনের মতো সফল হতে পারবেন মেসি? স্পেনীয় লিগের চেয়ে ইপিএলে তীব্রতা অনেক বেশি। শারীরিক দ্বৈরথের সম্ভাবনাও স্পেনের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যেতে পারে। ইপিএলের কড়া, শক্তপোক্ত ডিফেন্ডারদের সামনে মেসি কতটা সফল হতে পারবেন, সেই তর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখনও পর্যন্ত ইপিএলের দলগুলির বিরুদ্ধে ৩৪টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। গোল করেছেন ২৬টি। বেশ সফলই বলতে হবে। সব চেয়ে সফল আর্সেনালের বিরুদ্ধে। ছ’টি ম্যাচে গানার্সের বিরুদ্ধে করেছেন ৯ গোল। তার মধ্যে রয়েছে ২০১০ এপ্রিলের সেই বিখ্যাত ম্যাচে করা চার গোল। মনে পড়বে আর্সেন ওয়েঙ্গারের সেই বিখ্যাত মন্তব্য, ‘‘মেসি মানব নয়, প্লেস্টেশন প্লেয়ার।’’ কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে একটি-দু’টি ম্যাচে খেলা এক আর ইংল্যান্ডের পরিবেশে বসবাস করে দীর্ঘ সময় ধরে পুরো লিগে খেলার ঝক্কি নেওয়া আর এক।
এ দিকে, ম্যান সিটি দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও রোনাল্ডোর পাশাপাশি নেমারের সঙ্গেও মেসির জুটি বাঁধার সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা চলছে। বন্ধু নেমার খুবই চেষ্টা করছেন প্যারিসে মেসিকে নিয়ে আসার, তেমনই শোনা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy