তামিলনাড়ুর সালেম থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে চিন্নপ্পমপট্টিতে। তাঁর বাবা ছিলেন দিনমজুর। মালবাহকের কাজ করতেন শাড়ি তৈরির কারখানায়। মা রাস্তার ধারে এক চিলতে দোকানে খাবার বিক্রি করতেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
ঘাসজমি থেকে তারকার স্তরে উত্থান ছিল ধূমকেতুর গতিতে। কিন্তু খ্যাতি দীর্ঘস্থায়ী হল না। বছর দু’য়েক আগে যে দ্রুততায় আলোর বৃত্তে উঠেছিলেন, সেই ভাবেই প্রায় হারিয়ে গেলেন অন্ধকারে। প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার থঙ্গারাসু নটরাজন এখন প্রায় বিস্মৃত।
০২১২
দরিদ্র তামিল পরিবারে নটরাজনের জন্ম ১৯৯১-এর ২৭ মে। তামিলনাড়ুর সালেম থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে চিন্নপ্পমপট্টিতে। তাঁর বাবা ছিলেন দিনমজুর। মালবাহকের কাজ করতেন শাড়ি তৈরির কারখানায়। মা রাস্তার ধারে এক চিলতে দোকানে খাবার বিক্রি করতেন।
০৩১২
নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়ার এ রকম এক পরিবারে নটরাজনের বড় হওয়া পাঁচ ভাইবোনের সঙ্গে। কুড়ি বছর বয়স অবধি তাঁর ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা বলতে ছিল অলিগলিতে টেনিস বল আর ইটের উইকেট।
০৪১২
পাড়ার ক্রিকেট খেলার সময়েই ক্রিকেটার এ জয়প্রকাশের চোখে পড়ে যান নটরাজন। তিনি চেন্নাইয়ে নিয়ে আসেন নটরাজনকে। সেখানেই জীবনে প্রথম প্রথাগত ক্রিকেট-প্রশিক্ষণ পান তিনি।
০৫১২
বাঁ হাতি পেসার হিসেবে সুযোগ পান জলি রোভার্স ক্লাবে। এরপর ডাক আসে তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ থেকে। ডিন্ডিগুল ড্রাগনস-এর হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স নজর কাড়ে।
০৬১২
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নটরাজনের অভিষেক ২০১৫ সালে, বাংলার বিরুদ্ধে, কলকাতায়। এখনও অবধি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৬টি ম্যাচে তাঁর মোট উইকেট সংগ্রহ ৪৮টি। রান করেছেন ২৮।
০৭১২
তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ-এর ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স দেখে তাঁকে বলা হত ‘ভারতের মুস্তাফিজুর রহমান’। ২০১৭ সালে তাঁকে তিন কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নেয় কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। সে বছর তাঁর বেস প্রাইস ছিল মাত্র দশ লক্ষ টাকা।
০৮১২
কিন্তু প্রত্যাশা জাগিয়েও জীবনের প্রথম আইপিএল অভিযানে ব্যর্থ হন নটরাজন। মোট ৬টি ম্যাচে তাঁর প্রাপ্তি মাত্র ২ টি উইকেট।
০৯১২
কনুইয়ে চোটের জন্য ২০১৭-১৮-র রনজি মরসুম খেলতে পারেননি নটরাজন। তারপরেও সুযোগের ভাগ্য তাঁকে বিমুখ করেনি। ২০১৮-এর আইপিএল-এ তাঁকে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে এ বার নিলামে তাঁর দর উঠেছিল মাত্র ৪০ লক্ষ টাকা। বেস প্রাইস ৪০ লক্ষেই তাঁকে দলে নেয় হায়দরাবাদ।
১০১২
নিজের আইপিএল-এর দ্বিতীয় মরসুমে একটা ম্যাচও খেলেননি নটরাজন। শুরু থেকে শেষ অবধি তাঁকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই।
১১১২
আইপিএল ২০১৯-এও নটরাজন আছেন সানরাইজার্স হায়দারবাদেই। তাঁকে দলেই রেখে দিয়েছিল হায়দরাবাদ।
১২১২
নটরাজন বলেছিলেন, আইপিএল তাঁর জীবন আমূল পাল্টে দিয়েছে। কিন্তু অন্ধকার থেকে আলোয় এসেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। এ বার কি সুযোগ পেলে নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারবেন তিনি? অপেক্ষায় তাঁর পরিবার। অপেক্ষায় আইপিএল-ভক্তরাও। (ছবি: ফেসবুক)