অতিথি: ইডেনে ধোনির ছোটবেলার কোচ। — নিজস্ব চিত্র।
ঠিক চার থেকে পাঁচ বল বাকি থাকতে ব্যাট করতে নামছেন। ২০ থেকে ২৫ রান করে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিয়ে অপরাজিত থেকে ফিরে যাচ্ছেন ড্রেসিংরুমে। তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ৪২ বছর বয়সেও ২৫-এর তারুণ্য। ইডেনে এ দিন কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম পঞ্জাব কিংস ম্যাচ দেখতে এসেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের ছোটবেলার কোচ কেশব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ৪২ বছরের তরুণের ফিটনেসের রহস্য কী?
তিন মাস আগেই ধোনির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় তাঁর কোচের। রাঁচীতে ছাত্রের গড়া অ্যাকাডেমির অন্যতম কোচ এখন কেশব। কাছ থেকে দেখেন, কী ভাবে ফিটনেস ধরে রাখেন তাঁর ছাত্র। কেশব বলছিলেন, ‘‘জিমে যায় না। ব্যাডমিন্টন খেলেই ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করে। টেনিসও খেলে। কিন্তু ব্যাডমিন্টনই বেশি।’’ যোগ করেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট সংস্থার মাঠে যখন রাজ্য দলের অনুশীলন চলে, ধোনি সেখানে চলে যায়। সকলকে পরামর্শ দেয়। ওদের সঙ্গেই অনুশীলন করে নেয়। এ ভাবেই ধরে রেখেছে ফিটনেস। তা ছাড়া ঘোড়সওয়ারি করে। সেখানেই দৌড়য়। ও জানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে গেলে কতটা ফিটনেস দরকার।’’
শেষ আইপিএলেও এতটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি ধোনিকে। প্রত্যেক ম্যাচেই শেষের দিকের ওভারগুলোয় ব্যাট করতে আসছেন। দ্রুত রান তোলার কাজটি করে ফিরে যাচ্ছেন। কেশব যেন পুরনো ধোনিকে ফিরে পেয়েছেন। ছোটবেলার কোচ বলছিলেন, ‘‘শুরুর দিকে ধোনি এ রকমই ব্যাট করত। এটাই ওর খেলা ছিল। আগের মতোই বড় শট খেলছে। সময় নষ্ট করছে না। যেন ছোটবেলার মাহিকে দেখতে পাচ্ছি।’’
ধোনির কি এটাই শেষ আইপিএল? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো তাঁর স্ত্রী সাক্ষীও জানেন না। ধোনি ভক্তেরা একেবারেই চান না শেষ বারের মতো কিংবদন্তিকে হলুদ জার্সিতে দেখতে। কিন্তু কেশব মনে করছেন, এটাই হয়তো শেষ আইপিএল। বলছিলেন, ‘‘ওর মস্তিষ্কে কী চলছে, কেউ বলতে পারে না। ওর সব চেয়ে কাছের মানুষটিও হয়তো জানে না। কিন্তু ছোটবেলা থেকে ওকে দেখেছি। চেন্নাই সুপার কিংসের পারফরম্যান্সে ও খুশি নয়। লখনউয়ের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ হারের পরে একটুও সময় নষ্ট না করে ড্রেসিংরুমে দৌড় দিল। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে নেতৃত্বের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে ওকে নিরুত্তাপ দেখাচ্ছে।’’ আরও বলেন, ‘‘অনেক কিছু ছোট ছোট বিষয় দেখে মনে হচ্ছে এটাই হয়তো শেষ আইপিএল। দর্শকদের আবারও সেই পুরনো ধোনির আঁচ দিচ্ছে। বড় চুল রেখেছে, যা শুরুতে দেখা যেত। হয়তো পুরনো ধোনির স্বাদ রেখে মাঠ ছাড়তে চায়। তবে আবারও বলব, ওর মস্তিষ্কে কী চলছে কেউ বলতে পারে না। পরের বার ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেলতে দেখলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।’’
ইডেনে ক্লাব হাউসে বসে সুনীল নারাইন ও ফিল সল্টের তাণ্ডব দেখেও মুগ্ধ ধোনির ছোটবেলার কোচ। বলছিলেন, ‘‘সল্ট সত্যি অসাধারণ ক্রিকেটার। হায়দরাবাদের হেডকে দেখেও আমি বিস্মিত। ওরা দু’জন আগামী দিনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে শাসন করবে।’’
শুক্রবার ইডেনে উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ খান। কিন্তু এলেন না প্রীতি জ়িন্টা। শেষ মুহূর্তে নাকি কলকাতায় আসার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। ‘বীর’-এর ঘরের মাঠে ‘জ়ারা’-কে দেখতে না পেয়ে কিছুটা হতাশ সমর্থকেরা। কিন্তু বলিউডের বাদশা আসতেই সকলের নজর চলে যায় তাঁর দিকে।
ইডেনের হসপিটালিটি বক্সে শাহরুখ ঢুকতেই সকলের মোবাইল ক্যামেরা তাক করা হয় তাঁর দিকে। মাঠে তখন চলছে নারাইন ও সল্ট তাণ্ডব। দুই ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ফেলেছেন কাগিসো রাবাডা। অথচ উপস্থিত সমর্থকদের অধিকাংশের নজর তখন ‘বি’ বক্সে বেগুনি টি-শার্ট পরা ব্যক্তির দিকে। ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে মাঠ ভরিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের কি এই দৃশ্য প্রাপ্য নয়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy