ডাগ আউটে হতাশ হয়ে বসে রোহিত শর্মা। ছবি: আইপিএল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দল ঘোষণার দিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সহ-অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। রোহিতের ব্যাট থেকে এল ৪ রান। হার্দিক ফিরলেন শূন্য রানে। ব্যর্থ ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া আর এক ব্যাটার সূর্যকুমার যাদবও। ব্যাটিং ব্যর্থতায় লখনউ সুপার জায়ান্টসের কাছে হারতে হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। চলতি আইপিএলে দ্বিতীয় বার হারের হ্যাটট্রিক হল হার্দিকদের।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। শুরু থেকেই উইকেট হারাতে শুরু করে মুম্বই। দ্বিতীয় ওভারে মহসিন খানের বলে ৪ রানের মাথায় আউট হন রোহিত। পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি করেন ১০ রান। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে আরও দু’টি উইকেট হারায় মুম্বই। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রান আউট হন তিলক বর্মা। এই পরিস্থিতিতে দলকে সামলানোর দায়িত্ব ছিল হার্দিকের কাঁধে। নবীন উল হকের পরের বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ২৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মুম্বই।
পাওয়ার প্লে-র পরে ইনিংস সামলানোর কাজ শুরু করেন ঈশান কিশন ও নেহাল ওয়াধেরা। রানের গতি কম থাকলেও উইকেট হারাননি তাঁরা। অর্ধশতরানের জুটি হয় তাঁদের। ঠিক যখনই মনে হচ্ছিল, এ বার বড় শটের দিকে তাকাবেন দুই ব্যাটার, তখনই আউট হয়ে যান ঈশান। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ৩২ রানে ফেরেন তিনি।
হাত জমে যাওয়ার পরে শেষ দিকে কয়েকটি বড় শট খেলেন ওয়াধেরা। অর্ধশতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলেই তাঁকে বোল্ড করেন মহসিন। ৪৬ রান করে আউট হন ওয়াধেরা। সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেন টিম ডেভিড। পেসারদের গতির ব্যবহার করে বড় শট খেলেন তিনি। লখনউয়ের উইকেটে বড় শট খেলা ততটা সহজ নয়। ডেভিড সেটাই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকায় সাহায্য পাচ্ছিলেন না ডেভিড।
ডেথ ওভারেও ভাল বল করে লখনউ। তার মাঝেই একটা খারাপ খবর তাদের জন্য। নিজের শেষ ওভারের প্রথম বলে মহম্মদ নবিকে আউট করে উঠে যান মায়াঙ্ক যাদব। আর বল করেননি তিনি। হয়তো আবার চোট পেয়েছেন মায়াঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে মুম্বই। ডেভিড ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই শূন্য রানে ফেরেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া আর্শিন কুলকর্ণি। পাওয়ার প্লে-র শুরুটা ভাল করেছিলেন মুম্বইয়ের বোলারেরা। সেই সময় সাবধানে খেলেন রাহুল ও মার্কাস স্টোয়নিস। পাওয়ার প্লে-র শেষ দুই ওভারে হাত খোলেন তাঁরা। লক্ষ্য খুব বেশি না হওয়ায় হাতে সময় ছিল রাহুলদের। সেটাই করলেন তাঁরা।
রাহুল ও স্টোয়নিসের মধ্যে ৫৮ রানের জুটি হয়। দেখে মনে হচ্ছিল এই জুটি দলকে জয়ে নিয়ে যাবেন। তখনই বল হাতে চমক হার্দিকের। নিজের প্রথম ওভারেই ২৮ রানের মাথায় রাহুলকে আউট করেন তিনি। অধিনায়ক আউট হলেও খুব একটা সমস্যা হচ্ছিল না লখনউয়ের। উইকেট ধরে খেলার চেষ্টা করছিল তারা। অন্য দিকে উইকেট নেওয়ার লক্ষ্যে হাতের সব তাস খেলে ফেলেন হার্দিক। স্টোয়নিস ও দীপক হুডার মধ্যেও জুটি হয়। দৌড়ে রান নিচ্ছিলেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে খারাপ বলে বড় শট আসছিল। সময় যত গড়াচ্ছিল, তত জয়ের দিকে এগোচ্ছিল লখনউ।
বাধ্য হয়ে নিজের সেরা অস্ত্র যশপ্রীত বুমরার হাতে বল তুলে দেন হার্দিক। বুমরার বলে ঝুঁকি নেয়নি লখনউ। বুদ্ধি করে খেলছিলেন দুই ব্যাটার। অন্য বোলারদের নিশানা করছিলেন। সেটা করতে গিয়েই নিজের উইকেট হারান হুডায় হার্দিকের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ১৮ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। অপর প্রান্তে থাকা স্টোয়নিস অর্ধশতরান করেন। তিনি থাকায় কোনও অবস্থাতেই খেলা লখনউয়ের হাতের বাইরে যায়নি।
১৪তম ওভারে হাত খোলা শুরু করেন স্টোয়নিস। মহম্মদ নবিকে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে ৬২ রানের মাথায় আউট হন স্টোয়নিস। তত ক্ষণে খেলা লখনউয়ের হাতে চলে এসেছে। ধীরে ধীরে জয়ের দিকে এগোয় তারা। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় লখনউ। আরও একটি ম্যাচে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মুম্বইকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy