প্রত্যয়ী: ইডেনের সবুজ পিচে বল করতে মরিয়া উমেশ। নিজস্ব চিত্র।
গত মাসে হারিয়েছেন বাবাকে। পিতৃবিয়োগের শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে নেমে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। চলতি মাসে তাঁর পরিবারকে আলোকিত করে আসে এক নতুন সদস্য। তাঁর কন্যাসন্তান। বাবার মৃত্যুশোক ও কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণের আনন্দকে কী ভাবে একসঙ্গে সামলাবেন বুঝে উঠতে পারতেন না তিনি। বাবার কথা উঠলে এড়িয়ে যেতেই পছন্দ করেন। তিনি বরাবরই এক নির্ভীক যোদ্ধা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৬৮টি উইকেটের মালিক হলেও আচরণ সাধারণ মানুষের মতোই। তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম প্রধান পেসার উমেশ যাদব। কেকেআরের টিম হোটেলে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে শোনালেন অনেক কাহিনি। যশপ্রীত বুমরা চোট থেকে ফিরে না এলেও উমেশ আশ্বস্ত করেছেন, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত বিপদে পড়বে না।
উমেশ বলছিলেন, ‘‘বুমরার চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। দল ওর অভাব অনুভব করছে। কিন্তু যে খেলতে পারবে না, তাকে নিয়ে দল খুব একটা ভাবে না। ওর অভাব আমাদেরই পূরণ করতে হবে। আর আমি নিশ্চিত, বুমরার না থাকা খুব একটা পার্থক্য গড়বে না ভারতীয় দলে।’’ যোগ করেন, ‘‘আমি নিশ্চয়ই চাইব বুমরা দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরুক। কিন্তু একটা ফাইনাল খেলার জন্য ক্রিকেটজীবনে ঝুঁকি নেওয়ার কোনও মানে হয় না। ওর জন্য আমার একটাই পরামর্শ, যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিয়ে নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ করে মাঠে ফিরুক। ও যত দিন বাইরে থাকছে, তত দিন আমাদেরই বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।’’
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য পেসারদের ঠিক মতো বিশ্রাম দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ভারতীয় দল। কিন্তু উমেশ ‘ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টে’ বিশ্বাসী নন। আইপিএল শেষেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। ভারতীয় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, পেসাররা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাবেন না। কিন্তু উমেশ অন্য ভাবে বিষয়টি দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘টানা ম্যাচ খেললে ছন্দটা বজায় থাকে। মাঝে বিশ্রাম পেলে আমি ছন্দ হারিয়ে ফেলি। অনেক পেসারের বিশ্রাম প্রয়োজন হতে পারে। আমার বিশ্রাম লাগে না। টানা ম্যাচ খেলতেই পছন্দ করি।’’
প্রায় তিন বছর পরে ইডেনে ফিরছে কেকেআর। শেষ কয়েক বছরে ইডেনের পিচ স্পিন-সহায়ক থেকে পেস-সহায়ক হয়ে উঠেছে। যেখানে বল করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন উমেশ। তাঁর কথায়, ‘‘ইডেনে যে রকম সমর্থন পাওয়া যায়, বিশ্বের আর কোনও মাঠে পাওয়া যায় না। ইডেনের দর্শকই আমাদের জেতাবেন। এখন তো পিচও আমাদের সাহায্য করে। সুইং পাওয়া যায়। পিচে বল পড়ে নড়াচড়া করে। অফকাটার, লেগকাটার করলেও সাহায্য পাওয়া যায়। ইডেনের সবুজ পিচে বল করার তর সইছে না। ’’
২০১৪ সালে নাইট জার্সিতে আইপিএল জিতেছেন উমেশ। তার পর থেকে কেকেআর আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। উমেশ মনে করেন, নতুন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের প্রশিক্ষণে নাইটদের ট্রফি জয়ের সুযোগ বাড়বে। উমেশের কথায়, ‘‘রঞ্জি ট্রফিতে বিদর্ভকে কেউ চিনত না। সেই দলে আমি খেলতাম। আমাদের চ্যাম্পিয়ন করেছেন পণ্ডিত স্যর। কেকেআরেও ওঁর সেই রূপ দেখতে পাচ্ছি। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এনেছেন। সকলের মধ্যে জেতার খিদে তৈরি করেছেন। ক্রিকেটারদের মধ্যে ধীরে ধীরে বোঝাপড়া বাড়ছে। একটা পরিপূর্ণ দল হয়ে উঠছি আমরা। এখানে কেউ রাসেল নয়, কেউ নারাইন নয়। সকলে নাইট রাইডার।’’
উমেশ টগবগ করছেন উত্তেজনায়। প্রথম ম্যাচ মোহালিতে ১ এপ্রিল। সেই ম্যাচ খেলতে আজ, বুধবারই উড়ে যাচ্ছে কেকেআর। নাইট পেসার মনে করেন, স্যাম কারেনদের বিরুদ্ধে খুব একটা সমস্যা হবে না তাঁদের। উমেশ বলে গেলেন, ‘‘এপ্রিলের প্রথম দিন খেলা। ‘এপ্রিল ফুল’ যেন না হই। বিপক্ষকে হারিয়েই ফিরতে হবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী। প্রথম চার ম্যাচ যদি ভাল খেলি, এই দলকে আটকানো কিন্তু সহজ হবে না। শেষ পর্যন্ত লড়বে এই দল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy