দলের নাম কিংস ইলেভেন পঞ্জাব থেকে পঞ্জাব কিংস হলেও জয় অধরা। অবশ্য শেষের দিকে খারাপ বোলিং করা কোনও দল অভ্যাসে পরিণত করলে সেই দল তো আর জিততে পারে না। তা স্কোর বোর্ডে যতই রান উঠুক। ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের দাপট থাকে। কিন্তু ১৯৫ রান তো জেতার জন্য কম নয়। যদিও কে এল রাহুলকে জন্মদিনে আরও একটা হার হজম করতে হল। গত ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে খারাপ ব্যাটিং করে পঞ্জাব হেরেছিল। আর এই ম্যাচে পুরনো রোগ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। ফলে গত ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ৩ উইকেটে হারের ক্ষত ভুলে এ বার ৬ উইকেটে জিতে স্বস্তি পেল ঋষভ পন্থের দিল্লি ক্যাপিটালস। আর অবশ্যই এই জয়ে বড় ভূমিকা পালন করলেন শিখর ধওয়ন। মাত্র ৪৯ বলে ৯২ রানে আউট হলেও সেটাই দুই দলের তফাত গড়ে দিল। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা হলেন তিনি। যদিও ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিটে ছিল টানটান উত্তেজনা।
১৩ ওভারে দিল্লির স্কোর বোর্ডে ১২৫ রানে ২ উইকেট। ধওয়ন ও পন্থ ক্রিজে থাকলেও জিততে দরকার ছিল ৪২ বলে ৭১ রান। অর্থাৎ খেলা যে কোনও দিকে ঘুরে যেতে পারে। ঠিক এমন সময় ম্যাচের মাঝে ‘ছক কষার বিরতি’ ডাকলেন আম্পায়ার। রিকি পন্টিং সহ পুরো দিল্লি ডাগ আউট তখন দুই ব্যাটসম্যানকে বোঝাতে ব্যস্ত। আর সেটাই যেন ওষুধের মতো কাজ করল। রিলে মেরেডিথের ১৪তম ওভারে পরপর তিনটি চার মারলেন শিখর। সেই ওভার থেকে এল ১৮ রান। কিন্তু এরপরের ওভারেই ছন্দ পতন। ঝাই রিচার্ডসনের স্টাম্পে থাকা একটি বলকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হলেন দিল্লির বাঁহাতি ওপেনার। ব্যক্তিগত ৯২ রানে শিখর যখন ফিরছেন তখন ১৫২ রানে ৩। ৩০ বলে তখনও দরকার ৪৪ রান।
তবে এরপরেও উত্তজনার অভাব ছিল না। ১৭তম ওভারে মহম্মদ শামি পরপর দুটো ‘নো’ বল করলেন। প্রথম বার পন্থ তাঁকে চার মারার পর দ্বিতীয় ঘটনা পঞ্জাব দলকে গভীর ক্ষত দিয়ে গেল। শামিকে সজোরে স্কোয়ার কাট মারলেন মার্কাস স্টোইনিস। সেই শট একেবারে জন্টি রোডসের মতো পয়েন্টের বাঁ দিকে উড়ে ধরেও নিলেন জলজ সাক্সেনা। তবে সেই ডেলিভারি কোমরের উপর থাকায় আবার ‘নো’ ডাকলেন তৃতীয় আম্পায়ার। মাথা ঠাণ্ডা না রাখতে পেরে মোক্ষম সময় ২০ রান দিয়ে বসলেন শামি।

জলে গেল কে এল রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়ালের লড়াই। ছবি - টুইটার।
A return to winning ways for @DelhiCapitals! 👏👏
— IndianPremierLeague (@IPL) April 18, 2021
Second win for @RishabhPant17 & Co. as they beat Punjab Kings by 6⃣ wickets at the Wankhede Stadium. 👍👍 #VIVOIPL #DCvPBKS
Scorecard 👉 https://t.co/wbefi7u3wk pic.twitter.com/Gyb7QUfmUP
তবুও ঝাই রিচার্ডসন হাল ছাড়েননি। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই পন্থকে ফিরিয়ে রাহুলের মুখে হাসি ও অনিল কুম্বলেকে স্বস্তি দিলেন অজি জোরে বোলার। ১৮০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিল্লি শিবির তখন বেশ চাপে। কিন্তু গত বছরের মতো এ বারও দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে ধরলেন মার্কাস স্টোইনিস। আর শেষ দিকে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে গেলেন দিল্লির হয়ে মাত্র ১২টা প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা ললিত যাদব। ফলে ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৮ রান তুলে ৬ উইকেটে ম্যাচ পকেটে পুরে নিল পন্থের দিল্লি। স্টোইনিস ১৩ বলে ২৭ ও ললিত ৬ বলে ১২ রানে অপরাজিত রইলেন।
টসে জিতে পঞ্জাবকে ব্যাট করতে পাঠান পন্থ। তবে ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে কে এল রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়াল যে শুরু থেকেই ঝড় তুলবেন সেটা হয়তো দিল্লি শিবির ভাবতে পারেনি। ১৩.৪ ওভারে প্রথম উইকেটে ১২২ রান তুলে দিলেন দুই ওপেনার। এ বার গত দুটো ম্যাচে বড় রানের মুখ দেখেননি। তবে এ দিন ময়াঙ্ক শুরু থেকেই ঝোড়ো মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন। কিন্তু মাত্র ৩৬ বলে ৬৯ রানে ময়াঙ্ক ফিরতেই কেমন যেন চুপসে গেল পঞ্জাবের মিডল অর্ডার। দলের রান যখন ১৪১ তখন দ্বিতীয় উইকেটের পতন হল। ৫১ বলে ৬১ রানে ফিরলেন পঞ্জাব অধিনায়ক। ক্রিস গেল বড় রান পেলেন না। তবে দীপক হুডার ১৩ বলে অপরাজিত ২২ ও শাহরুখ খানের ৫ বলে ১৫ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৫ রান তোলে পঞ্জাব।
যদিও এতে লাভ হল না। শেষের দিকে জঘন্য বোলিং করে কে এল রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়ালের লড়াইকে জলে দিলেন শামি।