Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
IPL 2020

দুই পায়েই চোট, ঋদ্ধিমানের এ বারের আইপিএল অভিযান সম্ভবত শেষ

চোট রয়েছে ঋদ্ধির দুই পায়েই। এখন বিশ্রাম নিতেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

সানরাইজার্সের ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে বড় অবদান ছিল ঋদ্ধির। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।

সানরাইজার্সের ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে বড় অবদান ছিল ঋদ্ধির। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।

সৌরাংশু দেবনাথ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ১৫:০৪
Share: Save:

বেহিসেবি ঝুঁকি নয়। বরং সঙ্গী হচ্ছে সাবধানতা। যার ফলে, রবিবার আবু ধাবিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তো বটেই, আজ জিতলে সম্ভবত ফাইনালেও স্টাম্পের পিছনে দেখা যাবে না ঋদ্ধিমান সাহাকে। সেখানে দেখা যাবে আর এক বঙ্গ কিপার শ্রীবৎস গোস্বামীকে।

দেশ না ফ্র্যাঞ্চাইজি, ঋদ্ধির কাছে প্রশ্নটা অনেকটা ছিল এমনই। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে নামতে পারেননি ময়দানের পাপালি। শনিবার এমআরআই স্ক্যান হয়েছিল তাঁর। তাতে দেখা গিয়েছে, চোট রয়েছে দুই পায়েই। যা পরিস্থিতি, তাতে এখন বিশ্রাম নিতেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

কারণ, জোর করে মাঠে নেমে পড়লে চোট আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। তখন প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ। আর সেটাই গভীর উদ্বেগে রাখছে তাঁকে। টেস্ট সিরিজ কোনও ভাবেই মিস করতে চাইছেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা এই উইকেটকিপার। আর সেই কারণেই দুঃসাহসিকতা দেখানোর পথে চলতে চাইছেন না তিনি।

আরও পড়ুন: নিজেকে প্রমাণ করতে করতেই কেরিয়ারের অর্ধেক শেষ ঋদ্ধিমানের

কমলা জার্সিতে জোর করে নেমে পড়লে তাতে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি, ঘনিষ্ঠ মহলে ঋদ্ধি বলেওছেন সে কথা। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ৫ দিনের ফরম্যাটে ফিরতে মরিয়া ঋদ্ধি তাই সতর্ক থাকতে চাইছেন। শিলিগুড়ি থেকে ঋদ্ধির ছোটবেলার কোচ জয়ন্ত ভৌমিক বললেন, “যা ধরা পড়েছে, তাতে খেললে চোট বেড়ে যাবে। সেই ঝুঁকি ও নিতে চাইছে না একেবারেই। এর আগেও তো অনেক বার চোটের জন্য দেশের হয়ে খেলতে পারেনি। সেটা আবার ঘটুক, ও চায় না। ও জানে, আইপিএল প্রতি বছরই হবে। কিন্তু চোটের জন্য দেশের হয়ে খেলা থেকে বঞ্চিত হওয়া অনেক বেশি কষ্টকর। আর আমি বিশ্বাস করি, দেশকে প্রাধান্য দিতেই হবে। শুধু আমি একা নই, আমার বিশ্বাস, এটা সকলেই মনে করে।”

প্রশ্ন হল, ঋদ্ধির মতো ফিট একজন ক্রিকেটারকে কেন বার বার চোটের কবলে পড়তে হচ্ছে? লিগে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে ৮৭ করার পরও তো উইকেটকিপিং করতে পারেননি। তার পর খেললেন ব্যাঙ্গালোর ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। এবং ফের লাগল চোট। খেলতে পারলেন না বিরাট কোহালির দলের বিরুদ্ধে এলিমিনেটরে।

ক্রিকেটমহল মনে করছে, ঋদ্ধির চোটের সঙ্গে ফিটনেসের আপাত কোনও সম্পর্ক নেই। খেলতে খেলতে অনেক সময়ই অজান্তে লেগে যায়। যা পরবর্তীকালে তৈরি করে সমস্যা। সানরাইজার্সেই যেমন ভুবনেশ্বর কুমার, মিচেল মার্শ, বিজয় শঙ্করের মতো ক্রিকেটাররা নাম লিখিয়েছেন আহতদের তালিকায়।

আরও পড়ুন: বিশ্বাস করি রাহুলের অনেক দিন টেস্ট খেলার ক্ষমতা রয়েছে, মত সৌরভের

ঠিক কী ভাবে চোট লেগেছিল ঋদ্ধির? ছোটবেলার কোচ বললেন, “ঠিক কোন সময়ে এই চোটটা লেগেছিল, বুঝতে পারেনি ঋদ্ধি নিজেই। কিপিংয়ের সময় ঘুরতে গিয়ে বা দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ঘোরার সময় মাসল পুল হয়ে গিয়েছিল হয়তো। কোনও ভাবে পেশীতে লেগে গিয়েছিল। লিগে দিল্লির বিরুদ্ধে যে দিন রান করল, সে দিনও কুঁচকিতে লেগেছিল। পেশী শক্ত হয়ে গিয়েছিল। কিপিং করেনি সেই ম্যাচে, বরফ দিচ্ছিল। আমাকে পরে বলেছিল, ঝুঁকি নিলাম না, জেতার মতো রান তো উঠেই গিয়েছিল। পরের ম্যাচে খেলতে সমস্যা হয়নি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে যখন পুরস্কার নিতে আসেনি, তখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম কী হল। ও বলল, হ্যাঁ, মাসলে ক্র্যাম্প মতো হয়েছে। অনেক ক্রিকেটারেরই চোট লাগে। তারা কেউ কম সচেতন বা কম ফিট, এমন নয়। এটা কখন হয়, কোন পেশীতে কখন চোট লাগে, কেউ বলতে পারে না। আগাম ধরতে পারে না। ঋদ্ধির মতো ফিট ক্রিকেটার কেন বার বার চোট পাবে, এর কোনও ব্যাখ্যা নেই আমার কাছে।”

দু’বছর আগের আইপিএলের প্রসঙ্গ উঠছে। সে বার ইডেনে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ওপেন করেছিলেন ঋদ্ধি। ৩৫ রান করেছিলেন। কিপিংও করেছিলেন। কিন্তু, ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি আঙুলের চোটের জন্য। হেরে গিয়েছিল সানরাইজার্স। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, অস্ত্রোপচারের জন্য ইংল্যান্ডে উড়ে যেতে হয়েছিল ঋদ্ধিকে। দীর্ঘ দিন থাকতে হয়েছিল জাতীয় দলের বাইরে। কোচের মতে, “ব্যাটিং করার সময় লেগেছিল। সেই নিয়ে কিপিংও করেছিল। পরে এক্স রে করে দেখা যায়, আঙুলে চিড় ধরেছে। ফাইনালে খেলতে পারেনি। অনেক দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থেকেছিল। আশা করা যায়, এ বার অতটা খারাপ কিছু ঘটবে না। দ্রুত ফিরতে পারবে মাঠে।”

তবু দুরু দুরু আশঙ্কা উঁকি দিচ্ছেই। ১৭ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে নামবে বিরাট বাহিনী। তার মধ্যে পুরো ফিট হয়ে উঠবেন তো ঋদ্ধি? বঙ্গ ক্রিকেটমহলে সবচেয়ে আলোচিত চর্চা এখন এটাই। ঋদ্ধির কোচ যদিও আশাবাদী। তবে রুক্ষ বাস্তব হল, যাঁর সৌজন্যে অবিশ্বাস্য ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সানরাইজার্স, সেই ঋদ্ধিই খেলতে পারলেন না প্লে-অফে। কার্যত তাঁর কাছে শেষই হয়ে গেল এ বারের আইপিএল। যতই ‘সুপারম্যান’ তকমা গায়ে সেঁটে যাক, চোটের বিরুদ্ধে সাহাও যে অসহায়!

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ২ টেস্টে নাও খেলতে পারেন বিরাট!​

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy