কোহালির হুঙ্কার।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ সুপার ওভারে জিতে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। থ্রিলারের ভঙ্গিতে এগিয়ে চলা ম্যাচ নাটকীয় ভাবে হয়েছিল টাই। শেষ পর্যন্ত যার ফয়সালা হল সুপার ওভারে। উত্তেজনার বারুদে ঠাসা এই ম্যাচে আসলে জিতল ক্রিকেট।
সোমবার টস জিতে বিরাট কোহালিদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২০ ওভারে ব্যাঙ্গালোর করেছিল ৩ উইকেটে ২০১। জবাবে ব্যাট করতে নেমে একসময়ে পর পর উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকেই যেতে বসেছিল মুম্বই। কিন্তু হাল ছাড়েননি ঈশান কিষাণ ও কেইরন পোলার্ড। ১১৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে পোলার্ড-ঈশান মুম্বই শিবিরে প্রাণ আনেন।
শেষ পাঁচ ওভারে জেতার জন্য মুম্বইয়ের দরকার ছিল ৯০ রান। অসম্ভব টার্গেটকে সম্ভব করার ব্রত নিয়েছিলেন ঈশান ও পোলার্ড। ১৭ তম ওভারে দীঘল চেহারার পোলার্ড নেন ২৭ রান। ভাগ্য ভাল বলতে হবে ক্যারিবি্য়ান ব্যাটসম্যানের। জাম্পার সেই ওভারে দু' বার তাঁর ক্যাচ ফেলেন ব্যাঙ্গালোরের ফিল্ডাররা। যুজবেন্দ্র চহালকে দিয়ে কোহালি ১৮ তম ওভার করালেও দমানো যায়নি পোলার্ডকে। চহালের সেই ওভারে ২২ রান নেন তিনি। ২০ বলে 'ক্যারিবিয়ান দৈত্য' পোলার্ড পৌঁছে যান ৫৩ রানে।
আরও পড়ুন: তিওয়ারির জায়গায় সুযোগ পেয়ে ‘সৌরভ’ ছড়ালেন ঈশান
প্রথম ১০ বলে ১১ রান করেছিলেন তিনি। তখন স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন ক্রিজে জমে যাওয়া ঈশান কিষাণকে। পরের ১০ বলে মুম্বই অলরাউন্ডার করেন ৪২ রান। কোহালির হাত থেকে ম্যাচের রাশ আলগা হতে শুরু করে। টেনশন কাজ করতে শুরু করেছিল ব্যাঙ্গালোর অধিনায়কের মধ্যে। তার আগে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে বোলারদের ব্যবহার করছিলেন। ওয়াশিংটন সুন্দর ছন্দে রয়েছেন দেখে তাঁকে দিয়ে চার ওভার করিয়ে নেন। সুন্দর তুলে নিয়েছিলেন বিপজ্জনক রোহিতকে। রানের গতিও কমিয়ে দিয়েছিলেন। নিয়মিত ব্যবধানে মুম্বইয়ের উইকেট তুলে একসময়ে রোহিত শর্মার দলের কাজটা কঠিন করে দিয়েছিলেন কোহালির বোলাররাই। কিন্তু শেষের দিকে বহুযুদ্ধের সৈনিক পোলার্ড ও তরুণ ঈশান কিষাণ পাল্টা মারের খেলা শুরু করেন। শেষ ২ ওভারে দরকার ৩১ রান। ১৯-তম ওভারে আসে ১২ রান। শেষ ওভারে ১৯ রান করতে পারলেই অবিশ্বাস্য ভাবে ম্যাচ জিতে নেবে মুম্বই।
কোহালি শেষ ওভার করার জন্য বল তুলে দেন উদানার হাতে। বৈচিত্র্য রয়েছে তাঁর বোলিংয়ে। শেষ ওভারের প্রথম দুটো বল থেকে মাত্র ২ রান নেন পোলার্ড ও ঈশান। ডাগ আউটে বসে থাকা রোহিত শর্মার চোখেমুখে তখন টেনশন। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ছক্কা মারলেন ঈশান। জেতার সমীকরণ আরও সহজ হয়ে গেল মুম্বইয়ের জন্য। ২ বলে দরকার মাত্র পাঁচ। ৯৯ রানে ব্যাট করছেন মুম্বইয়ের তরুণ ব্যাটসম্যান ঈশান। উদানার পঞ্চম বলে ম্যাচ শেষ করতে গিয়ে তিনি ধরা পড়লেন ডিপ মিড উইকেটে। রক্তের গতি বাড়িয়ে দেওয়া শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে পোলার্ড (২৪ বলে ৬০ রান) ম্যাচ নিয়ে যান সুপার ওভারে।
শেষ রক্ষা আর হয়নি সেখানে। সুপার ওভারে মুম্বইয়ের করা ৭ রান তুলে নেয় ব্যাঙ্গালোর। ডাগ আউটে হতাশ মুখে বসে থাকা ঈশান কিষাণ হয়ে গেলেন ট্র্যাজিক নায়ক। এ বারের আইপিএলে দ্বিতীয় ম্যাচের নিষ্পত্তি হল সুপার ওভারে। কোহালি-রোহিতের ধুন্ধুমার নিয়ে পারদ চড়ছিল দুবাইয়ে। কোহালি (৩) এ দিনও রান পাননি। জ্বলে উঠতে পারেননি 'হিটম্যান'ও (৮)। কিন্তু মুম্বই-ব্যাঙ্গালোর ম্যাচে মশলা কম ছিল না।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভাল করেন ব্যাঙ্গালোরের দুই ওপেনার-অ্যারন ফিঞ্চ ও দেবদত্ত পাদিকল। শুরু থেকেই মুম্বই বোলারদের আক্রমণের রাস্তা নেন ফিঞ্চ। ৩৫ বলে ৫২ করে আউট হন তিনি। সেট হয়ে যাওয়ার পরে বোল্টের বাইরের বলে মারতে গিয়ে পোলার্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এই অজি ওপেনার। দেবদত্ত পাদিকল ৪০ বলে ৫৪ রান করেন।
আরও পড়ুন: একটা বল মিস করার জন্য তেওয়াটিয়াকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন যুবরাজ
সবাই তাকিয়ে ছিলেন কোহালির চওড়া ব্যাটের দিকে। পিচেও ছিল না জুজু। রাহুল চহারের বলে ব্যাঙ্গালোর অধিনায়ক হতশ্রী শট খেলে রোহিতের হাতে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। কোহালি ফেরার পরে ব্যাঙ্গালোরের ইনিংসে গতি আনেন এবি ডিভিলিয়ার্স। মাত্র ২৪ বলে ৫৫ রান করেন তিনি। শিবম দুবে ১০ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলায় ব্যাঙ্গালোর ২০ ওভারে তোলে ৩ উইকেটে ২০১ রান। রোহিতরা ব্যাট করতে নামার পরে ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো একবার দুলল ব্যাঙ্গালোরের দিকে, আর একবার মুম্বই শিবিরে। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে শেষ হাসি হাসলেন কোহালি।
That winning feeling 😊😊👏#RCBvMI #Dream11IPL pic.twitter.com/Iqe0cngcEo
— IndianPremierLeague (@IPL) September 28, 2020
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy