প্রত্যয়ী: হার না মানা কুলদীপ। ফাইল চিত্র
ইডেনের বাইশ গজ থেকে স্পিনাররা এখন যে আর বিশেষ সাহায্য পাবেন না, তা ধরে নিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এখন তাই নিজের বোলিংয়েও পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করেছেন ভারতের এই চায়নাম্যান বোলার।
বছর চারেক আগেও ইডেনের পিচ থেকে ফায়দা তুলতেন স্পিনাররা। যে কারণে সুনীল নারাইন-কুলদীপ যাদব-পীযূষ চাওলার বোলিং আক্রমণ নাইটদের অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে ইডেনে।
এখন স্পিনারদের জন্য আর সে সুদিন নেই।
আরও পড়ুন: ইডেনে আজ সবুজ পিচ? দলে দুটি পরিবর্তন? দেখে নিন নাইটদের সম্ভাব্য একাদশ
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে নামার আগের দিন সকালে টিম হোটেলে বসে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম অস্ত্র কুলদীপ বলছিলেন, ‘‘আমি কেকেআরের হয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে খেলছি। তিন-চার বছর আগে ইডেনের পিচ থেকে স্পিনাররা যে রকম সাহায্য পেত, এখন আর তা পায় না। এখন ইডেনে স্পিনারদের পক্ষে বল করাটা কঠিন হয়ে গিয়েছে।’’
তিনি সাধারণত পিচ দেখেন না। দিল্লি ম্যাচের আগে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পিচ দেখার প্রশ্ন নেই। কিন্তু কুলদীপ শুনেছেন, পিচে ভালই ঘাস আছে। কিন্তু তাও চায়নাম্যান স্পিনার মনে করছেন, উইকেট থেকে ব্যাটসম্যানরাই সাহায্য পাবেন। কুলদীপের মন্তব্য, ‘‘আমার মনে হয়, ইডেনে আগের দুটো ম্যাচে উইকেট যে রকম ছিল, দিল্লি ম্যাচেও তাই থাকবে। ব্যাটসম্যানরা সাহায্য পাবে। স্পিনারদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে উইকেট নিতে।’’
প্রতিপক্ষ দিল্লি ক্যাপিটালসে কোনও ক্যারিবিয়ান পাওয়ার হিটার নেই ঠিকই, কিন্তু শিখর ধওয়ন-পৃথ্বী শ-ঋষভ পন্থের মতো আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার আছেন। যাঁদের শান্ত রাখা বোলারদের পক্ষে সহজ হয় না। বিশেষ করে ইডেনের পিচে। এই সব আগ্রাসী ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে বল করার জন্য নিজের বোলিংয়ে কিছু পরিবর্তন আনতে চান কুলদীপ। আগে তিনি বলতেন, উল্টো দিকে যতই আগ্রাসী ব্যাটসম্যান থাকুক না কেন, ফ্লাইট করাতে তিনি দ্বিধা বোধ করেন না। কিন্তু এখন বলছেন, প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান এবং পিচ দেখে তিনি ফ্লাইটের হেরফের করেন।
আগ্রাসী ব্যাটসম্যানদের জন্য আপনার কী পরিকল্পনা থাকে? কুলদীপের জবাব, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলিংয়ের ধরনটা একটু বদলাতে হয়। বিশেষ করে উইকেট থেকে যদি কোনও সাহায্য না পাওয়া যায়। আমি চেন্নাই ম্যাচে ফ্লাইট বেশি করাচ্ছিলাম। কারণ, উইকেটে বল ঘুরছিল। কিন্তু ইডেনে আমাকে লেংথ বদলাতে হবে। ফ্লাইট কম করাতে হবে। কারণ উইকেট থেকে বিশেষ সাহায্য পাবে না স্পিনাররা।’’
এ বারের আইপিএলে কুলদীপের ঝুলিতে উইকেট সংখ্যা খুবই কম। ছয় ম্যাচে তিন উইকেট। তবে এই ভারতীয় স্পিনার মনে করছেন, তিনি খারাপ বল করছেন না। ‘‘আমি উইকেট না পেলেও রান বেশি দিচ্ছি না। একটা ম্যাচে বোধ হয় চল্লিশের ওপর রান দিয়েছি। বাকিগুলোয় ইকনমি রেট ঠিকই আছে। উইকেট পাচ্ছি না, কারণ আমার মনে হয়, ব্যাটসম্যানরা আমার বোলিংয়ের বিরুদ্ধে বেশি ঝুঁকি নিচ্ছে না।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আগেই বলেছি, ইডেনের পিচে স্পিনাররা সে রকম সাহায্য পাচ্ছে না। এখানে তো আরও দল খেলতে আসবে। দেখব, কোন স্পিনার ক’টা উইকেট নিয়ে যায়।’’ একই সঙ্গে কুলদীপের মন্তব্য, ‘‘আমি তো জাদুকর নই যে প্রতি ম্যাচে সফল হব।’’
আন্দ্রে রাসেলের মতো পাওয়ার হিটারকে ম্যাচে বল করতে হয় না তাঁকে। কুলদীপ অবশ্য মনে করেন, বল ঘুরলে সাবধানী থাকেন রাসেল। কুলদীপের মতে, ‘‘স্পিনারদের বিরুদ্ধে রাসেল কিন্তু অত ঝুঁকি নেয় না। সতর্ক থাকে।’’ তাঁর সঙ্গে রাসেলের দ্বৈরথ হতে পারে আসন্ন বিশ্বকাপে। আইপিএল খেলে খেলে কি রাসেল আপনাদের রহস্য বুঝে যাবে না? কুলদীপ জানাচ্ছেন, তিনি রাসেলকে নেটে আদৌ বেশি বল করেন না। ‘‘নেটে বেশি বল করা আমি পছন্দ করি না। রাসেলকেও সে জন্য নেটে খুব একটা বল করি না। আমারও কিছু লুকোনো তাস আছে, যা সবাই বুঝে যাক, সেটা চাই না।’’ কুলদীপ এও বলে দিচ্ছেন, বিশ্বকাপে রাসেলের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তিনি তৈরি আছেন। ‘‘রাসেল উল্টো দিকে থাকলে কী রকম বল করব, সে ব্যাপারে আমার পরিষ্কার ধারণা আছে,’’ বলছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার।
বিশ্বকাপে যাঁর অধিনায়কত্বে তিনি খেলবেন, সেই বিরাট কোহালির সময়টা আইপিএলে ভাল যাচ্ছে না। ছ’টা ম্যাচ হেরে তাঁর দল লিগ তালিকায় সবার শেষে। কোহালির কি এতে সমস্যা হবে বিশ্বকাপে? কুলদীপের জবাব, ‘‘কোহালির রেকর্ড একবার দেখুন। ভারতের হয়ে এত রান করেছে। দেশের হয়ে নামলে ওর সফল হওয়ার খিদেটা বেড়ে যায়। আর আইপিএলেও কোহালি ব্যক্তিগত ভাবে সফল। দল জিততে পারছে না, সেটা অন্য ব্যাপার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy