প্রস্তুতি: ইডেনে পিচে এখনও পর্যন্ত এ রকমই সবুজ ভাব। ফাইল চিত্র
কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচের আগে আলোচনায় ইডেনের বাইশ গজ। শুক্রবার যে পিচে খেলা হতে চলেছে তা বুধবার সন্ধে পর্যন্ত বেশ সবুজ। চলতি মরসুমে আইপিএলের একটি ম্যাচও সেই পিচে খেলা হয়নি।
আইপিএলের সামান্য খোঁজখবর রাখা যে কেউ বলে দিতে পারবেন, সবুজ পিচে কাদের বেশি সুবিধা হতে পারে। দিল্লির পেস আক্রমণ এ বারের আইপিএলের দলগুলির মধ্যে অন্যতম সেরা। তাদের দলে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাডা, যাঁকে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পেসার মনে করা হয়। এ ছাড়াও আছেন নিউজ়িল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিস মরিস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিমো পল। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে আছেন ইশান্ত শর্মা, আবেশ খান, হর্ষল পটেল।
সেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং আক্রমণ মূলত স্পিন-নির্ভর। একমাত্র সফল পেসার বলতে ভারতের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। সবুজ পিচ থাকলে খুব বেশি হলে তারা খেলাতে পারে লকি ফার্গুসনকে। তা-ও তিনি মোটেই রাবাডা গোত্রের নন। নাইটদের বোলিংয়ে প্রধান মুখ তাদের তিন স্পিনার— কুলদীপ যাদব, সুনীল নারাইন এবং পীযূষ চাওলা। আইপিএল টেবলে কেকেআর ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। আর দিল্লি ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে।
প্রশ্ন উঠছে, একেবারে নতুন পিচে দিল্লিকে স্বাগত জানাতে চলেছে কেকেআর? নাকি কেকেআরকে স্বাগত জানাতে চলেছে দিল্লি? এই বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে কারণ সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এখন দিল্লি ক্যাপিটালসের উপদেষ্টা। পিচ তদারকির দায়িত্বে দেখা যাচ্ছে সিএবি কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়কে। বোর্ডের পিচ কমিটির কাউকে বুধবার পর্যন্ত দেখা যায়নি। খোঁজ করতে গেলে শোনা যায়, ‘‘ওরা কেউ তো আসছে না। দরকারই বা কী?’’
যদিও ইডেন হল শাহরুখ খানের কেকেআরের ‘হোম’, অর্থাৎ ঘরের মাঠ। সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে, মাঠ এখন কেকেআরের অধীনে এবং তাদের ইচ্ছাই গুরুত্ব পাবে, সৌরভের নয়। তবে এ নিয়ে বোর্ডের অম্বাডসমানের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সিএবি প্রেসিডেন্ট হওয়ায় কেকেআর বনাম দিল্লি ম্যাচে সৌরভ স্বার্থ সংঘাতে জড়াচ্ছেন কি না। সৌরভ তাঁর জবাব দিয়েছেন আম্বাডসমানের কাছে এবং তাতে দাবি করেছেন, কোনও স্বার্থ সংঘাত নেই কারণ তিনি বোর্ডের আইপিএল সংক্রান্ত পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অম্বাডসমান এখনও তাঁর রায় ঘোষণা করেননি তবে একাংশের অনুমান, দিল্লির ডাগআউটে বসতে সম্ভবত বাধা থাকবে না সৌরভের।
যদিও কারও কারও মনে হচ্ছে, প্রশ্ন যখন উঠেইছে, সৌরভ অন্তত এই ম্যাচটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতেই পারতেন। অতীতে স্বার্থ সংঘাত নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট উত্তাল হয়েছে। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় এন শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সব চেয়ে গুরুতর আকার ধারণ করেছিল। শ্রীনি তখন কোনও শিষ্টাচারের ধার ধারেননি। একই অভিযোগ উঠেছিল রজার বিনির বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠেছিল, ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি যখন ভারতীয় দলে ডাক পাচ্ছেন, কী করে নির্বাচক থাকেন রজার? পরে তিনি অবশ্য নির্বাচনী বৈঠকে ছেলের নাম নিয়ে আলোচনার সময়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যেতেন। সৌরভের ক্ষেত্রে স্বার্থ সংঘাতের অভিযোগ ঠিক কি না, তা অবশ্য অম্বাডসমানের হাতে। জানা গিয়েছে, বোর্ডের নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নাকি এ ভাবে কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া আটকানো যায় না।
সৌরভ যে নিজেকে দূরে রাখার কথা ভাবছেন না, তা অবশ্য স্পষ্ট। ইডেনে এসে তিনি নিজে পিচ দেখে গিয়েছেন। সিএবি সূত্রে দাবি, পিচ নিয়ে কোনও নির্দেশ দেননি সৌরভ। তবে যে পিচে খেলা হবে বলে শোনা গিয়েছে, সেখানে গত বছর নভেম্বরে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছিল। দু’দলের ১৩টি উইকেটের মধ্যে পেসাররাই পেয়েছিলেন সাতটি। সৌরভ আশাবাদী, ইডেনেও ভাল বল করবে রাবাডা। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘রাবাডা এমনিতেই ভাল বোলার। মুম্বইয়ের পিচেও ভাল বল করেছে। এখানেও হয়তো ভালই করবে।’’ কেকেআর-কে আলাদা করে বড় দল হিসেবে দেখতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘রাসেলের শক্তি নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চার পাঁচজন মানুষের যা শক্তি, ওর একার তাই শক্তি। কিন্তু আইপিএলে এখন সব দলই সমান-সমান। শুধু চেন্নাই অন্যদের চেয়ে একটু এগিয়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy