গর্বিত: (বাঁ দিকে) জ্যাভলিন ফাইনালে আবারও সেরা সুমিত। ব্যাডমিন্টন ফাইনালে দুরন্ত নীতেশ কুমার। সোমবার প্যারিসে। ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।
সোমবার প্যারিস প্যারালিম্পিক্সে আবারও ঝলমল করে উঠল ভারতের তেরঙ্গা। ছেলেদের ব্যাডমিন্টনে দেশকে সোনা উপহার দিলেন নীতেশ কুমার। পিছিয়ে থাকলেন না যোগেশ কাঠুনিয়া। টোকিয়োর পরে আবারও প্যারিসে ডিসকাসে রুপো জিতেছেন তিনি।
ছেলেদের এসএল ৩ বিভাগের ব্যাডমিন্টন ফাইনালে নীতেশ হারান গ্রেট ব্রিটেনের ড্যানিয়েল বেথহেল-কে। ম্যাচের ফল নীতেশের পক্ষে ২১-১৪, ১৮-২১, ২৩-২১। ডিসকাসে ২৯ বছরের যোগেশ ছোড়েন ৪২.২২ মিটার। এই বিভাগে সোনা জিতেছেন ব্রাজিলের ক্লদিনে বাতিস্তা ডস স্যান্টোস। তিনি ডিসকাস ছোড়েন ৪৬.৮৬ মিটার।
মান্ডি আইআইটি-র স্নাতক নীতেশের ছোটবেলায় প্রথম পছন্দ ছিল ফুটবল। কিন্তু ১৫ বছর বয়সে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় বাঁ পা বাদ জিতে হয়। কিন্তু ওই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাও তাঁর মনের জোর কমাতে পারেনি। নতুন ভাবে শুরু হয় লড়াই। তার পর থেকে নকল পা লাগিয়ে হাঁটেন। সেই সময়ই বেছে নিয়েছিলেন ব্যাডমিন্টনকে। সোমবার রুদ্ধশ্বাস জিতে জীবনের প্রথম সোনা হাতে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তিন গেমেই বেশ চাপের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। একটা সময় ড্যানিয়েল অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছিল।’’
বাবা নৌবাহিনীর অফিসার। স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। কিন্তু জীবনের গতি বদলে যাওয়ার পরে নীতেশ মানসিক শক্তি ও ধৈর্য বাড়ানোর উপরে জোর দেন। সেই ধারাবাহিক চর্চাই তাঁকে এনে দিল প্যারালিম্পিক্সে প্রথম সোনা।
রবিবারই তিনি জানিয়েছিলেন সোনা জিতবেনই। সোমবার ছেলেদর ব্যাডমিন্টনে সিঙ্গলসে এসএল ৩ বিভাগে সেই কাজটিই করে দেখালেন নীতেশ কুমার। শীর্ষ বাছাই নীতেশের হাত ধরে ভারতের ঝুলিতে এল দু’টি সোনা। তিনি বলেছেন, ‘‘অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি জোর দিতাম ধৈর্য বাড়ানোর উপরে। ফাইনালেও সেটা কাজে দিয়েছে। কোনওরকম পরীক্ষায় না গিয়ে আমি প্রতিপক্ষের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছি। তা ছাড়া ফাইনালে খুব বেশি ঝুঁকিও নিতে চাইনি।’’
নীতেশ আরও বলেছেন, ‘‘দ্বিতীয় গেমে একটু ক্লান্তি অনুভব করছিলাম। ফলে বেশ কয়েকটা বাজে ভুল করে হেরে যাই। তৃতীয় গেমে ঠিক করে নিয়েছিলাম, পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমাকে সোনা জিততেই হবে। এত দিন ধরে যে সোনার স্বপ্ন দেখে নিজেকে তৈরি করেছিলাম, তা হাতছাড়া করতে রাজি ছিলাম না। আমি সেই লক্ষ্যে সফল।’’
ডিসকাসে রুপো জয়ী যোগেশও উঠে এসেছেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে। মাত্র ন’বছর বয়সে আক্রান্ত হন স্নায়ুর রোগে। চিকিৎসকেরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে উঠে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। কিন্তু লড়াইয়ে হার মানতে রাজি ছিলেন না মা মীরা দেবী। তিনিই কখনও চণ্ডীগড়, কখনও আবার দিল্লিতে ছেলেকে নিয়ে এসে করাতে থাকেন ফিজ়িয়োথেরাপি।
প্যারালিম্পিক্সে টানা দ্বিতীয় বার রুপো জিতে যোগেশ বলেছেন, ‘‘মা সেই সময় মনের জোর নিয়ে আমাকে এ ভাবে গড়ে না তুললে এই মুহূর্তটা আসতই না। তবে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে সোনা জিততে পারলাম না বলে। এই জায়গা থেকে আমাকে বেরিয়ে আসতেই হবে।’’ যোগ করেন, ‘‘প্যারালিম্পিক্স, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, সব জায়গায় রুপোই জিতেছি। এ বার পদকের রংটা বদলাতেই হবে। তার জন্য চাই আরও নিবিড় অনুশীলন। এই জয় থেকেও শিক্ষা নিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy