২২৭ রানের লজ্জাজনক হার। মাথা হেঁট করে মাঠ ছাড়ছেন অধিনায়ক বিরাট কোহালি। ছবি - এএফফি
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভাঙাচোরা দল নিয়েও টেস্ট সিরিজ জিতেছিল অজিঙ্ক রাহানের ভারত। তবে দেশে ফিরতেই বিরাট কোহালির নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একেবারে ল্যাজেগোবরে হয়ে যাওয়া। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে ২২৭ রানের লজ্জাজনক হার। অনেকের কাছে এই হার অবিশ্বাস্য হলেও জাতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনার অশোক মলহোত্র কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার এই হারে মোটেও অবাক নন। বরং আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে জো রুটদের কাছে হারের পাঁচটা কারণ তুলে ধরলেন।
টসে জিতে বড় রান: দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ১৭৮ রানে গুটিয়ে যেতে সবাই লাফালাফি করতে শুরু করলেও আমি কিন্তু জো রুটদের পক্ষেই ছিলাম। টসে জিতে প্রথম ইনিংসে ওদের তোলা ৫৭৮ রানই ম্যাচের তফাত গড়ে দেয়। একাধিক ক্রিকেট বোদ্ধা ভারতের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনাপের জন্য স্বপ্ন দেখলেও মনে রাখবেন চেন্নাইয়ের এই লাল মাটির পিচে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা খুবই কঠিন। তাই এই ফলাফলে মোটেও অবাক নই।
জো রুটকে নিয়ে পরিকল্পনার অভাব: অনেকের হয়তো খারাপ লাগতে পারে, তবে আমার ধারণা ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট সিরিজ জয় নিয়ে একটু বেশিই মজে ছিল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জো রুট একাই দুটো টেস্ট জিতিয়ে এখানে এসেছে। দ্বিতীয় টেস্টে ১৮৬ তে রান আউট না হলে রুট দ্বিশতরানের হ্যাটট্রিক করতে পারত। তাই সবার আগে ওর ব্যাটিং ভিডিয়ো দেখে শক্তি ও ত্রুটিগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত ছিল। আমার ধারণা সেটা হয়নি। তাই তো ২১৮ রানের ইনিংসে একাধিক প্রথাগত সুইপ ও স্লগ সুইপ করে গেল। ওকে আটকানোর জন্য কোহালিদের কোনও পরিকল্পনা ছিল বলে মনে হয় না।
কুলদীপ যাদবকে অহেতুক বাইরে রাখা: চোটের জন্য রবীন্দ্র জাডেজার না থাকা বড় ধাক্কা হলেও কোহালির কাছে কিন্তু বিকল্প ছিল। শাহবাজ নদিম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যতই উইকেট নিয়ে থাকুক, চিপকের এই উইকেটে কুলদীপই হতে পারত অশ্বিনের সেরা পার্টনার। কিন্তু গত দুই বছর ওকে দল বয়ে বেড়ালেও খেলাচ্ছে না। অদ্ভুত ব্যাপার! কুলদীপ থাকলে অশ্বিন আরও আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে বোলিং করতে পারত। নদিম ও সুন্দরের কাছ থেকে অশ্বিন তেমন সাহায্য পায়নি।
ব্যর্থ ওপেনিং জুটি: ভারতীয় ব্যাটিং নিয়ে অনেকে কটু কথা বললেও মনে রাখবেন এরাই আমাদের গর্বিত করেছে। তবে একইসঙ্গে ওপেনিং জুটিকে আরও দ্বায়িত্বশীল হতে হবে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে রোহিত দারুণ সফল হলেও টেস্টে এখনও ধারাবাহিক হতে পারল না। নতুন বল সুইং করলে ওর সমস্যা প্রকট হয়ে যাচ্ছে। চেন্নাইয়ের দুই ইনিংসে সেটাই দেখলাম। অন্যদিকে শুভমন ভাল শুরু করেও ক্ষণিকের ভুলে উইকেট ছুড়ে আসছে। বড় মঞ্চে এই ভুলগুলো কিন্তু কাম্য নয়। দুই ইনিংসে ওপেনারদের ব্যর্থতা কিন্তু হারের অন্যতম কারণ।
বিরাট বোধহয় চাপে: অজিঙ্ক রাহানে অস্ট্রেলিয়ায় দলকে জিতিয়েছে বলে বিরাট চাপে পড়ে গিয়েছে, সেটা আমি মনে করি না। অধিনায়ক বিরাটের প্রতি দল ও বোর্ডের যথেষ্ট ভরসা আছে। তাই ভবিষ্যতে বিরাটের হাতেই ব্যাটন থাকবে। তবে আমার ধারণা ও কয়েক সপ্তাহ খেলার মধ্যে না থাকার জন্য বাড়তি চাপ নিয়ে ফেলেছে। দেশের মাটিতে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চাপ কিন্তু কম নয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী ও ক্রিকেট দলের অধিনায়কের চাপ সবচেয়ে বেশি। এটা তো সবার জানা। এর পাশাপাশি ওর প্রতিদ্বন্দ্বী জো রুট আবার বড় রান করে দিল। এতেও কিন্তু বিরাট চাপে থাকতে পারে। সচিন ও ব্রায়ান লারা-র মধ্যে রেষারেষি নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। কেউ এই বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও দুজনেই কিন্তু দুজনকে ব্যাটে জবাব দিতেন। কোহালি ও রুটের ক্ষেত্রেও কিন্তু লড়াইটা তেমনই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy