উল্লাস: চতুর্থ ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরির পরে শিখর ধবন। তাঁর এবং অধিনায়ক কোহািলর ইনিংস টানল ভারতকে। ম্যাচ অবশ্য জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। শনিবার জোহানেসবার্গে। ছবি: এপি।
গুরুত্বপূর্ণ সময় নো বল করার রোগ কবে সারবে ভারতের? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করা যশপ্রীত বুমরা-র নো বল এখনও অনেকে ভোলেননি। সেই নো বলের অভিশাপ আবার ফিরে এল জোহানেসবার্গে।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ২৮ ওভারে ২০২ করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার, এই অবস্থায় ভারত প্রায় ম্যাচ ধরে নিয়েছিল। এ বি ডিভিলিয়ার্স সবে আউট হয়েছে। স্কোর চার উইকেট হারিয়ে একশোর সামান্য বেশি। আস্কিং রেট নয়ের কাছাকাছি। ওই অবস্থায় ডেভিড মিলারের স্টাম্প ছিটকে দিল যুজবেন্দ্র চহাল। কিন্তু দেখা গেল, নো বল হয়েছে। জীবন পেয়ে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় চলে গেল মিলার (২৮ বলে ৩৯)। সঙ্গে পেয়ে গেল হেনরিখ ক্লাসেন-কে (২৭ বলে ৪৩ ন.আ.)। শেষ দিকে এসে কাজটা করে গেল ফেলুকওয়েও (৫ বলে ২৩)। মিলার-কে যদি আগে তুলে নেওয়া যেত, সিরিজ হয়তো ভারত এখানেই জিতে নিত। তার বদলে সিরিজের ফল দাঁড়াল ৩-১।
যে ভারতীয় রিস্টস্পিনাররা দক্ষিণ আফ্রিকার আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চহাল মিলে এ দিন ১১.৩ ওভারে ১১৯ রান দিল। পেল তিন উইকেট। বৃষ্টির পরে বল ভিজে যাচ্ছিল। স্পিনাররা সে রকম টার্ন করাতে পারেনি। এ সব সত্ত্বেও বলব, ওই নো বলটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াল।
দিনের শুরুতে শিখর ধবনের ব্যাটিং দেখতে দেখতে একটা কথা মনে হচ্ছিল। যে ‘ভাইরাল ইনফেকশন’-এর ফল সব সময় খারাপ হয় না! এখানে ‘সংক্রমণের’ ঘটনাটা ঘটেছে ধবনের ক্ষেত্রে। বিরাট কোহালির সঙ্গে ব্যাট করতে করতে ধবন শিখে গিয়েছে ৬০-৭০ রান একবার করে ফেললে কী ভাবে সেটা সেঞ্চুরিতে বদলাতে হয়। ধবন কিন্তু খুব ভাল সিঙ্গলসও নিচ্ছে। এর আগে এক বার কোহালির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জেরে রান আউট হয়েছিল ধবন। কিন্তু জোহানেসবার্গে দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব ভাল ছিল।
কোহালির কথাও একটু বলতে চাই। কোহালি এ দিন নেমেই কাগিসো রাবাডার বলে যে ফ্লিকটা মারল, তাতে মনে হল, ও ক্রিকেট নয় টেবল টেনিস খেলছে। এতটাই আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠছে খেলার মধ্যে। সাধারণত ৫০-৬০ রান করার পরে সেঞ্চুরি না করে মাঠ ছাড়ে না কোহালি। এ দিন অবশ্য ৮৩ বলে ৭৫ করে আউট হয়ে গেল।
এ বার ধবনের কথায় আসি। নিজের একশোতম ম্যাচে সেঞ্চুরি করাটা সব সময় আলাদা তৃপ্তির। ১০৫ বলে ১০৯ করল ধবন। যার মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি রান দৌড়ে নিল। সেটা আমি বলব, কোহালির প্রভাব। অধিনায়কের সংস্পর্শে এসে ধবনের ব্যাটিং আরও ধারালো হয়েছে। পাশাপাশি এমন কয়েকটা শট ও খেলল, ভোলা যাবে না। দু’টো শটের কথা বলতে চাই। প্রথম শটটা ফেলুকওয়েও-কে স্টেপ আউট করে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছয়। অন্যটা কাগিসো রাবাডকে। রাবাডার বলটা লেগস্টাম্পের ওপর ছিল। ধবন ফ্লিক করে সেটাকে স্কোয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছয় মেরে দিল।
আরও দু’জনের কথা বলতে চাই। শুরুতে রোহিত শর্মা। শেষে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এই সিরিজে একেবারেই খেলতে পারছে না রোহিত। এ দিন আবার রাবাডার একটা দুর্দান্ত কট অ্যান্ড বোল্ডের শিকার হয়ে ফিরল। শেষে কিন্তু দলকে অনেকটাই টানল ধোনি। পর পর কয়েকটা উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে। বার দু’য়েক হেলিকপ্টার শট মারারও চেষ্টা করল। শেষ পর্যন্ত ধোনির ৪৩ বলে অপরাজিত ৪২ ভারতকে ৫০ ওভারে ২৮৯-৭ স্কোরে পৌঁছে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy