দুই-মেরু: সেঞ্চুরির পরে রাহুল। উইকেটহীন বুমরা। এপি, এএফপি
শেষ ওয়ান ডে-তেও জয় অধরা থাকল ভারতের। কিন্তু কেন নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-৩ হারতে হল বিরাট কোহালির দলকে? কারণগুলোর উপরে একবার নজর দেওয়া যাক।
রোহিতের অনুপস্থিতি: এই ওয়ান ডে সিরিজে একেবারে নতুন ওপেনিং জুটি ভারতের। কারণ প্রথমে শিখর ধওয়ন এবং পরে রোহিত শর্মার চোট। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিত অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। যে কোনও বোলিং আক্রমণকে চূর্ণ করতে পারে। ওর অনুপস্থিতি ঢাকা গেল না। মায়াঙ্ক আগরওয়াল-পৃথ্বী শ কোনও ম্যাচেই প্রভাব ফেলতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে জুটিতে ৫০ উঠেছিল, পরের দুটো ম্যাচে ২১ এবং ৮। পৃথ্বী এ দিন জমে গিয়েও উইকেট ছুড়ে দিয়ে এল। দ্বিতীয় রানের জন্য পৃথ্বীই ডাক দিয়েছিল, যা হয় না। আর মায়াঙ্ক তো শুরুতেই আউট হয়ে যাচ্ছে। তাই কে এল রাহুলের (১১২) সেঞ্চুরি আর শ্রেয়স আইয়ারের (৬২) লড়াই সত্ত্বেও ভারত আটকে গেল ২৯৬ রানে। নিউজ়িল্যান্ডের মতো ছোট মাঠে যা যথেষ্ট নয়। ১৭ বল বাকি থাকতে, পাঁচ উইকেটে তৃতীয় ম্যাচও জিতে নিল কেন উইলিয়ামসনরা।
বিরাটের রান না পাওয়া: তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে ভারত অধিনায়কের মোট রান ৭৫, গড় ২৫। কোহালির রান না-পাওয়া কিন্তু ভারতের কাছে বড় ধাক্কা হয়ে গেল। এ দিন প্রথম ১৫ ওভারে নিউজ়িল্যান্ড বোলারদের বল যথেষ্ট সুইং করেছে। ওরা বিরাটের অফস্টাম্পের ঠিক বাইরে আক্রমণ করে যায়। আটকে যাওয়া বিরাট যে শট খেলে আউট হল, সেটা ও খুবই কম মারে। অফস্টাম্পের বাইরের সামান্য শর্ট বল ‘স্ল্যাশ’ করতে গিয়ে থার্ডম্যান ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসল।
নিষ্প্রাণ বুমরা: গত কয়েক বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে সেরা বোলারের নাম যশপ্রীত বুমরা। মাঝের ওভার বা শেষের দিকে চাপে পড়লেই বিরাট ওর সেরা পেস অস্ত্রের হাতে বল তুলে দিয়েছে, আর বুমরা কাজের কাজটা করেছে। কিন্তু এ বার তা হয়নি। গোটা ওয়ান ডে সিরিজে বুমরা ৩০ ওভার বল করে ১৬৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থেকে গেল! বুমরাকে দেখে মনে হচ্ছিল, আত্মবিশ্বাসের একটু অভাব হচ্ছে। ছন্দেও নেই। ভয়ঙ্কর সেই সব ইয়র্কার আর মন্থর বলগুলো দেখলাম না। এই ভারতীয় দলে সেরা দুই ম্যাচ উইনার হল বিরাট এবং বুমরা। এই সিরিজে সেই দু’জনই ব্যর্থ। বাকিরা সেই অভাবটা ঢাকতে পারল না।
সাহায্য পেল না চহাল: একটা ম্যাচে তিন জন বোলার একসঙ্গে ব্যর্থ হলে, ফিরে আসা খুবই কঠিন। বিশেষ করে যেখানে ষষ্ঠ কোনও বোলার হাতে নেই। ভারতের তিন পেসার— বুমরা, শার্দূল ঠাকুর এবং নবদীপ সাইনিকে খুবই সাদামাঠা দেখিয়েছে শেষ ম্যাচেও। শার্দূলকে কেন খেলানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নের জবাব নেই। এ দিনও ৯.১ ওভারে দিল ৮৭ রান। এক দিকে যুজবেন্দ্র চহাল যখন চাপ তৈরি করছিল, তখন উল্টো দিক থেকে সেই চাপ আলগা করে দিল শার্দূল-সাইনি। দু’জনেই দেখলাম আলগা বল ফেলেছে। শর্ট করেছে, ব্যাটসম্যানদের জায়গা দিয়েছে মারার জন্য। শুরু থেকেই মার্টিন গাপ্টিল যে সুযোগ কাজে লাগাল। পরে হেনরি নিকোলস এবং কলিন ডে গ্র্যান্ডহোম। বিরাটের হাতে ষষ্ঠ বোলার না থাকায় ওর করার কিছু ছিল না। চহাল ভাল বল করেছে। যে বলটায় গাপ্টিল বোল্ড হল, সেটা শেন ওয়ার্নের ‘শতাব্দীর সেরা বল’-এর স্মৃতি ফিরিয়ে আনল। লেগস্টাম্পে পড়ে বলটা গাপ্টিলের রক্ষণাত্মক ব্যাট এড়িয়ে অফস্টাম্প ভেঙে দেয়। কিন্তু লেগস্পিনার চহালের সঙ্গে আর কেউ ছিল না যে উইকেট তুলতে পারে। কুলদীপ যাদব বাইরে। কারণ জাডেজাকে বসানোর প্রশ্ন নেই। ছোট মাঠে তিন স্পিনারের ঝুঁকিও নিল না ভারত।
তবে এর মধ্যেও প্রাপ্তি একেবারে শূন্য নয়। শ্রেয়স আইয়ার বুঝিয়ে দিয়েছে চার নম্বর জায়গাটা ওর। যে চার নম্বর জায়গাটা গত বছর বিশ্বকাপের আগে জাতীয় খবর হয়ে গিয়েছিল। যে জায়গার জন্য বিজয় শঙ্করের মতো ক্রিকেটার কোথা থেকে এসে কোথায় হারিয়ে গেল। কে এল রাহুলও ওর পাঁচ নম্বর জায়গায় মানিয়ে গিয়েছে। রাহুলকে আমি ৩৬০ ডিগ্রি ক্রিকেটার বলব। উইকেটের চারদিকে শট খেলতে পারে। সব রকম শট হাতে আছে। এ দিন সেঞ্চুরি করার পথে একটা লেগ গ্লান্স মারল, যা ভোলার নয়। আপাতত তাই চার-পাঁচ নিয়ে ভাবতে হবে না ভারতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy