ধাক্কা: জার্মানির দ্বিতীয় গোল। এ ভাবেই তাদের আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়ে ভারতের রক্ষণ। ছবি পিটিআই।
জুনিয়র বিশ্বকাপ হকি
ভারত ২ জার্মানি ৪
পাঁচ বছর আগে লখনউয়ে বেলজিয়ামকে ফাইনালে হারিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পরে জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। কিন্তু পাঁচ বছর পরে সেই দেশের মাটিতেই জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেই শেষ হয়ে গেল ভারতের খেতাব জয়ের স্বপ্ন।
শুক্রবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ভারতীয় দল জার্মানির কাছে হারল ২-৪। জার্মানির হয়ে গোল করেন এরিক ক্লেনলেন, ফিলিপ হোলজমুলার, অধিনায়ক হান্স মুলার ও ক্রিস্টোফার কুটার। ভারতের হয়ে ব্যবধান কমান উত্তম সিংহ ও ববি সিংহ ধামি। এ বার প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদকের জন্য ভারতীয় দলকে লড়তে হবে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে। যারা প্রথম ম্যাচেই হারিয়েছিল ভারতীয়দের। অন্য সেমিফাইনালে ফরাসিদের হারায় আর্জেন্টিনা। রবিবার ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে খেলবে আর্জেন্টিনা। তার আগে তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে খেলবে ভারত।
এই প্রতিযোগিতায় ছ’বারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিরুদ্ধে এ দিন প্রথম কোয়ার্টার থেকেই আক্রমণের তীব্রতায় পিছিয়ে ছিল ভারত। জার্মান মাঝমাঠ ও রক্ষণ ভারতের প্রতি-আক্রমণ রুখে দেওয়ার পাশাপাশি ‘ডি’ বক্সের আগে প্রাচীর তুলে দিয়েছিল প্রায়। যে কারণে, প্রথম থেকেই জার্মানরা ভারতীয় রক্ষণে প্রাধান্য বিস্তার করলেও সেই দাপট দেখাতে পারেননি সঞ্জয় কুমারেরা। এ ছাড়াও কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে যে পোক্ত রক্ষণ ছিল ভারতের, এ দিন তা সামলাতে পারেনি জার্মানদের একের পর এক আক্রমণ। পাশাপাশি, দুই প্রান্ত দিয়ে ভারতের আক্রমণকে বাড়তে দেয়নি জার্মানি। ফলে মাঝমাঠে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলছিল ভারতের আক্রমণ।
ম্যাচে প্রথম কোয়ার্টারের চার মিনিটের মধ্যেই ভারতের গোলের মুখ খুলে ফেলেছিল জার্মানি। কিন্তু তাড়াহুড়ো করায় সেই গোলের সুযোগ নষ্ট করে তারা। এর পরের মিনিটেই প্রথম পেনাল্টি কর্নার পায় তারা। কিন্তু ভারতের গোলকিপার প্রশান্ত চৌহান ঝাঁপিয়ে সে যাত্রায় ব্যর্থ করেন জার্মানির গোলের প্রচেষ্টা। এই অর্ধের একদম শেষ মিনিটে ফের পেনাল্টি কর্নার পেয়েছিল জার্মানি। সেখান থেকেই জার্মানিকে এগিয়ে দেন এরিক। এই গোলের পরেই পেনাল্টি কর্নার পেয়েছিল ভারতও। কিন্তু সেই বল বাইরে মারেন পেনাল্টি কর্নার বিশেষজ্ঞ সঞ্জয়। প্রথম কোয়র্টারে জার্মানি এগিয়ে ছিল ১-০।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারেও ভারতীয় মাঝমাঠ জার্মানির বার বার আক্রমণে আসা কমাতে পারেনি। উল্টে জার্মানি প্রতিটি বল তাড়া করে ভারতীয় রক্ষণকে চাপে ফেলে ভুল পাস করাতে বাধ্য করছিল। ২১ মিনিটে হোলজমুলার ফের ব্যবধান বাড়ান জার্মানির হয়ে। ২৩ মিনিটে ফের গোলের সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। কিন্তু ভারতীয় গোলকিপারের তৎপরতায় গোল হয়নি। ২৪ মিনিটে রিভার্স হিটে জার্মানির হয়ে ৩-০ করে যান তাদের অধিনায়ক মুলার। এই গোলের পরে তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করেছিল ভারত। ২৫ মিনিটে উত্তম সিংহ ডান দিক থেকে আসা বলে স্টিক ছুঁয়ে ১-৩ করেন ভারতের হয়ে। কিন্তু তার পরেই জার্মানি প্রথমে পেনাল্টি কর্নার ও পেনাল্টি স্ট্রোক পায়। সেখান থেকে ৪-১ করে যান জার্মানির মাঝমাঠের খেলোয়াড় ক্রিস্টোফার।
বিরতিতে ভারতের প্রধান কোচ গ্রাহাম রিড বলছিলেন, ‘‘মাঝমাঠ ও রক্ষণকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তা ঠিক ভাবে পালন করতে না পারাতেই এই ফল।’’ যদিও পরের দুই কোয়ার্টারে সেই ভুল শুধরে ম্যাচে ফেরা হয়নি ভারতের। উল্টে রিডের ছেলেদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রেসিং হকি খেলে বার বার ভারতের ‘ডি’ বক্সে পৌঁছে যাচ্ছিল জার্মানি। তৃতীয় কোয়ার্টারে ভারতীয় গোলরক্ষক তৎপর না থাকলে গোলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। চতুর্থ কোয়ার্টারেও জার্মানির চাপ ছিল প্রবল কিন্তু খেলার একদম অন্তিম লগ্নে ভারতের হয়ে ফিল্ড গোল করেন ববি সিংহ। অন্য সেমিফাইনালে এ দিন ভারতের ম্যাচের আগে খেলতে নেমেছিল ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে ফ্রান্সকে ৩-১ হারিয়ে ফাইনালে যায় আর্জেন্টিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy