আশাহত: শেষ মুহূর্তে রান আউট হয়ে ফিরছেন ধোনি। ফাইল চিত্র
পুরো রাঁচী শহরটাই যেন গুম মেরে গিয়েছে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজ়িল্যান্ডের কাছে হারের পরে চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, তবু বিষণ্ণতা গ্রাস করে রয়েছে শহর জুড়ে।
আলোর বাজি থেকে শব্দবাজি। তৈরি ছিল সব। ডোরান্ডার সাউথ অফিস পাড়ার কয়েক জন কলেজ পড়ুয়া ঠিক করে রেখেছিলেন ফিনিশার ধোনি ম্যাচ জেতালেই তাঁরা চলে যাবেন শহরের কেন্দ্রস্থল আলবার্ট এক্কা চকে। সেখানে বাজি ফাটাবেন। কিন্তু মার্টিন গাপ্টিলের একটা থ্রো সব শব্দ ও আলোর বাজিতে যেন জল ঢেলে দিল। আলবার্ট এক্কা চকে বুধবার রাতভর শুধুই যেন শূন্যতা!
শুধু আলবার্ট এক্কা চকই নয়, এ রকম টুকরো বিষণ্ণতার কোলাজ রাঁচীর সর্বত্র। ধোনি প্রথম জীবনে যে দলের হয়ে খেলতেন সেই সেন্ট্রাল কোলফিল্ড ইন্ডিয়ার (সিসিএল) এক আধিকারিক আদিল হোসেন জানাচ্ছেন, বুধবার সেমিফাইনালের দিন সবাই অফিসে বসেই নিজের মোবাইলে খেলা দেখছিলেন। বিকেলে অফিস ছুটি হলেও ধোনি যত ক্ষণ ব্যাট করছিলেন, তত ক্ষণ কেউ অফিস থেকে বেরোননি। বাড়ি গিয়ে খেলা দেখলে যদি ভারত হেরে যায়, ধোনি আউট হয়ে যায়— এ রকমই সংস্কার অনেকের মনে তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাত আটটা পর্যন্ত অফিসে থেকেও লাভ হল না। আদিল যেমন ফোনে বলেন, ‘‘কত পরিকল্পনা করেছিলাম। রবিবার ফাইনাল খেলার দিন কাজ রাখব না। অফিসের কয়েক জন ঘনিষ্ঠ মিলে একসঙ্গে খেলা দেখব। এটাই হয়তো ধোনির জীবনের শেষ বিশ্বকাপ ভেবে দিনটা অন্য রকম ভাবে পালন করব বলে ঠিক করেছিলাম। কিছুই হল না!’’ ঘটনাচক্রে, ধোনি যখন সিসিএল-এ খেলতেন, তখন সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন আদিল।
পাশাপাশি ধোনি আউট হওয়ার পরে যে ভাবে তিনি সমালোচিত হচ্ছেন, তাও মানতে পারছেন না রাঁচীর বাসিন্দারা। শহরের সংস্কৃতিকর্মী সুবীর লাহিড়ীর মতে, ধোনি যদি একদিকটা ধরে না রাখতেন তা হলে তো ভারত দেড়শোই করতে পারত না। সুবীরবাবু জানান, তাঁদের খুব মনে পড়ছে ২০১১ সালের মুম্বইয়ের সেই বিশ্বকাপ ফাইনালটা। সে বার ধোনির সেই ছয় মেরে দলকে জেতানোর পরে গোটা রাঁচী রাস্তায় নেমেছিল। সবাই চলে যান আলবার্ট এক্কা চকে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘এ বার জাডেজা আউট হওয়ার পরেও আমরা আশা ছাড়িনি। মনে হয়েছিল ফিরে আসছে সেই ২০১১-র ফাইনালের রাত। ধোনি ম্যাচ জেতাবেন। প্রথমে ছক্কাটাও হল। কিন্তু পরে মার্টিন গাপ্টিলের থ্রো-টা সব এলোমেলো করে দিল।’’
রাঁচী জামশেদপুর হাইরোডে রয়েছে দেউরি মন্দির। ক্রিকেট জীবনে প্রায় প্রথম থেকে ধোনি ওই মন্দিরে পুজো দেন। ভারতীয় মহাতারকার কয়েক জন ভক্ত জানালেন, সেমিফাইনাল, ফাইনালে ধোনির সাফল্য কামানা করে সেই মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ভেবেছিলাম আট বছর আগের মুম্বইয়ের ফাইনাল ম্যাচের রাতটা ফিরে আসবে। মাহির অবসরের আগে এ রকম একটা রাত রবিবার উপভোগ করার পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম আমরা সবাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy