ট্রেন্ট বোল্ট।
বিরাট কোহালির এই দলটার ভারসাম্য দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছি। এ রকম কোনও জমাট ভারতীয় দল আগে কখনও দেখিনি। মনে রাখবেন, আমি কোনও মহান ক্রিকেটারকে অসম্মান করছি না। শুধু বলছি, কোহালির এই দলের মতো ভারসাম্য আমি এর আগে কোনও ভারতীয় দলে দেখিনি।
ম্যাচের শুরু থেকেই ওরা বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেওয়ার জন্য ঝাঁপায়। এই মনোভাবটা আমার ভীষণ পছন্দ। অস্ট্রেলীয়রা ঠিক এই ভাবেই ক্রিকেটটা খেলা পছন্দ করে। ভারতও এখন সেটাই করছে। চূড়ান্ত আগ্রাসী ক্রিকেট খেলছে মাঠে। আর ক্যাপ্টেন কোহালি একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই অধিনায়কই দারুণ মনোভাব দেখিয়ে নিজের দেশের সমর্থকদের বারণ করেছিল, স্টিভ স্মিথকে বিদ্রুপ না করতে। ক্রিকেটীয় স্পিরিটকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছে ও। বিরাট, তুমি সত্যিকারের এক জন চ্যাম্পিয়ন যার মধ্যে মানবিক মূল্যবোধটাও আছে। ভারত সত্যি ভাগ্যবান যে, এ রকম এক জন অধিনায়ক পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার আগ্রাসনের সঙ্গে এক ভারতীয় হৃদয়। এর চেয়ে মারাত্মক মেলবন্ধন আর কী হতে পারে!
তবে ভারত কিন্তু একটা বড় ধাক্কা খেল শিখর ধওয়নের চোট লাগায়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে দুরন্ত খেলেছিল রোহিত শর্মা এবং ধওয়নের জুটি। কিন্তু ধওয়নের হাতে চিড় ধরায় ভারত বাধ্য হচ্ছে ওপেনিং জুটিতে বদল ঘটাতে। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে দেখা যাবে কে এল রাহুলকে। আমি ধওয়নের বড় ভক্ত। ও মাঝে মাঝে রোহিতের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায় ঠিকই, কিন্তু নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ধওয়নের অভাবটা টের পাবে ভারত।
এ বার কথা হচ্ছে, রাহুল ওপরে চলে এলে চার নম্বরে কে খেলবে? আমার ঘোড়া হল, বিজয় শঙ্কর। ও নিউজ়িল্যান্ড বোলিংকে হাতের তালুর মতো চেনে। কেন বলছি এ কথা? অনেকেই হয়তো জানে না, গত বছর নিউজ়িল্যান্ডের মাটিতে ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে এসে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার জিতে নিয়েছিল শঙ্কর। এ ছাড়া কিছু দিন আগে, দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ওয়েলিংটনের একটা ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের ১৮ রানে চার উইকেট পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে দলকে বাঁচিয়েছিল শঙ্কর। ও মিডিয়াম পেস বোলিংটাও করতে পারে। যেটা ওই পরিবেশে আদর্শ হতে পারে। ওকে দলে নেওয়া মানে বিরাটের হাতে এক জন বাড়তি পেসার থাকা। আমি যদি বিরাট হতাম, অবশ্যই দীনেশ কার্তিকের আগে শঙ্করকে নিউজ়িল্যান্ড ম্যাচে দলে রাখতাম।
ভারতের পক্ষে আর একটা সমস্যার কারণ হতে পারে আবহাওয়া। ভারী, মেঘলা আবহাওয়া— মাঝে মাঝে হাল্কা বৃষ্টির পূর্বাভাস। এ রকম আবহাওয়া কিন্তু নিউজ়িল্যান্ডের পক্ষে আদর্শ। এই বিশ্বকাপে কোনও বোলিং আক্রমণ যদি ভারতীয় ব্যাটিংকে থামাতে পারে, তা হলে সেটা নিউজ়িল্যান্ডেরই। যাদের বিরুদ্ধে আজ, নটিংহ্যামে খেলবে বিরাটের দল। তিনটে ম্যাচ জিতে লিগ টেবিলে এক নম্বরে থাকা ব্ল্যাক ক্যাপসরা ট্রেন্ট ব্রিজের পরিবেশ খুব উপভোগ করবে। বল সুইং করলে ট্রেন্ট বোল্টের মতো ভয়ঙ্কর বোলার খুব কমই হয়। নিজের পছন্দসই পরিবেশই বোল্ট পাবে বলে মনে হয়।
গত কয়েক দিন ধরে নটিংহ্যামে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাসও সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। পরিস্থিতি না বদলালে পিচ ঢাকা থাকবে আর আকাশ মেঘলা। আমি যদি বোল্ট হতাম, তা হলে এই রকম পিচ আর পরিবেশ খুবই পছন্দ করতাম। ভুলবেন না, হ্যামিল্টনে এই নিউজ়িল্যান্ডের সামনে ভারত কিন্তু ৯২ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমনকি বিশ্বকাপের আগে ওয়ার্ম আপ ম্যাচে, ভারতকে ১৭৯ রানে থামিয়ে দিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ডই। আর ওই দুটো ম্যাচেই ভারতের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বোল্ট।
তা হলে এ রকম পরিবেশে বোল্টকে সামলানোর কি কোনও দাওয়াই নেই? অবশ্যই আছে। বোল্টের বিরুদ্ধে খেলার সময় কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া চলবে না। ঠিক যে রকম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে মিচেল স্টার্কের বিরুদ্ধে করেছিল ওরা। তার পরে বাকিদের বিরুদ্ধে রান তুলেছিল। কিন্তু আকাশ মেঘলা থাকলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হতে পারে। রোহিত আর রাহুল, দু’জনেই কিন্তু বল মুভ করলে সমস্যায় পড়ে যায়। তাই শুরুর দিকে ওরা যেন বল বেশি ছাড়ে। এই ব্যাপারে ওরা ধওয়নের ইনিংসটা থেকে শিক্ষা নিতে পারে। স্টার্ককে আগের ম্যাচে ওই ভাবেই খেলেছিল ধওয়ন।
তবে ভারতের হাতেও ভাল পেসার আছে। আকাশ মেঘলা থাকলে কুলদীপ যাদবের বদলে মহম্মদ শামিকে খেলাতে পারে ভারত। নিউজ়িল্যান্ডকে বছরের শুরুতে ওদের মাঠে ৪-১ হারিয়েছিল ভারত। এ বারও না পারার কোনও কারণ নেই। (৩৬০ কর্পোরেট রিলেশনস)
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy