দুশ্চিন্তা: রবিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে ধওয়নের আঙুলের চোটের শুশ্রূষা করছেন ফিজিয়ো। পরের ম্যাচে খেলা নিয়েও চলছে জল্পনা। ফাইল চিত্র
নেথান কুল্টার-নাইলের একটা বল লাফিয়ে উঠে তাঁর বাঁ-হাতের গ্লাভসে আঘাত করেছিল। যার জেরে বুড়ো আঙুল ফুলে যায় শিখর ধওয়নের। আঙুলের যন্ত্রণা উপেক্ষা করে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে যান তিনি। কিন্তু তাঁর চোট নিয়ে সমস্যা থাকছেই। আজ, মঙ্গলবার ধওয়নের আঙুলে স্ক্যান হবে। দেখা হবে, চোটের অবস্থা কী। তার পরে দলের ফিজিয়ো প্যাটট্রিক ফারহার্ট ঠিক করবেন, পরের ম্যাচে ধওয়ন খেলতে পারবেন কি না।
ভারতের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার, নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সুস্থ হওয়ার জন্য তার আগে অবশ্য হাতে কয়েকটা দিন সময় পাচ্ছেন ধওয়ন। তবে চোট কতটা গুরুতর, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে আর ফিল্ডিং করতে নামেননি ধওয়ন। পুরো পঞ্চাশ ওভারই ফিল্ড করেন রবীন্দ্র জাডেজা। ধওয়নের হাতে এখন টেপ লাগানো আছে। দুরন্ত ফর্মে থাকা এই ওপেনারের আঙুল যেন না ভাঙে, এটাই এখন ভারতীয় শিবিরের প্রার্থনা।
আঙুলে চোট পেলেও ম্যাচের পরে কিন্তু ফুরফুরে মেজাজেই দেখা গিয়েছে ধওয়নকে। ‘চহাল টিভি’-তে এসে রীতিমতো হাসিঠাট্টা করতে দেখা যায় এই ওপেনারকে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ধওয়নকে স্বাগত জানিয়ে যুজবেন্দ্র চহাল বলছেন, ‘‘এসে গিয়েছে আমাদের নায়ক। কী নামে ডাকবেন একে? গব্বর নাকি আইসিসি ম্যান?’’ এর পরেই চহাল মনে করিয়ে দেন, ‘‘আইসিসি প্রতিযোগিতায় মনে হয় সাতটা কী আটটা সেঞ্চুরি হয়ে গেল ধওয়নের।’’
ভুল কিছু বলেননি চহাল। আইসিসি প্রতিযোগিতা এলেই যেন ধওয়নের ব্যাটে রানের ফুল ফুটতে থাকে। এই বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রান না পেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এসেছে দুরন্ত সেঞ্চুরি। করেন ১০৯ বলে ১১৭। নিজের ১৭ নম্বর ওয়ান ডে সেঞ্চুরি। চহালের কথা শুনে ধওয়ন বলতে থাকেন, ‘‘আজ আমি সত্যি ভাগ্যবান। গত এক বছর ধরে ভাবছিলাম, কবে সুযোগ পাব চহাল টিভি-তে। সেই সুযোগ এত দিনে মিলল। অনেক চেষ্টার পরে অবশেষে চহাল টিভি-তে আসতে পারলাম!’’
এর পরে চহাল প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ইনিংসের প্রথম দিকে আপনি একটু মন্থর ছিলেন। তার পরে সেই ‘গব্বর’-এর মতো খেলতে থাকেন। এটা কেন হয়েছিল? ধওয়নের জবাব, ‘‘শুরু থেকেই আমাদের মানসিকতা ইতিবাচক ছিল। তবে প্রথম দিকে আমরা একটু দেখে খেলতে চেয়েছিলাম। পিচের চরিত্রটা বুঝতে চেয়েছিলাম। তা ছাড়া আমরা জানতাম, প্রথম দশ ওভারে যদি ওদের দু’জন প্রধান বোলার— প্যাট কামিন্স আর মিচেল স্টার্ককে খেলে দেওয়া যায়, তা হলে পরের দিকে রান করতে সমস্যা হবে না। সেটাই হয়েছে। কামিন্স এবং স্টার্ক ওদের আসল বোলার, ওদের প্রাপ্য সম্মানটা তো দিতেই হবে।’’
ধওয়ন আরও বলেছেন, ‘‘মাঝের ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের খেলতে আমাদের কোনও সমস্যা হয়নি। ভালই রান উঠছিল। তাই অহেতুক ঝুঁকি নিতে হয়নি।’’ রোহিত আর তাঁর জুটি নিয়ে ধওয়ন বলেন, ‘‘আমাদের দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়াটা দারুণ। এটা খুব কাজে আসে।’’
ধওয়ন মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই ম্যাচে তাঁরা সব কিছুই ঠিকঠাক করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘যে ভাবে আমরা জিতলাম, সেটা দলের পক্ষে খুবই ভাল একটা দিক। আমরা দারুণ ফিল্ডিং করেছি। ভাল, ভাল ক্যাচ নিয়েছি। আমাদের বোলিং খুব শক্তিশালী। স্পিনাররাও দারুণ বল করছে।’’
এই সাফল্যের ফর্মুলাটা কী? ধওয়ন বলছেন, ‘‘আমরা নেটে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। দারুণ ভাবে নিজেদের তৈরি করেছি। যার ফলটা ম্যাচে পাচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সব কিছুই ঠিকঠাক হয়েছে আমাদের।’’ ধওয়ন এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘বাকি ম্যাচগুলোতেও আমাদের এই ভাবে খেলে যেতে হবে।’’
ধওয়নের স্ত্রী আয়েষা এখন অস্ট্রেলিয়ায়। চহাল জানতে চান, ‘‘ভাবিজি কি তোমার ইনিংসটা দেখেছেন?’’ জবাবে ধওয়ন বলেন, ‘‘সেটা তো নিশ্চিত করে বলতে পারব না। তবে আমার বিশ্বাস, আয়েষা অবশ্যই আমার খেলা দেখেছে। ওকে ধন্যবাদ, সব সময় আমার পাশে থাকার জন্য। ও আমার জন্য সব সময় প্রার্থনা করে।’’
ম্যাচে ক্যাচ ধরে হাঁটুতে চাপড় মারার যে বিশেষ ভঙ্গি করে উৎসব করেন ধওয়ন, সেটিও চহাল টিভি-তে দেখান তিনি। কখনও মনে হয়নি, ধওয়ন বিশেষ অস্বস্তিতে আছেন বলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy