নায়ক: ম্যাচের সেরা পাপাকে (একদম ডান দিকে) ঘিরে উচ্ছ্বাস সতীর্থদের।
কিবু ভিকুনার দল শেষ পর্যন্ত আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কি না, তা সময় বলবে। তবে বহু দিন পর অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো ছুটতে শুরু করেছে সবুজ-মেরুন।
ভূস্বর্গ থেকে পঞ্জাব, ডার্বিতে জয়ের পর পাহাড়েও জোসেবা বেইতিয়াদের দৌড় অব্যহত। টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত থেকে পাপা বাবাকর জিয়োয়ারারা বুঝিয়ে দিলেন খেতাবের লড়াইয়ে তারা প্রবলভাবে এগোতে চান। ডার্বির পরেও যে স্পেনীয় কোচের গলায় ছিল উৎকন্ঠা, নেতাজির জন্মদিনের বিকেলের পর তা-ও যেন উধাও। রিয়াল কাশ্মীরকে হারিয়ে আসা শক্তিশালী নেরোকাকে বিধ্বস্ত করার পর কিবুর মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘১৮ দিনে পাঁচটা ম্যাচ খেলেছে ছেলেরা। কখনও ঠান্ডায়, কখনও গরমে। কখনও পাহাড়ে, কখনও সমতলে। তা সত্ত্বেও যেভাবে ওরা আজ খেলেছে তাতে আমি গর্বিত। প্রথমার্ধে আমরা এক গোলে এগিয়ে ছিলাম। আরও বেশি গোল হতে পারত। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দল যা খেলেছে তাতে আমি খুশি।’’ এই ম্যাচ জিতে লিগ শীর্ষে থেকে গোল মোহনবাগান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পঞ্জাবের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ছয় পয়েন্টের।
মোহনবাগান প্রথম গোল পেয়ে যায় খেলার ২৭ মিনিটে। দেহের দোলায় নেরোকার জনা তিনেক ফুটবলারকে কাটিয়ে নংদাম্বা নওরেম বল দেন বেইতিয়াকে। তিনি দেন ধনচন্দ্র সিংহকে। ধনচন্দ্রের বল বাঁচান নেরোকার বিদেশি গোলকিপার মরভিন ফিলিপ। তার হাতে লেগে আসা ফিরতি বলে গোল করে যান নওরেম। ডার্বিতে নওরেম দুর্দান্ত খেলেছিলেন। এ দিন প্রতিশ্রুতিমান এই ফুটবলার নিজে তো গোল করেছেনৃ, গোলও করিয়েছেনও। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৩ মিনিটে নওরেমের তোলা বলে হেড করে গোল করেন পাপা। এটি তাঁর দ্বিতীয় গোল। ড্যানিয়েল সাইরাস চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর মাঠে নামেন নতুন বিদেশি কোমারন তুর্সানভ। অতিরিক্ত সময়ে তিনি গোলটি করেন। ব্রিটোর পাস থেকে । মোহনবাগান এই ম্যাচে অন্তত ছয় গোলে জিততে পারত। একটা সময় নেরোকা গোলকিপার বনাম মোহনবাগান খেলা হচ্ছিল। একের পর এক গোল নষ্ট করেন পাপা, সুহের, বেইতিয়া। বেইিতয়ার একটি গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। তবে অন্তত দু’বার মোহনবাগানের গোলকিপার শঙ্কর রায়ের ভুলে গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল গিফট রাইকানের দল।
মোহনবাগান মাঠে এ দিন ছিল ক্লাবের অ্যাথলেটিক্স মিট। কয়েকশো দর্শক ও প্রতিযোগী এসেছিলেন। মাঠে যখন পদকের জন্য অ্যাথলিটরা দৌড়োচ্ছেন তখন অসংখ্য মোবাইলে চলছিল আই লিগের ম্যাচ। ক্লাবের ভিতরেও খেলা দেখার জন্য ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ফেডারেশন যাদের খেলা দেখানোর দায়িত্ব দিয়েছে সেই সম্প্রচার সংস্থা ভাল করে ম্যাচই দেখাতে পারেননি। মাঝেমধ্যেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল খেলা। তাতে কী? ডার্বির পরের ম্যাচ সবসময়ই কঠিন হয়। সেই ম্যাচ হেলায় জিতে যাওয়ায় ক্লাব তাঁবুতে বিকেলে ছিল উচ্ছ্বাসের ঢেউ।
সেনেগালের স্ট্রাইকার পাপা শুরুর দু’ম্যাচে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। কিন্তু লা লিগায় খেলে আসা স্ট্রাইকার ক্রমশ ফুল হয়ে ফুটছেন বাগানে। ডার্বিতে গোল করার পর এ দিন গোল করে ম্যাচের সেরা হন তিনি। কিবুও তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বলে দিয়েছেন, ‘‘পাপা শুধু আমাদের নয়, যে কোনও দলের সম্পদ হতে পারে। ওর জীবনপঞ্জি দারুণ। গোল পেতে শুরু করেছে। ওর মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে শুধু। আমি ওর আরও ভাল খেলা আশা করছি।’’ মোহনবাগানের এর পরের ম্যাচ ৩১ জানুয়ারি কোয়েম্বাত্তুরে। চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে ড্যানিয়েল সাইরাসের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। যদিও কিবু বলে দেন, ‘‘ কলকাতায় ফিরে বুঝতে পারব অবস্থা কী?’’
মোহনবাগান: শঙ্কর রায়, আশুতোষ মেহতা, ড্যানিয়েল সাইরাস (কোমারান তুর্সানভ), ফ্রান মোরান্তে, ধনচন্দ্র সিংহ, নংদাম্বা নওরেম (শুভ ঘোষ), জোসেবা বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেস, শেখ সাহিল, পাপা বাবাকর জিওয়ারা, ভি পি সুহের (ব্রিটো পি) ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy