Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চাপমুক্ত থেকেই সাফল্য পেল

দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্র্যাটেজি ছিল, অফস্টাম্পের বাইরে বাইরে বল করে প্রতি ওভারে একটা বা দু’টো বল স্টাম্পে রাখতে। সেখান থেকে আউট সুইং করাতে। হার্দিক নিজের ‘জোন’-এ পাওয়া বলগুলোকে ড্রাইভ বা স্কোয়ার কাট করেছে।

সফল: বোলার হার্দিকও স্বস্তি দিলেন অধিনায়ক কোহালিকে। ছবি: টুইটার।

সফল: বোলার হার্দিকও স্বস্তি দিলেন অধিনায়ক কোহালিকে। ছবি: টুইটার।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

প্রায় হাতের বাইরে চলে যাওয়া একটা ম্যাচে ফের ভারতকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনল হার্দিক পাণ্ড্য। শনিবার কেপ টাউনে হার্দিক প্রথমে নিজের মেজাজে ব্যাট করে কেপটাউনে ভারতকে লড়ার অক্সিজেন দিল। তার পরে বল হাতেও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনারকে আউট করে লড়াইয়ে রাখল বিরাট কোহালির দলকে।

দলে বিরাট কোহালি, চেতেশ্বর পূজারা-দের মতো অভিজ্ঞরা থাকতেও হার্দিক বড় রান করে গেল দু’টো কারণে। একটা মানসিক, একটা টেকনিক্যাল। হার্দিকের হারানোর কিছু ছিল না। ও যদি পাঁচ রান করেও আউট হতো, কেউ কিছু বলত না। ফলে ও চাপমুক্ত থেকে ব্যাটিং করে গেল। দুই, দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে জোর দিতে হয় ‘কাট’, ‘পুল’ ‘হুক’-এর উপর। হার্দিকও ঠিক সে ভাবেই খেলেছে। বাউন্সার যেমন ‘হুক’, ‘পুল’ মেরে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছে, তেমনই মেরেছে ‘কাট’ ও ‘স্কুপ’।

দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্র্যাটেজি ছিল, অফস্টাম্পের বাইরে বাইরে বল করে প্রতি ওভারে একটা বা দু’টো বল স্টাম্পে রাখতে। সেখান থেকে আউট সুইং করাতে। হার্দিক নিজের ‘জোন’-এ পাওয়া বলগুলোকে ড্রাইভ বা স্কোয়ার কাট করেছে। আর স্টাম্পের বাইরে থাকা বলগুলোকে ছেড়েছে। যেটা ভারতীয় টপ অর্ডারকে করতে দেখিনি। হার্দিক এটা পেরেছে কারণ, ও যখন ফ্রন্টফুটে খেলে তখন বলের উপরে গিয়ে মারে। আর ব্যাকফুটে যখন স্কোয়ার কাট বা পুল করে তখন বলের কাছে যায়।

ডেল স্টেন যখন চোটের কারণে মাঠের বাইরে চলে গেল, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি নতুন চাল দিয়েছিল, কেশব মহারাজকে বল করতে এনে। যাতে ও রানটা আটকে রাখতে পারে। আর উল্টো দিক থেকে কাগিসো রাবাডা বা মর্নি মর্কেল রাউন্ড দ্য উইকেট-এ গিয়ে একের পর এক শর্ট বল করে হার্দিক-কে প্রলোভিত করতে পারে বাজে শট খেলার জন্য। কিন্তু ডু প্লেসির এই সব পরিকল্পনা হার্দিক ভেস্তে দিয়েছে নিজের ছন্দে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে।

দিনের শুরুতে এ দিন পূজারা এবং রোহিত শর্মা ঠিকঠাকই খেলছিল। কিন্তু ওরা এতটাই সতর্ক হয়ে খেলছিল যে মারার বল মারছিল না। পূজারার আউটের সময় সুইংটা যেন চুম্বকের মতো ব্যাটটা টেনে নিল। আর রোহিত আউট হল বোলারকে ঘাড়ে চেপে বসতে দিয়ে।

দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে বিরাট কোহালি আবার নতুন চাল দেয়। শুরুতে মহম্মদ শামিকে না এনে হাওয়ার অনুকূলে যশপ্রীত বুমরা-কে নিয়ে আসা। প্রথম ইনিংসে শামিকে সে রকম ছন্দে দেখায়নি। তাই তাড়াতাড়ি আক্রমণে আনে হার্দিককেও। বুমরা, হার্দিকের গতিটা কাজে লাগাতে চেয়েছিল বিরাট। যে রকম রাবাডা গতিকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয়দের উইকেট তুলেছে। বুমরা উইকেট না পেলেও হার্দিক দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিল।

কিন্তু কেপটাউনে দ্বিতীয় দিন এই ‘হার্দিকময়’ পারফরম্যান্সের পরে ভারত লড়াইয়ে ফিরলেও ম্যাচের সত্তর শতাংশ রাশ কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার দখলেই। এখনই ওরা এগিয়ে ১৪২ রানে। এই পিচে এর সঙ্গে আরও ১৫০ কিংবা ২০০ রান জুড়ে দিলে চতুর্থ ইনিংসে ভারতের চ্যালেঞ্জটা কঠিন হয়ে যাবে। তাই ম্যাচে ফিরতে হলে রবিবার দ্রুত উইকেট ফেলার দায়িত্ব নিতে হবে ভারতীয় বোলারদের। তবে ডেল স্টেন না থাকায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা একটা বড় সুবিধে তো পাবেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE