লড়াকু: সেঞ্চুরির পরে হনুমা। শুক্রবার হ্যামিল্টনে। —ছবি পিটিআই।
সকলে যখন পৃথ্বী শ, শুভমন গিলদের নিয়ে কথা বলছে, তখনই নিজের দাবি জোরালো করে রাখলেন হনুমা বিহারী। স্বভাবসিদ্ধ সেই চুপচাপ ভঙ্গিতে কাজ করে যাওয়া শ্রেণিতে নতুন সংযোজন তিনি। তরুণ তারকারা যখন ব্যর্থ, দেওয়াল হয়ে দাঁড়ালেন চেতেশ্বর পুজারা এবং বিহারী। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে নিউজ়িল্যান্ড একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে পুজারা করলেন ৯৩। আর বিহারী স্বভাবসিদ্ধ লড়াকু ভঙ্গিতে করে গেলেন ১০১। কোহালি এ দিন প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট করেননি। তার বদলে নেটে মন দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করে গেলেন।
এই দু’জনের অবদান বাদ দিলে বাকিরা প্রায় সবাই ব্যর্থ। কেউ কুড়ি রানেও পৌঁছতে পারলেন না। ভারত প্রথম ইনিংসে দিনের শেষে ২৬৩। ওপেনিংয়ের দু’টি জায়গা নিয়ে যে তিন জনের মধ্যে দৌড় চলছে বলে মনে হচ্ছিল, তাঁরা কেউ রান পেলেন না। মায়াঙ্ক আগরওয়াল করলেন ১, পৃথ্বী শ ০, শুভমন গিল ০। শুধু সেঞ্চুরিই করলেন না হনুমা, পরে সাংবাদিকদের সামনে এসে বার্তাও দিয়ে গেলেন যে, তিনি ওপেন করতেও তৈরি। ‘‘আমাকে কেউ এখনও কিছু বলেনি। কিন্তু যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে আমি তৈরি,’’ বলে হনুমা যোগ করলেন, ‘‘টিম যেখানে বলবে, আমি সেখানেই ব্যাট করব। টিম কম্বিনেশনটা বোঝা খুব জরুরি। তাই সুযোগ না পেলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’’
অস্ট্রেলিয়ায় মেলবোর্নে মুরলী বিজয় এবং কে এল রাহুলকে বসিয়ে মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং তাঁকে দিয়ে ওপেন করিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। এ দিন প্রস্তুতি ম্যাচে ছয় নম্বরে এলেও হনুমা যে ওপেনারের দৌড়ে ঢুকে থাকলেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। হ্যামিল্টনে লাল বলে সুইং এবং সিম সামলাতে গিয়ে নাজেহাল দেখিয়েছে মায়াঙ্ক, পৃথ্বী, শুভমনদের। পিচে ঘাস থাকায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভালই পরীক্ষা নিলেন নিউজ়িল্যান্ড একাদশের পেসারেরা। বিশেষ করে স্কট কুখেলাইন অতিরিক্ত বাউন্সে সমস্যায় ফেললেন। ৪০ রানে তিন উইকেট নিলেন তিনি। এর মধ্যে পৃথ্বী যে রকম দৃষ্টিকটূ ভাবে বাউন্সিং বলে আউট হলেন, তাতে প্রথম টেস্টে তাঁকে খেলানোর ব্যাপারে সংশয় তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কুখেলাইনের পাঁজরের দিকে ধেয়ে আসা বলে চোখ বন্ধ করে ব্যাট বাড়িয়ে দিলেন পৃথ্বী। শর্ট লেগে উঁচু হয়ে গিয়ে ক্যাচ জমা পড়ে রচিন রবীন্দ্রের হাতে। টেস্টে খেলতে হবে ট্রেন্ট বোল্ট, নিল ওয়্যাগনার, ম্যাট হেনরিদের। প্রস্তুতি ম্যাচের পিচ যদি কোনও ইঙ্গিত হয়, তা হলে টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলকে পেসার-বন্ধু উইকেটই উপহার দেবেন কেন উইলিয়ামসনেরা। তখন সাদা বলের চাকচিক্যধারী ভঙ্গি নয়, দরকার হবে লাল বলের ধৈর্যশীল, লড়াকু ব্যাটিং। এই সেঞ্চুরির পরে হনুমাকে উপেক্ষা করা তাই কঠিন হবে। পুজারার সঙ্গে ১৯৫ রান যোগ করেন হনুমা। বলে গেলেন, ‘‘শুরুর দিকে অতিরিক্ত বাউন্স আমাদের অস্বস্তিতে রেখেছিল। এখানে ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে খেলার সময় কিন্তু পিচ এতটা প্রাণবন্ত ছিল না।’’ হনুমার মনে হচ্ছে, ‘‘হয়তো এ রকম পিচই টেস্ট সিরিজে তৈরি করতে চলেছে নিউজ়িল্যান্ড। ওদের বোলিং আক্রমণ বেশ ভাল।’’ পুজারার কাছ থেকে কী পরামর্শ পেয়েছিলেন? অগ্রজ সতীর্থের মতোই সংযমকে ঢাল করে ইনিংস সাজাতে অভ্যস্থ হনুমার জবাব, ‘‘পুজারা আমাকে বলেছিল, বেশি বল ছাড়তে। চোখটা সইয়ে নিতে। আস্তে আস্তে তা হলে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।’’
ভারত শেষ ছ’টি উইকেট হারাল মাত্র ৩০ রানে। ফের বাজে শট খেলে আউট হলেন ঋষভ পন্থ। টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে দলের বাইরে থাকা তাঁর আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়ে থাকতে পারে। তা বলে ফের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসার প্রবণতা কেন, সেই প্রশ্ন থেকে গেল। পন্থ করলেন ৭, ঋদ্ধিমান সাহা কোনও রানই পেলেন না। লাল বলে প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন যতটা না স্বস্তির, তার চেয়েও বেশি করে উদ্বেগের হয়ে থাকল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ২৬৩ (হনুমা ১০১, পুজারা ৯৩। কুখেলাইন ৩-৪০, সোধি ৩-৭২)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy