Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Viswanathan Anand

Viswanathan Anand: আনন্দকেও একই সারিতে রাখব, কার্লসেন-ফিশারদের থেকে ওর কৃতিত্ব কম নয়: দিব্যেন্দু

বিশ্বের সেরা দাবাড়ু কে? ম্যাগনাস কার্লসেন, গ্যারি কাসপারভ, না কি ববি ফিশার? বিশ্বনাথন আনন্দের নাম তুললেন বন্ধু দিব্যেন্দু বড়ুয়া।

বিশ্বনাথন আনন্দকে (বাঁ দিকে) ম্যাগনাস কার্লসেনের (ডান দিকে) সঙ্গে একই সারিতে রাখছেন দিব্যেন্দু বড়ুয়া।

বিশ্বনাথন আনন্দকে (বাঁ দিকে) ম্যাগনাস কার্লসেনের (ডান দিকে) সঙ্গে একই সারিতে রাখছেন দিব্যেন্দু বড়ুয়া। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ১৭:১৯
Share: Save:

ম্যাগনাস কার্লসেন, গ্যারি কাসপারভ, না কি ববি ফিশার? বিশ্বের সেরা দাবাড়ু কে? বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই থেকে কার্লসেন সরে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্নও উঠছে। দাবার একটি ওয়েবসাইট এই প্রশ্ন তুলেছে। তাদের বিচারে বিশ্বের সর্বকালের সেরা দাবাড়ু কাসপারভ। তার পর কার্লসেন। শেষে ফিশার। সত্যিই কি তাই? বাংলার দুই গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া এবং দীপ্তায়ন ঘোষ এ ভাবে বিভিন্ন প্রজন্মের দাবাড়ুদের এক সারিতে রাখতে নারাজ। সেই সঙ্গে বাংলার প্রথম তথা ভারতের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দুর প্রশ্ন, এই তালিকায় বিশ্বনাথন আনন্দের নাম কোথায়? যদি সেরা দাবাড়ুদের বাছতেই হয়, তা হলে আনন্দকেও সেখানে রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।সুদূর ফ্রান্সে বসে আনন্দবাজার অনলাইনকে দিব্যেন্দু বললেন, ‘‘এ ভাবে বিভিন্ন প্রজন্মের দাবাড়ুদের এক সারিতে আনা ঠিক নয়। ফিশার যখন খেলেছেন তখন কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না। এখন প্রযুক্তির এত সুবিধা। শুধু দাবা কেন, আমার মনে হয় কোনও খেলাতেই এ ভাবে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় করা যায় না।’’ তার পরেই আনন্দের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন দিব্যেন্দু। বললেন, ‘‘বিশ্বের সেরা দাবাড়ুদের তালিকায় আনন্দ থাকবে না? এটা হতে পারে না। মনে রাখতে হবে কাসপারভ থেকে কার্লসেন, সবাই তাঁদের দেশ থেকে সব রকম সুবিধা পেয়েছে। তাঁদের এই জায়গায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে অনেকের অবদান রয়েছে। সেখানে তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ থেকে একার দক্ষতায় উঠে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে আনন্দ। তাও এক বার নয়, পাঁচ বার। এটা কম কৃতিত্বের নয়।’’

আনন্দের (বাঁ দিকে) সঙ্গে দিব্যেন্দু বড়ুয়া (ডান দিকে)

আনন্দের (বাঁ দিকে) সঙ্গে দিব্যেন্দু বড়ুয়া (ডান দিকে) ফাইল চিত্র

ঘটনাচক্রে, ২০১৩ সালে আনন্দকে হারিয়েই প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কার্লসেন। তারপর আরও এক বার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে তিনি হারিয়েছিলেন আনন্দকে। ক্লাসিক্যাল দাবায় দু’জনে মুখোমুখি হয়েছেন ৭১ বার। কার্লসেন জিতেছেন ১২ বার। আনন্দ আট বার। ৫১ বার খেলা ড্র হয়। র‌্যাপিড দাবায় ১৩৩ বারের লড়াইয়েও ৩৩-২০ ব্যবধানে এগিয়ে কার্লসেন। ৮০ বার খেলা ড্র হয়েছে। পরিসংখ্যানে কার্লসেন এগিয়ে থাকলেও আনন্দের কৃতিত্বকে খাটো করতে চাইছেন না দিব্যেন্দু।

বিশ্বের সেরা দাবাড়ুদের মধ্যে তুলনা করা উচিত নয় বলে মনে করেন আর এক বাঙালি গ্র্যান্ড মাস্টার দীপ্তায়ন। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘এ ভাবে তুলনা করা যায় না। ফিশার, কার্লসেনরা নিজেদের সময়ে সেরা। তাই তাদের এক সারিতে আনা সম্ভব নয়।’’

বুধবার কার্লসেন জানিয়েছেন, আগামী বছর আর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নামবেন না তিনি। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নের যুক্তি, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নামার অণুপ্রেরণা আর পাচ্ছেন না তিনি। তাই খেলার ইচ্ছেটাই নেই তাঁর। কার্লসেনের এই ঘোষণা ঝড় তুলেছে দাবামহলে। কেরিয়ারের শীর্ষে থাকা দাবাড়ুর মুখে এ কথা শুনে কাসপারভ বলেছেন, একঘেয়েমির জন্যই কার্লসেন আর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে নামবেন না। কিন্তু দিব্যেন্দুর মতে, একঘেয়েমি নয়, নিজেই নিজেকে আরও এক বার চ্যালেঞ্জ করতে চাইছেন নরওয়ের দাবাড়ু। সেটা করতে সাহস লাগে।

দিব্যেন্দুর কথায়, ‘‘গত বছর ইয়ান নেপোমিয়াচির বিরুদ্ধে একপেশে ফাইনালে জিতেছে কার্লসেন। এ বারও নেপোমিয়াচির বিরুদ্ধেই খেলতে হবে ওকে। সেটাই ওর ভাল লাগছে না। ও আবার শূন্য থেকে শুরু করতে চাইছে।’’ নিজের কথার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাঙালি গ্র্যান্ড মাস্টার বললেন, ‘‘কার্লসেন কিন্তু বলেনি এর পর কোনও দিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ খেলবে না। এরপরে খেলতে হলে ওকে সাধারণ প্রতিযোগী হিসাবে খেলতে হবে। প্রাথমিক স্তর থেকে খেলে খেলে ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চায়। সেই আত্মবিশ্বাস ওর আছে।’’

দীপ্তায়ন আবার মনে করেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি নিতে যে দীর্ঘ সময় লাগে, সেই সময়টায় অন্য প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পাবেন বলে হয়তো আপাতত সরে দাঁড়িয়েছেন কার্লসেন। তিনি বললেন, ‘‘বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে খেলার জন্য চার-পাঁচ মাসের প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেই সময়ে ও অন্য প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে। যেমন, গত বছর কার্লসেন দাবা অলিম্পিয়াড খেলেনি। এ বার খেলবে। সেই জন্যই হয়তো এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ খেলবে না বলে জানিয়েছে কার্লসেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE