ইস্টবেঙ্গল জার্সি হাতে মহম্মদ হাবিব। ছবি: উত্পল সরকার।
প্রায় দশ বছর পর ঢুকলেন প্রিয় ক্লাবের অত্যাধুনিক তাঁবুতে। সেখানে জিম, জাকুজি, মাঠ, কাফেটেরিয়া ও অন্যান্য পরিকাঠামো দেখে বড়ে মিঞাঁ মহম্মদ হাবিবের প্রশ্ন, ‘‘আরে আমরা তো শুধু ডাল-ভাত খেয়ে ফুটবলটা খেলতাম। এখনকার ফুটবলাররা এত সব সুবিধা পেয়েও আই লিগ আনতে পারছে না?’’
পারলে ইস্টবেঙ্গলকে ট্রফি দিতে এখনই মাঠে নেমে পড়েন। এক সময় থাকতে না পেরে বলেই ফেললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল যদি কখনও কোচিং করাতে ডাকে, তা হলে ট্রফি দেওয়ার জন্য এই বয়সেও চেষ্টা করতে রাজি। এত সুবিধা পাওয়ার পরেও ফুটবলাররা আই লিগ পায় না কেন? সেটাই তো বুঝতে পারছি না!’’
ফুটবলার জীবনের মতোই নিয়মানুবর্তিতা। কাঁটায় কাঁটায় ঠিক বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ছেলেকে নিয়ে পা দিয়েছিলেন লাল-হলুদ তাঁবুতে। আর তাঁদের প্রিয় মহম্মদ হাবিব তাঁবুতে আসতেই তাঁকে বরণ করে নেন ক্লাব কর্মী ও কর্তারা। অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের সঙ্গেই ঘুরে দেখেন মাঠ, তাঁবু, ড্রেসিংরুম, জিম।
মেহতাবদের ড্রেসিংরুমে ঢুকে লাল-হলুদ জার্সি দেখার পরে আবেগমথিত হয়ে পড়েন সত্তর ও আশির দশকের এই সিংহ হৃদয় ফুটবলার। পরে ক্লাবের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে যান মহম্মদ হাবিব। বলেন, ‘‘হায়দরাবাদে ছোটবেলায় ফুটবল খেলার সময় থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানে ফুটবল খেলার। তাই যত দিন কলকাতার বড় দলে সুযোগ পেয়েছি, তত দিনই নিজের একশো শতাংশ মাঠে নিংড়ে দিয়েছি।’’
তাঁর জমানায় ৭০ দশকে পর পর পাঁচ বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। চলতি মরসুমে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের দল কলকাতা লিগ জিতলে সেই রেকর্ড ভেঙে ছ’বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়বে ইস্টবেঙ্গল। এ দিন সেই প্রসঙ্গ উঠতেই ফের সেই নিজের ফুটবলার জীবনের লড়াকু মানসিকতা প্রকাশ করে ফেললেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের প্রিয় হাবিব ভাই। বললেন, ‘‘জিততেই হবে। জিতব না-ই বা কেন? তা হলে বড় টিমের জার্সি গায়ে তোলা কেন? ফুটবলারদের মধ্যে এই মানসিকতা থাকা চাই সব সময়। এই মানসিকতা মাথায় রেখে মাঠে নামলে সাফল্য আসবেই।’’
তবে কলকাতায় তাঁর সেরা ম্যাচ কোনটা জানতে চাইলে হাবিব অবশ্য জানাচ্ছেন সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ৭৭-এ পেলের কসমসের বিরুদ্ধে ম্যাচকেই। তার পরে রাখছেন লাল-হলুদ জার্সি গায়ে পিয়ং ইয়ং সিটির বিরুদ্ধে খেলার স্মৃতি। বলছেন, ‘‘পেলের বিরুদ্ধে খেলার স্মৃতিটাই সেরা। তবে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে পিয়ং ইয়ং ম্যাচও কোনও অংশে কম ছিল না। তবে কসমসই আমার ফুটবল জীবনে সেরা প্রতিপক্ষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy