প্রত্যাবর্তন: আবার গ্যালারিতে সেই সচিন-ভক্ত সুধীর। শনিবার। টুইটার
দীর্ঘ এগারো মাস পরে ভারতীয় ক্রিকেটে ফিরল সমর্থকদের উন্মাদনা। শনিবার চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে ৫০ শতাংশ সমর্থককে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। ৩৩ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে এ দিন ভর্তি হয় ১৪ হাজার আসন।
আগের মতো স্টেডিয়ামের গেটে ভিড় করার নিয়ম নেই। তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থার একটি ভিডিয়োয় দেখা যায় শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে সমর্থকদের। প্রত্যেকের শারীরিক তাপমাত্রা মেপে নেওয়ার পরে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়। প্রবেশদ্বারেই রাখা হয়েছে স্যানিটাইজ়ার। তাতে হাত পরিষ্কার করার পরেই খুলে দেওয়া হচ্ছে গেট। কিন্তু তাঁদের শত প্রচেষ্টার পরেও দেখা গিয়েছে, মাঠে ঢুকে কোভিড বিধি মানেননি অনেক দর্শক। টিভিতে দেখা গিয়েছে, অনেকের মুখের ‘মাস্ক’ খোলা। দূরত্ববিধি ভুলে কাছাকাছি থেকে দর্শকেরা রোহিত শর্মাদের ব্যাটিং দেখে আনন্দ করেছেন।
বিশেষ পর্যবেক্ষকদের একটি দল নিয়োগ করেছে টিএনসিএ। যাঁরা মাঠের প্রত্যেক প্রান্তে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। কোনও ভাবেই যাতে ভিড় না জমে, তা দেখছেন পর্যবেক্ষকদের দল। সংস্থার সচিব এস রামস্বামী আনন্দবাজারকে ফোনে বলেন, “প্রত্যেকের কাছে স্যানিটাইজ়ার, মুখাবরণ ও আরোগ্য সেতু অ্যাপ আছে কি না দেখে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে যারা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সমস্যা যাচাই করবে সিদ্ধান্ত নেবে। এত দিন পরে চিপকে (পুরনো নাম) সমর্থক ফেরায় আমরা আপ্লুত।” তবে তাঁরা এমন দাবি করলেও টিভিতে যে ছবি ধরা পড়েছে, তার পরে আরও সতর্কতা প্রয়োজনীয়।
এগারো মাস পরে মাঠে প্রবেশ করার সুযোগ পেলেন ভারতীয় দলের অঘোষিত ‘চিয়ারলিডার’ সুধীর গৌতম। পরিচিত ভঙ্গিতেই গ্যালারিতে শঙ্খ ও ভারতীয় পতাকা নিয়ে উপস্থিত হন তিনি। শরীর রাঙানো তেরঙ্গায়। বুকের উপরে লেখা ‘মিস ইউ তেন্ডুলকর’। সুধীর যদিও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি সচিনের এক সময়ের ওপেনিং পার্টনার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের ব্যবস্থা করা টিকিট নিয়েই ম্যাচ দেখার সুযোগ পান সুধীর। তাঁর কথায়, “শঙ্খ বাজিয়ে মাঠে প্রবেশ করার পরেই চোখ দিয়ে জল বেরোতে শুরু করে। এ ভাবে গ্যালারিতে বসে ম্যাচ উপভোগ করার জন্য আমি লড়াই করে গিয়েছি। লকডাউনের সময় এমনও অবস্থা হয়, পরের দিন কী খাবার জুটবে জানতাম না।’’ সুধীর মাঠে যান বলে স্পনসরের থেকে অর্থ পান। সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অতিমারির হানায়।
সৌরভের কাছে ম্যাচ দেখার অনুমতি চাইতে এসে টানা আট দিন থাকেন কলকাতায়। ২৭ জানুয়ারি কলকাতায় এসে শোনেন দাদা হাসপাতালে। পরের দিন বাইপাসের ধারে হাসপাতালের সামনে টানা আট ঘণ্টা দাঁড়িয়েও থাকেন। কিন্তু ভিতরে ঢুকে দাদার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাননি। সৌরভ হাসপাতাল থেকে ফেরার পরে তাঁর বাড়ি গিয়ে ম্যাচ দেখার অনুমতি নিয়ে আসেন সুধীর। বলছিলেন, “দাদাকে অনেক ধন্যবাদ। তাঁর জন্যই আমি জীবন ফিরে পেয়েছি। আর কোনও কষ্ট রইল না আমার। প্রথম দিনই রোহিতের সেঞ্চুরি দেখে আমি মুগ্ধ। আমার বিশ্বাস, ভারত জিতবেই।”
সুধীর জানিয়েছেন, আগের মতো পরিস্থিতি নেই গ্যালারিতে। বলছিলেন, "প্রত্যেক গ্যালারিতে পর্যবেক্ষকদের দল নিয়োগ করা হয়েছে। ওরা কড়া নজর রাখছে। সেলফি তোলা নিষেধ। গ্যালারির নীচে কোনও ফুডস্টল বসতে দেওয়া হচ্ছে না।" যোগ করেন, "আমাদের পাশে এক বন্ধুর দলকে সতর্ক করে দেওয়া হল। তারা নিজেদের আসন ছেড়ে বারবার সামনে এসে ভিড় করছিলেন। তাঁদের বলে দেওয়া হল, আর এক বার এ ধরনের কিছু দেখলেই মাঠ থেকে বার করে দেওয়া হবে।" তবে দর্শক প্রত্যাবর্তনের দিনে যে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে, তা ভারতে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য সুখবর। আর তাঁদের স্বাগত জানাল রো-হিট শো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy