লিয়োনেল মেসিদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার জন্য গ্রেপ্তার হলেন বার্সিলোনার প্রাক্তন সভাপতি জেসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। হঠাৎই বার্সেলোনার দপ্তর ন্যু ক্যাম্পে হানা দেয় পুলিশ। বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বার্সার দুই প্রাক্তন ও বর্তমান ফুটবলারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য ‘আই থ্রি’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে ঘুস দিয়েছিলেন তিনি। এঁদের মধ্যে রয়েছেন লিয়োনেল মেসি, পেপ গুয়ার্দিওলা, জেরার্ড পিকে। এঁদের হেনস্থা করার জন্যই নাকি এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বার্তোমেউ।
‘আই থ্রি’ সংস্থাকে বার্তোমেউ বলে দিয়েছিলেন, নেট মাধ্যমে ক্লাবের প্রাক্তন ও বর্তমান প্রভাবশালী ফুটবলারদের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করতে হবে। সেই অনুযায়ী কাজ করে ওই সংস্থা। নিজের নামে ইতিবাচক প্রচারের পাশাপাশি, সমর্থকদের কাছে প্রাক্তন ও বর্তমান তারকাদের সম্পর্কে দুর্নাম ছড়ানোই ছিল বার্তোমেউয়ের উদ্দেশ্য। তাঁর নির্দেশ মতো নেটমাধ্যমে একাধিক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে মেসিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত পোস্ট ও মন্তব্য করতে থাকে ‘আই থ্রি’।
আরও অভিযোগ, এই কাজের জন্য বার্সার বোর্ডের একাধিক সদস্যকে ফাঁকি দিয়ে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ডের গোপন চুক্তি করেন তিনি। এই অভিযোগগুলির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হলেন বার্তোমেউ। ক্যাম্প ন্যু থেকে বার্তোমেউর সঙ্গেই গ্রেপ্তার হয়েছেন বার্তোমেউর বোর্ডের সদস্য অস্কার গ্রাউ ও আইনি উপদেষ্টা রোমান গোমেজ পন্তি। সোমবার মেসিদের ক্লাবে হানা দেয় পুলিশ। প্রাক্তন ক্লাব সভাপতিকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি বেশ কিছু নথিপত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বার্তোমেউ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু বার্সেলোনার পুলিশ এই ঘটনার খুঁটিয়ে তদন্ত করেছে।
📽️ Els @mossos sortint de les oficines del @FCBarcelona en el marc de la investigació del #BarçaGate.
— Què T'hi Jugues (@QueThiJugues) March 1, 2021
via @AdriaAlbets
▶️ Seguim informant al #QuèThiJugues! pic.twitter.com/OKerTf968n

চক্রান্তের দায়ে গ্রেপ্তার হলেন প্রাক্তন ক্লাব সভাপতি। ফাইল চিত্র।
বার্তোমেউয়ের দেওয়া নতুন চুক্তিপত্রে সই করতে অস্বীকার করেছিলেন মেসি। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই ক্ষিপ্ত ছিলেন বার্সার প্রাক্তন সভাপতি। সেই সময়ে এমনকী মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লাকে নিয়েও নেট মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার চালানো হয়। মেসির সঙ্গে আবার সেই সময়ে বার্সার সভাপতি পদপ্রার্থী হোয়ান লাপোর্তার সম্পর্কও বেশ ভাল ছিল। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যমের দাবি, সেটাও বার্তোমেউয়ের গাত্রদাহের কারণ ছিল।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম এই গোপন চুক্তির কথা ফাঁস হলে ক্লাবের আটজন সদস্য পুলিশের কাছে বার্তোমেউর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। দুর্নীতি ও আর্থিক তছরুপের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম তখন এই তদন্তের নাম দিয়েছিল ‘বার্সাগেট’। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বার্তোমেউয়ের বোর্ডের ছয়জন পরিচালক এক সঙ্গে বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন। যদিও বার্তোমেউ নিজে তখন সরেননি। ক্লাব সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করলে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তাঁর বদলে ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পান কার্লেস তুসকেতস। অবশ্য তিনিও বার্তোমেউর ‘কাছের লোক’ বলেই মনে করছে স্প্যানিশ ফুটবল মহল। তুসকেতসের প্রধান দায়িত্ব ছিল দ্রুত ক্লাবের নির্বাচন করা। কিন্তু করোনাকে অজুহাত করে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে থাকেন তুসকেতস।
শেষ পর্যন্ত আগামী ৭ মার্চ বার্সেলোনার নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী তিনজন। বার্তোমেউ নিজে, তাঁর ‘গুরু’ সান্দ্রো রোসেল এবং লাপোর্তা।