রোনাল্ডো এখন আল নাসেরের হয়ে সৌদি প্রো লিগে খেলেন। সেই লিগে কি মেসির খেলার সম্ভাবনাও রয়েছে? ফাইল ছবি
কিছু দিন আগেই সৌদি আরবের মাটিতে দেখা গিয়েছে লিয়োনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দ্বৈরথ। রিয়াধের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে প্রদর্শনী ম্যাচে মেসির প্যারিস সঁ জরমঁ (পিএসজি) মুখোমুখি হয়েছিল রোনাল্ডোর রিয়াল সিজন অলস্টার্সের। মেসি, রোনাল্ডো দু’জনেই গোল করেন। রোনাল্ডো এখন আল নাসেরের হয়ে সৌদি প্রো লিগে খেলেন। সেই লিগে কি মেসির খেলার সম্ভাবনাও রয়েছে? উত্তর দিলেন লিগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম আলকাসিম।
রোনাল্ডো খেললেও মেসির সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন আলকাসিম। জানিয়েছেন, এখনই সৌদির কোনও ক্লাবে মেসির যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে রোনাল্ডোর মতো মেসি সত্যিই সৌদির ক্লাবে যোগ দিলে ভালই লাগবে। আলকাসিম বলেছেন, “লিয়োনেল মেসি এই দেশের লিগে যোগ দিতে আসবে কি না, সেটা নিয়ে এখনও কিছুই জানি না। তবে সৌদি প্রো লিগের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে এটা বলতে অসুবিধা নেই যে মেসি খেলতে এলে ভালই হবে।”
আলকাসিম আরও বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য দেশের ফুটবলের আরও উন্নতি করা। তাই অবশ্যই মেসি এবং রোনাল্ডোকে একই লিগে দেখতে চাই। তবে সত্যি এটাই যে, আমরা মেসির ব্যাপারে এখনও কিছু জানি না।”
কিছু দিন আগেই জানা গিয়েছিল, সৌদির দুই ক্লাব আল হিলাল এবং আল ইতিহাদ মেসিকে পেতে আগ্রহী। এমনকী, মেসিকে পিএসজি থেকে নিয়ে আসার জন্য যে অর্থ লাগবে সেটা দিতেও রাজি তারা। সরকারি সাহায্যও এ ব্যাপারে পাওয়া যাবে। রোনাল্ডোর থেকে অনেক বেশি টাকায় যোগ দিতে পারেন মেসি, এমন সংবাদও বেরিয়েছিল। কিন্তু আলকাসিমের কথায় পরিষ্কার, এখনও সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে সৌদি লিগে মেসির যোগ দেওয়া এখনও অনিশ্চিত।
গত বৃহস্পতিবারের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই তারকা। সেখানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়লেন না। ফিফা বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখানেই শুরু করেন মেসি। ৩ মিনিটের মাথায় গোল করে ফেলেন তিনি। বক্সের বাইরে থেকে নেমারের ঠিকানা লেখা পাসে সৌদির জাতীয় দলের গোলরক্ষক আল-ওয়াইসকে আরও এক বার পরাস্ত করেন মেসি।
খেলায় দাপট বেশি দেখাচ্ছিল পিএসজি। ১৭ মিনিটের মাথায় সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নেমার। দু’মিনিট পরেই দেখা গেল মেসি-এমবাপে যুগলবন্দি। মেসির পাস থেকে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়। ৩৪ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় সৌদি। বক্সের মধ্যে পিএসজি গোলরক্ষক নাভাস ফাউল করেন রোনাল্ডোকে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। পেনাল্টি নেওয়ার সময় সেই পুরনো সিএর৭-এর ঝলক দেখা যায়।
চার মিনিট পরে ১০ জনে হয়ে যায় পিএসজি। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জুয়ান বার্নেট। তাতে অবশ্য চাপে পড়েনি প্যারিসের ক্লাব। ৪৩ মিনিটের মাথায় এমবাপের ক্রস থেকে দ্বিতীয় গোল করেন মারকুইনোস। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নেমারকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। কিন্তু নেমারের দুর্বল শট বাঁচিয়ে দেন আল-ওয়াইসি। বিরতির আগে ২-১ এগিয়ে যায় পিএসজি।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল করেন রোনাল্ডো। বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পান তিনি। তাঁর শট ওয়ালে লেগে প্রতিহত হলেও ফিরতি বলে সের্জিয়ো র্যামোসের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করে যান রোনাল্ডো। কয়েক মিনিট পরেই নিজের ভুল শুধরে নেন র্যামোস। এমবাপের ক্রস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।
পেন্ডুলামের মতো খেলা দুলছিল। ৫৭ মিনিটের মাথায় আবার সমতা ফেরায় সৌদি অলস্টার। দক্ষিণ কোরিয়ার জাং এ বার গোল করেন। কিন্তু সৌদির ক্লাবের আনন্দ বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২ মিনিট পরে বক্সের মধ্যে মেসির শটে হাত লাগিয়ে পেনাল্টি দেন সৌদির ডিফেন্ডার। এ বার পেনাল্টি নিতে যান এমবাপে। বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনটি পেনাল্টিতেই গোল করেছিলেন তিনি। এ বারও করলেন।
৬০ মিনিটের পরে মেসি, এমবাপে, রোনাল্ডো ও নেমারকে তুলে নেওয়া হয়। বোঝাই যাচ্ছিল, দলের প্রধান ফুটবলারদের নিয়ে বেশি ঝুঁকি নিতে চাননি কোচেরা। ৭৭ মিনিটের মাথায় পিএসজির হয়ে আরও একটি গোল করেন হুগো একিটিকে। খেলার অতিরিক্ত সময়ে সৌদির ক্লাবের হয়ে চার নম্বর গোল করেন ট্যালিস্কা। তাতে অবশ্য পিএসজির জিততে সমস্যা হল না। ১০ জনে প্রায় আধ ঘণ্টা খেলেও ম্যাচ জিতল পিএসজি। সেই সঙ্গে জিতল ফুটবল। ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন হাজার হাজার দর্শক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy