উৎসব: ট্রফি নিয়ে উল্লাস রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলারদের।
৫৯ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোলে ফয়সালা হয়ে গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের। লিভারপুলকে হারিয়ে এই নিয়ে ১৪ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। প্যারিসের স্তাদ দে ফ্রান্স স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকদের নিয়ে সমস্যার জন্য ফাইনাল ম্যাচ শুরু করতে হয় নির্ধারিত সময়ের ৩৫ মিনিট পরে। শেষ পাঁচ মরসুমে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতার ফাইনালে রিয়ালের কাছে হার মানল অ্যানফিল্ডের ক্লাব।
শনিবার গোল করে যদি নায়ক হয়ে থাকেন ব্রাজিলীয় তারকা, তা হলে গোলের নীচে দুর্ভেদ্য হয়ে দলকে সমস্ত ধরনের ঝড় থেকে বাঁচালেন থিবো কুর্তোয়া। তাঁর কাছেই হার মানতে হয় সাদিয়ো মানে, মহম্মদ সালাহদের। কিন্তু ম্যাচের পরে ক্ষোভ উগরে দেন রিয়াল গোলকিপার। জানিয়ে দেন, ফাইনালের আগে গণমাধ্যমে তাঁকে যে ভাষায় বিদ্রুপ করা হয়েছিল, তাতে তিনি অপমানিত।
কুর্তোয়া বলেছেন, ‘‘ম্যাচের আগে প্রচুর টুইট করা হয়েছিল। লেখা হয়েছিল, আমাকে ওরা উড়িয়ে দেবে। তাই ফাইনালটা জেতা আমার কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। এত দিনের কঠোর পরিশ্রমের কিছু পুরস্কার তো থাকবে! সেটা আপাতত এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের ট্রফিটাই।’’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে কুর্তোয়ার মতো কোনও গোলকিপারকে এত ঝড় সামলাতে হয়নি। লিভারপুল ম্যাচে সমতায় ফিরতে সমস্ত ধরনের চেষ্টা করেও হার মেনেছে বেলজিয়াম গোলকিপারের কাছেই। কিন্তু করিম বেঞ্জেমাদের সতীর্থ তা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি না যে ফুটবলে সবসময় আমাকে যথেষ্ট বা প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে খেলার সময়। সে সময় আমার প্রচুর সমালোচনা হত। বারবার বলা হত, আমি নাকি যথেষ্ট ভাল গোলরক্ষকই নই।’’
তবে শনিবারের রাত তাঁর একটি স্বপ্ন পূর্ণ করেছে। এতদিন কুর্তোয়ার কাছে চ্যাম্পয়ন্স লিগ ছিল অধরা। যা নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি দেখেছি, রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেললেই ট্রফি জেতে। আজ আমিও ইউরোপ সেরা দলের একজন সদস্য হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করতে পারলাম! তাই অনেক ধন্যবাদ রিয়ালকে।’’
দলের পারফরম্যান্স নিয়ে কুর্তোয়া বলেছেন, ‘‘এই দল নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। মনে রাখতে হবে, এ বার ট্রফিটা নিয়ে যাচ্ছি ইউরোপের সেরা সব ক্লাবকে হারিয়েই। তা ছাড়া লিভারপুল খুবই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল। মনে হয়, আজ আমি অসাধারণ হয়ে উঠতে পেরেছি বলেই ওদের সঙ্গে পার্থক্য গড়া সম্ভব হয়েছে।’’
ম্যানেজার হিসেবে রিয়ালকে আরও একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তুলে দিয়ে ম্যানেজার কার্লো আনচেলোত্তি জানিয়েছেন, ক্লাবের দীর্ঘ সাফল্যের ইতিহাস এবং প্রশাসনিক কর্তারা তাঁর কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘এমনিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার মতো কঠিন পরীক্ষা আর কিছু হতে পারে না। তবে সেটাই খুব সহজ হয়ে যায়, যখন আপনি রিয়াল মাদ্রিদের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।’’ যোগ করেন, ‘‘ ক্লাব প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কর্তা এবং এই দলের সমর্থকদের দায়বদ্ধতা প্রত্যেক মুহূর্তে ভাল কিছু করার সাহস দেয়।’’
লিভারপুলের বিরুদ্ধে তাঁর কৌশল কি ছিল? আনচেলোত্তি বলেছেন, ‘‘ওরা আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শনে বিশ্বাস করে। আমি তাই নিজের রক্ষণকে শুরু থেকে জমাটবদ্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছিলাম। তা ছাড়া এই রিয়াল দলের প্রত্যেক ফুটবলারের মান এতটা উচ্চস্তরের যে, মাঠে নেমে কী করতে হবে সেটা নিয়ে আমাকে বিশেষ ভাবতে হয়নি।’’
কুর্তোয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে আনচেলোত্তি জানিয়েছেন, এ বারের ট্রফিটা নিশ্চিত হয়েছে প্রাক্তন চেলসি গোলকিপারের জন্য। তিনি বলেছেন, ‘‘থিবো যে ফুটবল খেলেছে, তা আক্ষরিক অর্থে অবিশ্বাস্য। হয়তো এটুকু বলাও ওর জন্য যথেষ্ট নয়।’’ ফাইনালে গোল না পেলেও এই মরসুমে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেঞ্জেমা। ট্রফি জিতে তিনি বলেছেন, ‘‘এই খেতাবের জন্য আমরা লড়াই করে গিয়েছি। অবশেষে সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে।’’
প্রশ্ন উঠছে, এর পরেও কি তিনি বালঁ দ্যর সম্মান পেতে পারেন? বেঞ্জেমা বলেছেন, ‘‘সেটা তো আমি বলতে পারব না। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy