লক্ষ্য: জাতীয় শিবিরে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া ঋত্বিক। টুইটার
বাহরিন ও বেলারুশের বিরুদ্ধে গত মার্চে দু’টি আন্তর্জাতিক ফিফা ফ্রেন্ডলিতে ভারতীয় দলে ডাক না পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন ঋত্বিক দাস। অথচ এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য চব্বিশ ঘণ্টা আগেই কোচ ইগর স্তিমাচ ৪১ জনের প্রাথমিক দলে তাঁকে রাখলেও উচ্ছ্বসিত নন বঙ্গ তারকা!
ঋত্বিকের পাখির চোখ যে চূড়ান্ত দলে সুযোগ পাওয়া। ভারতের জার্সি গায়ে প্রথম একাদশে সুনীল ছেত্রীদের পাশে খেলার জায়গা নিশ্চিত করতে পারলেই তৃপ্ত হবেন তিনি। লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য বার্নপুরের প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেও দু’বেলা একাকী অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন জামশেদপুর এফসি-র হয়ে অষ্টম আইএসএলে লিগ-কাপজয়ী তারকা। বুধবার আনন্দবাজারকে ফোনে ঋত্বিক বললেন, ‘‘জাতীয় শিবিরে ডাক পেয়ে খুশি হয়েছি ঠিকই, কিন্তু উচ্ছ্বসিত নই। আমার লক্ষ্য চূড়ান্ত দলে জায়গা পাওয়া, প্রথম একাদশে খেলা। তা হলেই স্বপ্নপূরণ হবে।’’
স্বপ্ন পূরণ করার জন্য প্রস্তুতি এই মুহূর্তে তুঙ্গে ঋত্বিকের। বলছিলেন, ‘‘বার্নপুর রিভারসাইড মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করছি। জিমে ফিটনেস ট্রেনিং করছি।’’ কার কাছে অনুশীলন করছেন? বঙ্গ মিডফিল্ডারের কথায়, ‘‘জামশেদপুরের ফিজ়িক্যাল ট্রেনার সূচি বানিয়ে দিয়েছেন। মাঠে নেমে বল নিয়ে অবশ্য একাই অনুশীলন করছি।’’
অষ্টম আইএসএলে ১৭টি ম্যাচ খেলেছেন ঋত্বিক। গোল করেছেন চারটি। গোলে সহায়তা একটি। ঋত্বিকের খেলার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন জামশেদপুরের প্রাক্তন কোচ আওয়েন কয়েল, সতীর্থ ড্যানিয়েল চিমা। যদিও ঋত্বিক মনে করেন, তাঁর খেলায় আরও উন্নতি দরকার। জাতীয় দলের শিবিরে যোগ দেওয়ার আগেই ভুলভ্রান্তি শুধরে নিতে মরিয়া তিনি। বলছিলেন, ‘‘আইএসএলে নিজের খেলা বিশ্লেষণ করে আমার মনে হয়েছে, একাধিক জায়গায় আরও উন্নতি করতে হবে। যেমন—অনুমান ক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাস আরও নিখুঁত দিতে হবে। বলের উপরে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হবে। ইচ্ছে আছে, জাতীয় শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে সুনীল ছেত্রীর পরামর্শ নেওয়ারও।’’
লড়াই করে লক্ষ্যে পৌঁছনোর পরীক্ষা অবশ্য শৈশব থেকেই দিয়ে চলেছেন ঋত্বিক। রাত তিনটের মধ্যে ঘুম থেকে উঠে আসানসোল থেকে ভোর পাঁচটার ট্রেনে মায়ের সঙ্গে মোহনবাগান মাঠে অনুশীলন করতে আসতেন। তখন বয়স মাত্র বারো ঋত্বিকের। বাড়ি ফিরতে রাত প্রায় ন’টা বেজে যেত। দু’বছর ধরে এটাই ছিল ঋত্বিকের রোজনামচা।
মোহনবাগানে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়ে যোগ দেন কাস্টমসে। সেখান থেকে কালীঘাট এমএস। তার পরে রিয়াল কাশ্মীরে। আই লিগের প্রথম ডিভিশনে কাশ্মীরের দলের ওঠার নেপথ্যেও অন্যতম কারিগর ছিলেন ঋত্বিক। তার পরেই ধাক্কা। চোটের কারণে খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি। সুস্থ হয়ে পরের মরসুমে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটান। আইএসএলের ক্লাব কেরল ব্লাস্টার্স সই করায় ঋত্বিককে। যদিও অভিষেকের মরসুম খুব একটা সুখের হয়নি তাঁর। কেরলের জার্সিতে খুব কম ম্যাচেই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।
কেরল ছেড়ে জামশেদপুরে সই করার পরেই জীবন বদলে যায় ঋত্বিকের। আগামী মরসুমে তাঁকে নেওয়ার জন্য ইস্টবেঙ্গল, এটিকে-মোহনবাগান ছাড়াও একাধিক ক্লাব আগ্রহ দেখিয়েছে। ঋত্বিক অবশ্য বলছেন, ‘‘এখনই আমি এই ব্যাপারে কিছু ভাবতে চাই না। আমার একমাত্র লক্ষ্য জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy