বহু ম্যাচ আমি দেখেছি। কিন্তু কখনও এমন প্রত্যাঘাত করে ফাইনালে ওঠার অভিজ্ঞতা হয়নি।’’ ক্লপই প্রথম ব্যক্তি, যাঁর কোচিংয়ে একই মরসুমে কোনও ক্লাব এফএ কাপ, লিগ কাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠল।
দুরন্ত: নিজের দ্বিতীয় গোল করে রদ্রিগো। বুধবার। গেটি ইমেজেস
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
রিয়াল মাদ্রিদ ৩ ম্যান সিটি ১
(দুই পর্ব মিলিয়ে রিয়াল ৬-৫)
ভিয়ারিয়াল ২ লিভারপুল ৩
(দুই পর্ব মিলিয়ে লিভারপুল ৫-২)
অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। বুধবার রাতে বের্নাবাউতে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে ৩-১ গোলে (দুই পর্ব মিলিয়ে ৬-৫) হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে লিভারপুলের সামনে রিয়াল মাদ্রিদ। নেপথ্যে ২১ বছর বয়সি ব্রাজিলীয় তারকা রদ্রিগো সিলভা দে গোয়েস।
সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ঘরের মাঠে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল ম্যান সিটি। ফাইনালে ওঠার জন্য বুধবার করিম বেঞ্জেমাদের অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততেই হত। কিন্তু ৭৩ মিনিটে বিপর্যয় নেমে আসে রিয়াল শিবিরে। বের্নার্দো সিলভার পাস থেকে গোল করে ম্যান সিটিকে এগিয়ে দেন রিয়াদ মাহরেজ়। কে ভেবেছিল নাটকীয় ভাবে বদলে যাবে ম্যাচের ছবিটা? ৯০ মিনিটে বেঞ্জেমার পাস থেকে ১-১ করেন রদ্রিগো। এক মিনিটের মধ্যেই ম্যান সিটি ডিফেন্ডারদের ভুলে হেডে রিয়ালকে ২-১ এগিয়ে দেন ব্রাজিলীয় তারকা। দুই পর্ব মিলিয়ে ফল ৫-৫ হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ৩-১ করেন বেঞ্জেমা। ২০১৭-’১৮ মরসুমে লিভারপুলকে হারিয়েই ১৩তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল রিয়াল। এ বার কী হবে?
মঙ্গলবার ভিয়ারিয়াল-কাঁটা উপড়ে ফেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল লিভারপুল। ম্যাচের তিন মিনিটে বাউলায়ে দিয়া এবং ৪১ মিনিটে ফ্রান্সিস কোকেলিনের গোলে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল। সেই সময় দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচের ফল দাঁড়ায় ২-২। কিন্তু ম্যাচের রং পাল্টে যায় ৬২ মিনিটে ফাবিয়ানো লিভারপুলের হয়ে প্রথম গোল করার পরে। সেখানেই উনাই এমেরির দলের যাবতীয় প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। ৬৭ মিনিটে লুইস দিয়াজ় এবং ৭৪ মিনিটে এই মরসুমে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সাদিয়ো মানের গোলে লিভারপুল পেয়ে যায় ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র। দুই লেগ মিলিয়ে ফল দাঁড়ায় ৫-২।
এই মরসুমে চতুর্মুকুট জয়ের সোনালি হাতছানি রয়েছে য়ুর্গেন ক্লপের দলের সামনে। সেই স্বপ্ন কি সত্য হবে? মঙ্গলবার লিভারপুলের অবিশ্বাস্য ফুটবল দেখার পরে শুরু হয়ে গিয়েছে ফুটবলমহলে চর্চা। গ্যারি লিনেকার থেকে জিমি ক্যারাঘারের মতো প্রাক্তনরা মনে করেন, ক্লপের ছোঁয়ায় লিভারপুলের যে ফুটবল দর্শনে আমূল পরিবর্তন হয়েছে, তা ভিয়ারিয়াল ম্যাচে জয়ই প্রমাণ করে দিয়েছে। ফলে মরসুমে চতুর্মুকুট জয়কে কোনও অবস্থাতেই অমূলক মনে করা যাচ্ছে না।
ম্যাচের পরে সেই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও দলের অকল্পনীয় লড়াকু মানসিকতা বিস্মিত করে দিয়েছে প্রাক্তন বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ম্যানেজারকে। ক্লপ বলেছেন, “একটা দলের লড়াকু মানসিকতা যে কোন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে, সেটা আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছে বার্সেলোনা ম্যাচের স্মৃতি। বলেছেন, ‘‘বার্সেলোনা আর ডর্টমুন্ডের (বরুশিয়া) সঙ্গে খেলায় আমাদের প্রত্যাঘাতের সঙ্গে এই ম্যাচের তুলনা করব। ০-২ পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ বার করা গিয়েছে, বিশ্বাস হচ্ছে না। একটা সময় মনে হচ্ছিল ওরা তৃতীয় গোলও পেয়ে যাবে। বহু ম্যাচ আমি দেখেছি। কিন্তু কখনও এমন প্রত্যাঘাত করে ফাইনালে ওঠার অভিজ্ঞতা হয়নি।’’ ক্লপই প্রথম ব্যক্তি, যাঁর কোচিংয়ে একই মরসুমে কোনও ক্লাব এফএ কাপ, লিগ কাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy