চারমূর্তি: মহড়ায় বুমোস, কিয়ান, কামিংস ও দিমিত্রি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
হেক্তর ইউতসেকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে যুবভারতীর সাংবাদিক সম্মেলন কক্ষে জুয়ান ফেরান্দো যখন প্রবেশ করলেন, দেখে মনে হল যেন অকূল সমুদ্রে দিকভ্রষ্ট এক নাবিক! নির্বাসনমুক্ত হয়ে আশিস রাই ও হেক্তর ফিরলেও মোহনবাগান রয়েছে সেই তিমিরেই। কারণ, রক্ষণের আর এক ভরসা ব্রেন্ডন হামিল যে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন।
দিন চারেক আগে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচের প্রধান সমস্যা ছিল লাল কার্ড দেখে ছিটকে যাওয়া হেক্তরের জায়গায় ব্রেন্ডনের সঙ্গে রক্ষণে কাকে খেলাবেন তা নিয়েই। শেষ পর্যন্ত সুমিত রাঠিকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে গিয়েছিল। ১-৪ গোলে লজ্জার হারের পরে সমর্থকদের ‘গো ব্যাক’ চিৎকারের মধ্যে মাঠ ছেড়েছিলেন জুয়ান। আজ, বুধবার যুবভারতীতে কেরল ব্লাস্টার্সের সঙ্গে দ্বৈরথ শুধুমাত্র ম্যাচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে সমর্থকদের আবেগও। গত মরসুমে মোহনবাগানকে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ক প্রীতম কোটাল এ বার কেরলে। সবুজ-মেরুন জনতা মনে করে, প্রীতমকে বাধ্য করা হয়েছিল মোহনবাগান ছাড়তে। এ ছাড়াও রয়েছেন সবুজ-মেরুনের আর এক প্রাক্তনী প্রবীর দাসও।
মুম্বই সিটি এফসি ও এফসি গোয়ার কাছে হারের পর থেকেই সমর্থকদের ক্ষোভ বাড়ছে। বুধবার যদি কেরলের কাছেও হারেন দিমিত্রি পেত্রাতসরা, পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে। সমর্থকদের অধিকাংশই শুনতে রাজি হবেন না চোটের কারণে আনোয়ার আলি, আশিক কুরুনিয়ন, ব্রেন্ডন হামিলকে পাওয়া যায়নি। চার ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছেন লিস্টন কোলাসো। সুস্থ নন সাহাল আব্দুল সামাদ। এ দিন অনুশীলনই করলেন না তিনি। এমনকি হায়দরাবাদ এফসি ছেড়ে চিংলেনসানা সিংহের মোহনবাগানে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠার খবরও সমর্থকদের ক্ষোভের আগুন নেভানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়।
জুয়ান নিজেও উপলব্ধি করছেন যে তিনি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির উপরে বসে রয়েছেন। কেরলের কাছে হারলেই অগ্নুৎপাত শুরু হয়ে যাবে। মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে মোহনবাগান কোচ বলেই ফেললেন, ‘‘হেক্তর ও আশিস ফিরছে ঠিকই। পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’ আপনি নিজে কতটা চাপে রয়েছেন? জুয়ানের কথায়, ‘‘আমি নিজেকে নিয়ে ভাবছি না। ফুটবলারদের মধ্যে কারা সম্পূর্ণ সুস্থ খুঁজে বার করে সেরা প্রথম একাদশ নির্বাচন করাই প্রধান লক্ষ্য।’’ হেক্তর বলেই ফেললেন, ‘‘ব্রেন্ডনকে ছাড়া খেলা কঠিন।’’
কেরলের বিরুদ্ধে রণকৌশল বদল করবেন জুয়ান? অভিজ্ঞ লেফ্টব্যাক শুভাশিস বসুকে কি হেক্তরের সঙ্গে স্টপার হিসেবে খেলাবেন? কারণ, চোটের কারণে আদ্রিয়ান লুনা ছিটকে গেলেও কেরলের আক্রমণভাগে ফুল ফোটাচ্ছেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। ছন্দে রয়েছেন কাওয়ামি পেপরা। কেরলের বিরুদ্ধে কি রক্ষণ শক্তিশালী করে খেলবে মোহনবাগান? আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্বাসী জুয়ানের কথায়, ‘‘আগের ম্যাচ জিতে মানসিক ভাবে আমাদের চেয়ে ভাল জায়গায় রয়েছে কেরল। তা সত্ত্বেও জেতা ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবছি না।’’
শেষ দু’টি ম্যাচে ছ’গোল খেয়েছে মোহনবাগান। করেছে মাত্র দু’টি গোল। স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতাও অস্বস্তি বাড়াচ্ছে সবুজ-মেরুন শিবিরে। যদিও জুয়ান বলছেন, ‘‘কে গোল করছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। দলের প্রত্যেকেরই গোল করার ক্ষমতা রয়েছে।’’
কেরলকে হারিয়ে নতুন বছরকে দিমিত্রিরা স্বাগত জানাতে পারবেন কি না, সময়ই বলবে।
বুধবার আইএসএলে: মোহনবাগান বনাম কেরল ব্লাস্টার্স (যুবভারতীতে রাত ৮.০০। স্পোর্টস ১৮ নেটওয়ার্কে সরাসরি)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy