মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। — ফাইল চিত্র।
শনিবার যুবভারতীতে চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে ম্যাচ ৮৫ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকলেও মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনার এক বারও মনে হয়নি যে তিন পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে। তিনি আশাবাদী ছিলেন যে ম্যাচের শেষ দিকে ভাল কিছুই হবে। সেই আশাতেই রিজ়ার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের নামান তিনি। সেই আশা পূরণ হয়েছে। গ্রেগ স্টুয়ার্ট এবং জেসন কামিংস নামতেই বদলে যায় মোহনবাগানের খেলা। অন্য দিকে ম্যাচের সেরা স্টুয়ার্ট জানিয়েছেন, দলের জয়টাই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
চেন্নাইয়িন ম্যাচের পর মোলিনা বলেছেন, “কখনও ভাবিনি যে ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। দলের ওপর আস্থা আছে। জানতাম যে কোনও সময় গোল হবে। সেই আশাতেই পরিবর্তনগুলো করেছিলাম যাতে ওরা জেতাতে পারে। মাঠে দল নামালে আমি কখনও হাল ছাড়ি না। এক গোলে পিছিয়ে থাকলেও মনে হত আমরা ড্র করতে পারি। ইতিবাচক মানসিকতা থাকলে ভাগ্যও সঙ্গ দেয়।”
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে দিমিত্রি পেত্রাতোসের জায়গায় নামা স্টুয়ার্ট সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। প্রথমে তাঁর শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল মনবীর, আশিসের পা ঘুরে যখন ফের বক্সের বাইরে তাঁর পায়ে আসে তখনই তিনি গোলের পাস বাড়ান কামিংসকে। বক্সের মাথা থেকে সোজা গোলে শট নেন কামিংস। এক মাস পরে মাঠে নামা স্কটিশ মিডফিল্ডার শেষ বেলায় মাতিয়ে দিয়েছেন।
ম্যাচের পর স্টুয়ার্ট বলেছেন, “পোস্টে লেগে বলটা আমার কাছে ফিরে আসার পরেই দেখি জেসন ভাল জায়গায় আছে। ওকেই বলটা দিই। অসাধারণ ফিনিশ করেছে। দলের জয়ে আমি খুব খুশি। ওদের কোচ ওয়েন কোয়েলকে খুব ভাল করে চিনি। জানতাম ম্যাচটা আমাদের কাছে কঠিন হবে। তাই তিন পয়েন্ট পাওয়াটা খুবই জরুরি ছিল।” মাত্র দশ মিনিট মাঠে থেকে ম্যাচের সেরার খেতাব পাওয়া নিয়ে স্টুয়ার্টের মন্তব্য, “মাত্র পাঁচ-দশ মিনিট খেলে ম্যাচের সেরার খেতাব পাওয়াটা আমার কাছে বড় চমক। কোচ যখন বলেন আমি পুরস্কারটা পেয়েছি, তখন হেসে ফেলি। তবে ম্যাচের সেরা হওয়ার চেয়ে দলের জয়টা কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
চোট সারিয়ে নামা স্টুয়ার্ট জানালেন, এক মাস না খেলার কথা এক বারও ভাবেননি বলেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। বলেছেন, “গত দুটো ম্যাচে চোটের জন্য খেলতে পারিনি। আজ মাঠে নামার পরেই মনে হচ্ছিল দলকে সাহায্য করতে পারি। মনে হয়েছিল দলকে সাহায্য করতে পারি। সেটা করে দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিতে পেরে ভাল লাগছে। আরও ভাল লাগছে জেসনের জন্য।”
তবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন তা স্বীকার করে নিয়েছেন স্টুয়ার্ট। বলেছেন, “আমি পুরো সুস্থ হয়ে মাঠে নেমেছি তা নয়। এখনও ব্যথা রয়েছে। তবে জানতাম ১০-১৫ মিনিট খেলতে পারলে দলকে সাহায্য করতে পারব। হয়তো আরও গোল পেতে পারতাম। আমারই শট বারে ও পোস্টে লেগে ফিরে আসে।”
৮৫ মিনিট গোল করতে না পারলেও মোলিনার মতে, জেমি ও দিমি ভালই খেলেছেন। দুর্ভাগ্য ছিল বলে গোল পাননি। মোলিনার কথায়, “জেমিকে যখন ক্লান্ত লাগছিল তখন কামিংসকে নামানোর কথা ভাবি। দিমি তখনও ভাল খেলছিল। শেষ দিকে আরও ভাল কিছু হওয়ার আশায় গ্রেগকে নামাই। সেটাই হয়েছে। দল এবং গ্রেগের জন্য খুশি। কামিংসের গোলটা খুবই ভাল। আবার পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে উঠেছি। এ বার পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আরও কঠিন হবে।”
সামগ্রিক ভাবে দলের পারফরম্যান্স নিয়েও খুশি বাগান কোচ। বলেছেন, “আমার মনে হয় দুটো দলই ভাল খেলেছে। চেন্নাইয়িন ভাল খেলবে এমন প্রত্যাশা আমাদের ছিলই। ওরা ব্যক্তিগত মার্কিং ভাল করেছে। দিমিকে সমানে পাহারায় রেখেছিল ওদের পাঁচ নম্বর (এলসিনহো)। দিমিকে খুব একটা বেশি সুযোগ দেয়নি। আপুইয়া ভাল বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সে জন্যই সাহালকে নামাই। চেন্নাইয়িন অনেক লং বল, ক্রস করে আমাদের চাপে ফেলেছে। তবে আমাদের ডিফেন্ডাররাও ভাল খেলেছে। প্রতিপক্ষের গোলের সামনে যারা ভাল খেলে তারাই জেতে। আমরা এই ব্যাপারে এগিয়ে ছিলাম।”
চেন্নাইয়িন ম্যাচে আলবের্তো রদ্রিগেস ও শুভাশিস বসু হলুদ কার্ড দেখায় তাঁরা নর্থইস্ট ম্যাচে খেলতে পারবেন না। মোলিনা কিছুটা হলেও চিন্তিত। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে কঠিন পরিস্থিতি। কারণ হাতে বেশি ডিফেন্ডার নেই। তবে এই সমস্যার উপযুক্ত সমাধান পাওয়ার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। দলের একাধিক খেলোয়াড় বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারে। আগামী সপ্তাহে অনুশীলনে অনেককে দেখতে হবে। দেখা যাক কী হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy