লিমা গোল করলেও জিততে পারল না ইস্টবেঙ্গল। ছবি টুইটার
মরসুম শুরুর আগেই ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন বলেছিলেন, দল প্লে-অফে গেলে তা অলৌকিক হবে। কেন এ কথা বলেছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল প্রথম ম্যাচেই। আইএসএলের প্রথম ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে ১-৩ গোলে হেরে মরসুম শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। গত দু’বারের থেকে এ বার তাদের দল অনেক ভাল এবং অভিজ্ঞ। তা সত্ত্বেও প্রথম ম্যাচে হার আটকানো গেল না। চিন্তায় রাখল ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ। কেরলের হয়ে জোড়া গোল করলেন ইভান কালিউঝিনি। একটি গোল আদ্রিয়ান লুনার। ইস্টবেঙ্গলের একমাত্র গোল অ্যালেক্স লিমার।
দু’বছর পরে হোম এবং অ্যাওয়ে ফরম্যাটে ফিরেছে আইএসএল। ফলে কোচির স্টেডিয়ামে আবার তৈরি হল সর্ষের ক্ষেত। হলুদ জার্সি পরে ম্যাচের অনেক আগে থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন সমর্থকরা। ম্যাচের এক ঘণ্টা আগেই ৬০ হাজারের স্টেডিয়ামের ৭৫ শতাংশ পূর্ণ হয়ে যায়। ভরা গ্যালারির সামনে খেলা যে চাপ, সেটা কনস্ট্যান্টাইন অস্বীকার করেননি। দেখা গেল, সেই চাপ সামলাতে না পেরে কেঁপে গেলেন তাঁর ফুটবলাররাও। শুরু থেকেই ম্যাচের দাপট ছিল কেরলের। শেষ মিনিট পর্যন্ত সেই দাপট অব্যাহত থাকল। সুযোগ ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারলে তাদের জয়ের ব্যবধান অনেক বেশি হতে পারত। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ ভাগের যা হাল, তা অবিলম্বে মেরামত না করতে পারলে এ বারও কপালে দুঃখ থাকতে পারে।
কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই ম্যাচের শুরুতে প্রায় গোল পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বক্সের থেকে কিছুটা দূরে বল পেয়েছিলেন অ্যালেক্স লিমা। বাঁ পায়ের নীচু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দেন প্রভসুখন গিল। এর পর থেকে পুরো প্রথমার্ধেই দাপিয়ে খেলল কেরল। আদ্রিয়ান লুনা, দিমিত্রিয়োস দিয়ামাঙ্কোসরা বার বার হানা দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের বক্সে। লাল-হলুদের ভরসা ছিল প্রতি আক্রমণ। কিন্তু তাদের ফুটবলাররা সে ভাবে বল ধরে রাখতেই পারছিল না। কেরল ভুগছিল শেষ ধাপে। ফাইনাল থার্ডে তাদের আক্রমণ কিছুতেই জমাট বাঁধছিল না।
২৬ মিনিটে হঠাৎই দুই দল ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। ঝামেলার সূত্রপাত ইভান গঞ্জালেজের একটি ফাউলকে ঘিরে। দিয়ামাঙ্কোসকে ফাউল করেন ইভান। কিন্তু রেফারি খেলা চালু রাখেন। তবে কেরলের জিকসন সিংহ রেফারির সিদ্ধান্তে খুশি হননি। তিনি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের উপর চড়াও হন। দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সামান্য হাতাহাতি হয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। যদিও ইস্টবেঙ্গলের খেলায় বদল আসেনি। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবেই।
দ্বিতীয়ার্ধে পর পর দু’টি দুর্দান্ত সেভ করেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার কমলজিৎ সিংহ। প্রথমে আপোস্তোলোস জিয়ান্নুর শট বাঁচান। এর পর লুনার শট বুক দিয়ে সেভ করেন। ৫৭ মিনিটে দিয়ামাঙ্কোসের জার্সি টেনে ধরে রাখার কারণে অহেতুক হলুদ কার্ড দেখেন ইস্টবেঙ্গলের লালচুংনুঙ্গা। আক্রমণ ভাগ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ভিপি সুহেরকে নামিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। তাতে লাভ হয়নি। উল্টে কয়েক মিনিট পর গোল করে এগিয়ে যায় কেরলই।
মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ ভাসানো ক্রস দিয়েছিলেন লাল-হলুদেরই প্রাক্তন ফুটবলার হরমনজ্যোত খাবরা। চলতি বলেই ঝাঁপিয়ে বাঁ পায়ের টোকায় কমলজিতের মাথার উপর দিয়ে গোল করেন লুনা। উত্তাল হয়ে পড়ে কোচির স্টেডিয়াম। ঠিক যে দৃশ্য দেখা যেত দু’বছর আগে কোচিতে খেলা থাকলেই, শুক্রবার সেই দৃশ্য ফিরে এল। দু’মিনিট পরেই পুইতিয়ার শট বাঁচিয়ে দেন কমলজিৎ।
তবে ৮২ মিনিটে কেরল যে ভাবে দ্বিতীয় গোলটা দিল, তা বহু দিন চিন্তায় রাখবে কনস্ট্যান্টাইনকে। মাঝমাঠ থেকে একটু এগিয়ে বল পান সদ্য পরিবর্ত হিসাবে নামা ইভান কালিউঝিনি। সোজা দৌড়ে অবলীলায় ইস্টবেঙ্গলের তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে জড়ান।
৮৬ মিনিটে এক গোল শোধ দেন অ্যালেক্স লিমা। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করেন কেরলের ডিফেন্ডাররা। চলতি বলে ভলিতে গোল করেন ব্রাজিলীয় মিডফিল্ডার। তার পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় কেরল। ঠিক লিমার মতোই গোল করেন কেরলের ইভান। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের এক ডিফেন্ডার। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে কেরলের জয় নিশ্চিত করেন ইভান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy