নতুন বছর কেমন কাটবে সুনীলদের ফাইল ছবি
গত বছর আশানুরূপ যায়নি। নতুন বছর কেমন কাটবে ভারতীয় ফুটবল দলের? শুক্রবার দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচের ঘোষণা করার পর এটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন। আগামী ২৩ এবং ২৬ মার্চ যথাক্রমে বাহরিন এবং বেলারুসের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন সুনীল ছেত্রীরা। পাখির চোখ পরের বছর চীনে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করা। সেই লক্ষ্যে কি সফল হবে ইগর স্তিমাচের দল?
গত বছর সাফ প্রতিযোগিতা বাদ দিলে সুনীলদের হাতে বলার মতো কিছুই নেই। সাফে যারা খেলে, সেই দেশগুলি র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের থেকে অনেক নীচে। তবু বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিরুদ্ধেও ড্র করেছিল তারা। মরণ-বাঁচন ম্যাচে নেপালকে কোনও মতে হারানোর পরেই ছন্দ ফিরে পায় দল। কিন্তু এশিয়ান কাপের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলি ধারে-ভারে অনেক এগিয়ে। সেখানে কি দাঁত ফোটাতে পারবে ভারত?
২০১৯-এর এশিয়ান কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পরেই চাকরি গিয়েছিল কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনের। তাঁর জায়গায় আসেন ক্রোয়েশিয়ার স্তিমাচ, যিনি ১৯৯৮ সালে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি যে ভারতীয় ফুটবলে আমূল বদল ঘটাতে পেরেছেন, এমন কথা অতি বড় ভারতীয় ফুটবল সমর্থকও বলতে পারবেন না। গত বছর তাঁর কোচিংয়েই সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছে ছয় গোল হজম করেছিল ভারত। বারবার তাঁর দল নির্বাচন, কৌশল প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কনস্টানটাইনের সময় যে ভাবে তরুণ ফুটবলারদের তুলে আনার উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল, সেটাও ইদানিং দেখা যাচ্ছে না।
গত বারের এশিয়ান কাপে তাইল্যান্ডকে ৪-১ গোলে হারিয়ে সাড়া জাগিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল ভারত। পরের ম্যাচেই আমিরশাহির কাছে ০-২ হারতে হলেও ভারতের লড়াই মন কেড়ে নিয়েছিল। শেষ ম্যাচে বাহরিনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে গোল হজম করতে হয়। ড্র করলেই পরের পর্বে যেত ভারত। কিন্তু কনস্টানটাইনের রক্ষণাত্মক কৌশল শেষ মুহূর্তে ভেঙে পড়ে। দায় স্বীকার করে ব্রিটিশ কোচ সরে যান। স্তিমাচ এসেই ভারতীয় ফুটবলে বদলের ডাক দিয়েছিলেন। সেই বদল এখনও আসেনি। হাতে শুধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, যেখানে ভারত বরাবরের রাজা।
জাতীয় দল গড়তে ভারতীয় কোচেরা ইদানীং আইএসএল-এর দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় দলের যিনি রক্ষাকর্তা, সেই সুনীলের ছন্দ এ বার খুবই খারাপ। ১৪টি ম্যাচ খেলে মাত্র একটি গোল করেছেন। গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধুও ১৩ ম্যাচে ১৯ গোল খেয়ে বসে আছেন। এটিকে মোহনবাগানে খেলা আর এক গোলকিপার অমরেন্দ্র সিংহের অবস্থাও একই রকম। একমাত্র এটিকে মোহনবাগানে খেলা জাতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সন্দেশ জিঙ্ঘন বাদে বাকিরা মোটামুটি ছন্দে রয়েছেন। কিন্তু আসল প্রশ্ন হল, ভারত এখনও সুনীলের পরিবর্ত খুঁজে পায়নি। ৩৭ বছরের সুনীলের কেরিয়ারে আর কিছু বছর বাকি। তারপর জাতীয় দলের হয়ে গোল করবেন কে? স্তিমাচ নিজেও সম্ভবত সেই উত্তর জানেন না।
মার্চে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আগে আইএসএল শেষ হয়ে যাবে। ফলে স্তিমাচ দেখে নিতে পারবেন কোন ফুটবলাররা ছন্দে রয়েছেন। পাশাপাশি চিন্তাও থাকবে, বাকি প্রতিযোগিতায় যাতে কেউ চোট না পেয়ে বসেন। জুনে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বই স্তিমাচের কাছে অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে। এমনিতে ভারতের বিরুদ্ধে কঠিন কোনও দলের পড়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু র্যাঙ্কিংয়ে ২০৪ নম্বরে থাকা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যারা ড্র করে, সেই দলকে নিয়ে অনেক সমর্থকই এখন অনিশ্চয়তায় ভোগেন। তাই এশিয়ান কাপে যে ভারত খেলবেই, সে কথা কেউ জোর দিতে বলতে পারছেন না।
চোখ আপাতত জুন মাসেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy