অবসর নেওয়ার পর মুরলিন বেছে নিয়েছেন ধর্মের পথ। প্রতীকী ছবি।
অবসর নেওয়ার পর খেলোয়াড়রা বিভিন্ন পেশা বেছে নেন। কেউ প্রশিক্ষণ দেন, কেউ ক্রীড়া প্রশাসক হিসাবে কাজ করেন। কেউ বেছে নেন বিশেষজ্ঞের পেশা। কেউ ব্যবসা বা অন্য কোনও পেশাকে বেছে নেন অবসর জীবনে।
কলকাতায় খেলে যাওয়া নাইজ়িরিয়ার ফুটবলার চিবুজোর অবসর জীবনে হয়েছেন ধর্মযাজক। তিনি এখন মানুষকে সত্য, মুক্তির পথে চালনা করেন। তাঁর মতোই ফুটবল ছাড়ার পর যাজকের কাজ বেছে নিয়েছেন আরও এক ফুটবলার। তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন মিডফিল্ডার ফিল মুলরিন। ফুটবলার জীবনে এক সময় বছরের প্রায় ৬ কোটি টাকা আয় করতেন মুরলিন। থাকতেন সুন্দরী পরিবেষ্টিত হয়ে। অবসরের পর বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে ধর্মের পথে পা বাড়িয়েছেন মুরলিন।
৪৪ বছরের প্রাক্তন ফুটবলার উঠে এসেছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অ্যাকাডেমি থেকে। পেশাদার ফুটবলার জীবনে সেরা সময় তিনি খেলেছেন নরউইচ সিটির হয়ে। ছ’বছর তিনি ছিলেন নরউইচের মাঝ মাঠের ভরসা। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন আন্তর্জাতিক ফুটবল। ১২ বছর পেশাদার ফুটবল খেলার পর মুরলিন অবসর নেন ২০০৯ সালে। অবসর নেওয়ার পর চাইলে ফুটবলের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন ধর্মের পথ। মুরলিন এখন রোমান ক্যাথলিক যাজক।
পেশাদার ফুটবলার জীবনের শেষ দিকে বাইবেল পড়তে শুরু করেন পিটার ক্রাউচের প্রাক্তন সতীর্থ। পরে বাইবেলের প্রতি তাঁর আকর্ষণ আরও বাড়ে। খেলোয়াড় জীবন নিয়ে তিনি খুশি। মুরলিন বলেছেন, ‘‘এক জন ফুটবলার হিসাবে দুর্দান্ত জীবন কাটিয়েছি। আমি অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি খেলোয়াড় জীবনে। জীবনে অনেক কিছুই পেয়েছি। তবু আমার চারপাশে একটা শূন্যতা ছিল। ওই বয়সের এক জন যুবক যা যা চায়, আমার কাছে সব ছিল। তবু একটা কিছুর অভাব অনুভব করতাম।’’
কী ভাবে নতুন জীবনে পা রাখলেন? মুরলিন জানিয়েছেন, খেলা ছাড়ার পর এক বছর বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই এক বছরই তাঁর জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘স্বেচ্ছায় কিছু দিন গৃহহীনদের আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতাম। তখনই ঈশ্বরের প্রতি আমার ভরসা বাড়তে শুরু করে। প্রতি দিন প্রার্থনা করতাম। ওই শিবিরে থাকার সময় নিজের মধ্যে একটা পরিপূর্ণতার অনুভূতি তৈরি হয়েছিল। ফুটবলার জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই দেখেছি। আর ওখানে তৈরি হওয়া স্থিরতার অনুভূতি আমাকে তৃপ্ত করেছিল।’’
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের আক্যাডেমি থেকে উঠে আসা প্রাক্তন ফুটবলারের ২০১৭ সাল থেকে রেভারেন্ড ফাদার ফিল মুলরিন। কাজ করছেন আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কর্কের সেন্ট মেরি প্রাইরি চার্চে। মাত্র ৩১ বছর বয়সে ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার আক্ষেপ নেই তাঁর। বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে আসার আক্ষেপও নেই। তিনি বলেছেন, ‘‘গৃহহীনদের শিবিরে থাকার সময় আমি ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। তখনই ঠিক করেছিলাম, যাজকের পেশা বেছে নেব। এই জীবনধারার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেছিলাম। কয়েক মাস এই পরিবেশে থাকার পর যাজক হওয়ার সাহস পেয়েছিলাম। জীবনের আট বছর এই পথে কাটিয়েও ফেললাম।’’
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তাঁকে ফুটবলার হিসাবে তৈরি করলেও নরউইচের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। যেমন জেভিয়ার জানেত্তি এবং য়ুরগেন ক্লিন্সম্যানের সঙ্গে খেলার কথা কখনও ভুলতে পারবেন না তিনি। যদিও এখন তিনি ফুটবল থেকে অনেক দূরে। ধর্মের আশ্রয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy