প্রয়াত চিবুজোর। ফাইল ছবি
প্রয়াত হলেন কলকাতা ময়দানে এক সময় দাপিয়ে খেলে যাওয়া চিবুজোর। বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার নিজের দেশেই প্রয়াত হয়েছেন। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং সন্তানকে।
১৯৮৬ সালে প্রথম বার কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দেন চিবুজোর। ১৯৯৩ সালে তিনি যোগ দেন মোহনবাগানে। সেই সময় তাঁর সঙ্গী বার্নাড, ক্রিস্টোফারের মতো ফুটবলাররা। তিনজনকে একসঙ্গে ‘তিনমূর্তি’ বলে ডাকা হত। তবে চিবুজোরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিলেন চিমা ওকোরি। প্রিয় বন্ধুর এ ভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না চিমা। মোহনবাগানে খেলার পর মহমেডানেও খেলেছেন চিবুজোর। কলকাতার তিন প্রধানের হয়েই দাপটের সঙ্গে খেলেছেন তিনি। দুর্দান্ত স্পট জাম্প দিতে পারতেন। হেডিংও ছিল খুবই ভাল।
এমেকার সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল চিবুজোরের। সেই এমেকা শুক্রবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভারতীয় ফুটবলে খেলা এক তারকা চলে গেল। এখনও কিছু বলার ভাষা নেই। আমরা পরিবারের থেকেও বেশি কিছু ছিলাম। ও আমার ভাইয়ের মতো ছিল। চোখ দিয়ে জল বেরোচ্ছে না, কিন্তু আমি কাঁদছি। অনেক দিন একসঙ্গে কাটিয়েছি।”
তিন প্রধানে খেলা ছাড়াও টালিগঞ্জ অগ্রগামীতে অনেকটাই সময় কাটিয়েছেন তিনি। চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে খেলার পর ফুটবলের জার্সি চিরকালের মতো তুলে রাখেন। ধর্মের প্রতি ছোটবেলা থেকেই টান ছিল। ফুটবল খেলার সময়েও ব্যাগে সব সময় থাকত একটি বাইবেল। দেশে ফিরে গিয়ে ধর্মেকর্মেই মন দেন। এক গির্জার পাদ্রী হয়ে যান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই কাজই করেছেন। পাশাপাশি খুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিতেন বলেও শোনা গিয়েছে।
মজা এবং খুনসুটির মাধ্যমে সতীর্থদের মাতিয়ে রাখতে চিবুজোরের জুড়ি ছিল না। সারাক্ষণ সতীর্থদের পিছনে লাগতেন। গোল করে সামারসল্ট দেওয়া ময়দানের খুবই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু পরের দিকে তিনি অনেক ধীরস্থির, শান্ত হয়ে যান। পার্ক সার্কাসের মহমেডান মেসে দীর্ঘদিন থেকেছেন। শহরে থাকাকালীনই বিয়ে করেন। কলকাতায় থাকতে থাকতে এক সময় ভাল বাংলা শিখে ফেলেছিলেন।
খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরেও কলকাতার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল তাঁর। কথা বলতেন প্রাক্তন সতীর্থদের সঙ্গে। প্রাক্তন ফুটবলার শিশির ঘোষের সঙ্গে নিয়মিত কথা হত তাঁর। প্রয়াত সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে যে ম্যাচ হয়েছিল সেখানেও খেলতে এসেছিলেন তিনি। চিমা ময়দানে যতটা জনপ্রিয় ছিল ততটা ছিলেন না তিনি। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, চিমার থেকে অনেক বেশি কার্যকরী ফুটবলার ছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy